ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

প্রথমবারের মতো ত্রিপুরায় বন্য হাতি জরিপ

সুদীপ চন্দ্র নাথ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৩, ২০২০
প্রথমবারের মতো ত্রিপুরায় বন্য হাতি জরিপ ত্রিপুরা সরকারের বন ও জনজাতি কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া

আগরতলা (ত্রিপুরা): ত্রিপুরা রাজ্যের বন্য হাতির সংখ্যা জরিপ ও তাদের আবাস তৈরির লক্ষ্যে বন দফতর বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছে। এজন্য রাজ্যের বাইরে থেকে আনা হবে বিশেষজ্ঞ দল।

ত্রিপুরা সরকারের বন ও জনজাতি কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান।  

তিনি জানান, প্রায় ৬৫ শতাংশের বেশি বনভূমিতে ও পাহাড়ি এলাকা ঘেরা উত্তরপূর্ব ভারতের ত্রিপুরার জঙ্গলে অন্যান্য বন্য প্রাণীদের সঙ্গে রয়েছে বন্য হাতিও। রাজ্যের জনসংখ্যা বাড়ার ফলে অনেকেই এখন পাহাড়ি এলাকায় ঘর-বাড়ি তৈরি করে বসবাস করছেন। অনেকেই আবার পাহাড়ি এলাকায় চাষাবাদ করছেন। এর ফলে বন্য হাতিদের প্রাকৃতিক বিচরণ ভূমি নষ্ট হয়েছে। তাই খাদ্যের খোঁজে প্রায়ই বন্য হাতি জনপদে চলে আসে এবং আক্রমণ চালিয়ে বসতঘর ও বাড়িসহ ফসলের ক্ষেত নষ্ট করছে। ফলে হাতি ও মানুষের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে রাজ্যের খোয়াই জেলার অন্তর্গত কল্যাণপুর ঘিলাতলী, চেবরী, মহারানীসহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকার জনপদে। মূলত রাজ্যের খোয়াই জেলার আঠারোমুড়া পাহাড় এবং তার আশেপাশের বনভূমিতে বন্য হাতিদের প্রাকৃতিক বিচরণ ক্ষেত্র রয়েছে। কিন্তু এসব এলাকায় এখন জনবসতি গড়ে ওঠায় হাতিদের বিচরণসহ খাবারের সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাই বন্য হাতির দল লোকালয়ে চলে আসে। বেশ কয়েক বছর ধরে এ সমস্যা চলছে।

মন্ত্রী মেবার কুমার জানান, বন্য হাতি ও মানুষের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব চলছে তা দূর করতে উদ্যোগ নিয়েছে ত্রিপুরা সরকারের বন দফতর। কি করে হাতিদের প্রাকৃতিক আবাসকে আবার নতুন করে গড়ে তোলা যায় ও রাজ্যে বর্তমানে কী পরিমাণে বন্য হাতি রয়েছে তা গণনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ পরিপ্রেক্ষিতে বন দফতর পশ্চিমবঙ্গ এবং রাজস্থান থেকে হাতি বিশেষজ্ঞ আনার পরিকল্পনা নিয়েছে। ইতোমধ্যে এ দুই রাজ্যের অভিজ্ঞ বেশ কয়েকজন হাতি বিশেষজ্ঞ’র সঙ্গে সংশ্লিষ্টারা কথা বলেছে।

তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে বন্য হাতির গণনাসহ কি করে আবার হাতিদের প্রাকৃতিক আবাস ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে কাজ শুরু হয়ে যেত কিন্তু করোনার কারণে এ প্রক্রিয়া কিছুটা পিছিয়ে গেছে। তবে আগস্ট মাসের মধ্যে বিশেষজ্ঞের একটি দল রাজ্যে এসে হাতি গণনা এবং আবাস সংক্রান্ত জরিপ শুরু করবে। এবার প্রথমে ত্রিপুরার হাতি জরিপের কাজ করা হবে।

ত্রিপুরার আঠারোমুড়া পাহাড়ের এলিফ্যান্ট করিডর তথা বন্য হাতিদের অভয়ারণ্যের মধ্য দিয়ে চলে বয়ে গেছে রাজ্যের আট নম্বর জাতীয় সড়কটি। যা আসাম হয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সড়ক পথে ত্রিপুরাকে সংযুক্ত করেছে। এলিফ্যান্ট করিডোরের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া জাতীয় সড়কে চলাচলকারী যাত্রীদের হাতি যাতে বিরক্ত ও ক্ষতি না করতে পারে এজন্য বন দফতর থেকে ইতোমধ্যে করিডোরের বিভিন্ন জায়গায় গাড়ির গতিসীমা নিয়ন্ত্রণসহ সতর্কতা সম্বলিত সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০২০
এসসিএন/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।