রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং সুস্বাস্থ্য এবং সুন্দর শরীর গঠনের জন্য বর্তমানে এ ফলটির প্যাকেটজাত জুস যুব সমাজের একটা বড় অংশ পান করে থাকেন।
আধুনিক গবেষণায় দেখা যায়, ‘ননী ফলের’ রস ক্যানসার প্রতিরোধেও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ধর্মনগর কলেজের বায়োলজি বিভাগের অতিথি অধ্যাপক এবং পিএইচডির রিচার্জ স্কলার উমা দাস বাংলানিউজকে জানান, ‘ননী ফলের’ বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে ‘গ্রেভিওলা’। এই গাছটি মূলত ক্রান্তীয় অঞ্চলে অর্থাৎ ভারত উপমহাদেশে জন্মায়। এই অঞ্চলের আবহাওয়া গাছটির বেড়ে ওঠার জন্য খুবই উপযোগী। এমনকি ত্রিপুরাসহ উত্তর পূর্ব ভারতের বিভিন্ন এলাকার জঙ্গলে প্রাকৃতিকভাবে গুল্মজাতীয় এই গাছটি জন্মায় বলেও জানান তিনি।
উমা দাস জানান, বহু জায়গায় এটির উপকারিতা চিন্তা করে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হচ্ছে। ত্রিপুরা রাজ্যের মাটি ননী চাষের জন্য উপযুক্ত হলেও এখন পর্যন্ত কেউ বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু করেননি। তবে বিভিন্ন সময় বনমহোৎসব রাজধানী আগরতলা এবং রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার পাশে ও পার্কে ননীর গাছ রোপন করা হয়েছিল। খুব একটা যত্ন না করলেও এই গাছগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ননী ফল ধরতে দেখা যায়। তবে বিশ্বজুড়ে যেভাবে ‘ননী ফলের’ উপকারিতার কথা নতুন করে ছড়িয়ে পড়ছে আগামীদিনে ত্রিপুরা রাজ্য এই ফলের গাছ চাষ হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন উমা দাস।
এই গাছের কাণ্ডে প্রথমে ঘন সবুজ রঙের ডিমের মতো একটি ফল ধরে। এটি বড় হলে দানাদার মতন হয় এবং এই দানাগুলোর মধ্য থেকে সাদা রঙের ছোট ছোট ফুল ফুটে। ফলের মধ্যে এই ফুলগুলোর গোড়ায় বীজ ধরে। ননী ফলের প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ‘বি১’, ভিটামিন ‘বি২’, ভিটামিন ‘বি৩’, ভিটামিন ‘বি১২’, ভিটামিন ‘সি’, ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন এবং ফসফরাসসহ আরও বেশ কিছু উপাদান রয়েছে।
অনেক লোক বিশেষ করে জনজাতি অংশের মানুষ এই ফলটিকে রান্না করে খায়। আধুনিক গবেষণায় নতুন করে ননীকে অনেক উপকারী একটি ফল বলে উল্লেখ করা হলেও বহু প্রাচীন কাল থেকে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে এই ফলের ব্যবহার রয়েছে। হাড়ের সমস্যা সমাধানে, ইউরিক অ্যাসিড, সর্দি-কাশির সমস্যা এবং রক্তচাপ ও ক্লান্তি দূর করার জন্য ননী ফলের ব্যবহার হয়ে আসছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৪ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২০
এসসিএন/এএটি