রাজধানী আগরতলার বটতলা এলাকার বাসিন্দা দিলীপ পণ্ডিত নামের এক ব্যক্তি করোনা জীবাণু ধ্বংসকারী মাস্ক তৈরি করেছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি পেশায় মেডিকেলের কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি সারাইয়ের কাজ করেন।
তিনি জানান, সম্প্রতি বিশ্ব জুড়ে করোনার আতঙ্কে আতঙ্কিত মানুষ। কি করে করোনার গ্রাস থেকে মানুষদের রক্ষা করা যায় এ বিষয়ে তার মনে একটি ভাবনা কাজ করছিল। এ ভাবনা থেকে তিনি করোনা ভাইরাস সম্পর্কে পড়াশোনা করেন ইন্টারনেটে। সেখানে তিনি লক্ষ্য করেন, ৫০ থেকে ৬০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় করোনার জীবাণু ধ্বংস হয়ে যায়। তাই যদি এমন কিছু ব্যবস্থা করা যায় যাতে মাস্কের মধ্যে এই তাপমাত্রা তৈরি করে মানুষের শরীরে প্রবেশের আগে করোনা ভাইরাসকে ধ্বংস করে ফেলা যায়, তবে সংক্রমণ রোধ করা যাবে। এই ভাবনা থেকেই তিনি তার ইলেকট্রনিক মাস্ক তৈরি করেছেন।
কি কি উপাদান দিয়ে এই মাস্ক তৈরি করেছেন? এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে দিলীপ পণ্ডিত বাংলানিউজকে বলেন, এরমধ্যে তাপ উৎপন্ন করার জন্য তামার কয়েল, ইলেকট্রনিক সার্কিট ও ব্যাটারি রয়েছে। ইলেকট্রনিক সার্কিট কাজ করার জন্য তিনি মোবাইল ফোনের ব্যাটারি ব্যবহার করেছেন। প্রাথমিক অবস্থায় এ পর্যন্ত তৈরি করতে একটি মাস্ক’র জন্য খরচ হয়েছে প্রায় ৫শ’ রুপি।
মুখের সামনে ইলেকট্রনিক সার্কিট এবং এতো বেশি তাপমাত্রা থাকলে শারীরিক কোনো সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, চিকিৎসার কাজে যে সকল ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী ব্যবহার করা হয় সেসকল সামগ্রী থেকে নেওয়া সার্কিট দিয়ে মাস্ক তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া মুখের ভিতরে যাতে গরম হাওয়া প্রবেশ না করে তাই মাস্কের ভেতরে একাধিক চেম্বার রয়েছে।
তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, প্রথম চেম্বারটি হচ্ছে গরম চেম্বার। সেখানে সাধারণ হাওয়া প্রবেশ করার পর করোনা ভাইরাসসহ অন্যান্য ক্ষতিকারক জীবাণু নষ্ট হয়ে যাবে। এর পরবর্তী চেম্বার কুলিং চেম্বার এখানে হাওয়া প্রবেশ করার সাথে সাথেই ঠাণ্ডা হয়ে যাবে। এরপর ফিল্টার হয়ে মানুষের শরীরে প্রবেশ করবে। তাই এই মাস্ক থেকে মানুষের শরীরে ক্ষতির কোন আশঙ্কা নেই।
তিনি আরো জানান, একাধিক চেম্বার থাকায় ইলেকট্রনিক মাস্কটি সাধারণ মাস্কের তুলনায় অনেকটাই বড়। তবে এই মাস্কটির প্রথম পর্যায় তৈরি হয়েছে মাত্র। এটাকে ফেব্রিকেশন করে আরো অত্যাধুনিক ও সুন্দর করে তোলা হবে।
এখন দেখার বিষয় ভারত সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং শাখা এই মাস্কটি পরীক্ষা করে মানুষের ব্যবহারের উপযোগী হিসেবে ছাড়পত্র দেয় কিনা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২০
এসসিএন/এমকেআর