আগরতলা (ত্রিপুরা): সাধারণ একটি গ্রাম কীভাবে শিল্পীদের হাতের ছোঁয়ায় ছবিময় এবং পৌরাণিক গল্পবলার গ্রাম হয়ে উঠে তার এক দৃষ্টান্ত হচ্ছে বাগবাড়ী।
আগরতলা থেকে প্রায় নয় কিলোমিটার দূরে দুর্গাবাড়ী টি এস্টেটের চা বাগানে ঘেরা একটি গ্রাম বাগবাড়ী, এখানে প্রায় সব বাড়ির ঘরই মাটির তৈরি।
শিল্পী তপতী ভৌমিক মজুমদার বাংলানিউজকে জানান, বাগবাড়ী গ্রামকে ছবিবাগ গ্রামে পরিণত করার জন্য গত ৩ জানুয়ারি থেকে ছবি আঁকার কাজ শুরু হয়েছে। আগামী ১৩ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিটি ঘরের দেয়ালে ছবি ফুটিয়ে তোলা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন তিনি। এজন্য প্রায় ১৫ জন শিল্পী প্রতিদিন কাজ করছেন। এরপরও যদি কোনো দেয়াল ফাঁকা থাকে পরবর্তীতে আবার আঁকা হবে। ১৫ জানুয়ারি গ্রামটিতে একটি মেলা করার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান তিনি। এ কাজের মূল উদ্দেশ্যে হচ্ছে কচি-কাঁচাদের মধ্যে নান্দনিক মানসিকতা ছড়িয়ে দেওয়া। এ কাজে গ্রামের বাসিন্দারা তাদের আন্তরিক ভাবে সহযোগিতা করছেন।
এখানে ছবি আঁকার কাজে যুক্ত আরেক এক শিল্পী জয়শ্রী রায় বাংলানিউজকে জানান, এখানে কাজ করতে খুবই ভালো লাগছে। গ্রামের সবার খুবি আন্তরিকতার সঙ্গে তাদের সহযোগিতা করছেন। এতে মনে হচ্ছে নিজের বাড়িতে বসে কাজ করছেন তিনি।
গ্রামের শিশুরা জানায়, আগে কোনো দিন রং-তুলি নিয়ে ছবি আঁকার সুযোগ হয়নি, তবে এখন এ কাজ করতে খুব ভালো লাগছে।
শিল্পকর্ম দেখতে আগরতলা থেকে বাগবাড়ী আসা ওমেন্স কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. শ্রীমন্ত রায় বাংলানিউজকে জানান, এ ধরনের গ্রাম যত বেশি হবে ততই গ্রামীণ পর্যটন বিকাশের দারুন সম্ভাবনা বাড়বে। এগুলো একদিকে যেমন আমাদের চিরাচরিত সংস্কৃতির মূল ভিত্তি টিকিয়ে রাখবে। এর পাশাপাশি আমাদের চিরাচরিত যেসব খাবার-দাবার রয়েছে যেমন পিঠেপুলি এগুলোকে গ্রামের লোকজন তৈরি করে বিক্রি করেন তাহলে এখানে বেড়াতে আসা মানুষরা এগুলোর স্বাদ নিতে পারবেন। এর ফলে চিরাচরিত সংস্কৃতির পাশাপাশি চিরাচরিত খাবারগুলো টিকে থাকবে এবং আর্থিকভাবেও গ্রামের মানুষ লাভবান হবেন।
গতবছর সংস্কার ভারতী লঙ্কামুরা নামে আরও একটি গ্রামের সব দেয়াল বিভিন্ন ধরনের আলপনা দিয়ে সাজিয়ে তুলেছিল। এখন ওই গ্রামটি আলপনা গ্রাম নামে সবার কাছে পরিচিত। দেশ-বিদেশের মানুষ এ গ্রামটিতে ঘুরতে আসেন। আগামী দিনে পর্যটকরা বাগবাড়ী গ্রামেও ছুটে যাবেন বলে আশা করছে সংস্কার ভারতীর শিল্পীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০২২
এসসিএন/আরআইএস