আগরতলা (ত্রিপুরা): কৃষকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে ত্রিপুরা রাজ্যের কৃষি গবেষকরা তরল জৈব সার উৎপাদন শুরু করেছেন।
ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার এডি নগর এলাকার স্টেট বায়োফার্টিলাইজার প্রোডাকশন সেন্টারে এ সার তৈরি করা হচ্ছে।
স্টেট বায়োফার্টিলাইজার প্রোডাকশন সেন্টারের ইউনিট ইনচার্জ হিসেবে কাজ করছেন অ্যাগ্রিকালচার অফিসার গোপা পাল এবং তার সহকারী অ্যাগ্রিকালচার অফিসার দেবীকা ভৌমিক।
গোপা পাল বাংলানিউজকে জানান, বায়োফার্টিলাইজার প্রোডাকশন সেন্টারে মোট তিন ধরনের তরল জৈব সার উৎপাদন করা হয়। এগুলো হলো- অ্যাজেটোব্যাক্টার, যা মূলত নাইট্রোজেন সংবন্ধনকারী। ফসফ্যাটসুলবুলাইজিং ব্যাকটেরিয়া, এরা মূলত মাটিতে ফিক্সড অবস্থায় থাকা ফসফেটকে এ ব্যাকটেরিয়া গাছের কাছে পৌঁছে দিতে সহায়তা করে। তৃতীয়টি হচ্ছে পটাশ মোবিলাইজিং ব্যাকটেরিয়া, এটি মাটিতে থাকা পটাশ গাছের কাছে পৌঁছে দিতে কাজ করে। এছাড়া এগুলো কৃষকের বন্ধু হিসেবে কাজ করে। রাজ্যে যে তিন ধরনের তরল জৈব সার তৈরি হচ্ছে এগুলো অর্গানিক ইন অরিজিন অর্থাৎ এগুলোতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত রাসায়নিকের কোনো ছোয়া নেই। বর্তমান সময়ে বিশ্বজুড়ে জৈব পদ্ধতিতে উৎপাদিত সামগ্রীর চাহিদা সবচেয়ে বেশি।
তিনি বলেন, তরল জৈব সারের একাধিক সুবিধা রয়েছে। সাধারণ গুঁড়ো জৈব সারের তুলনায় তরল সারের মেয়াদ বেশি দিন থাকে। যেখানে গুঁড়ো জৈব সার ছয়মাস ব্যবহারের উপযোগী থাকে সেখানে তরল জৈব সার এর দ্বিগুণ অর্থাৎ এক বছর পর্যন্ত ব্যবহারের উপযোগী। এ সার প্রতি হেক্টরে মাত্র তিন লিটার প্রয়োগ করতে হয়। পুরোপুরি জৈব পদ্ধতিতে তৈরি হওয়ায় এ সারের কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। মাটিতে প্রয়োগের পাশাপাশি সরাসরি গাছের পাতা এবং কান্ডেও এ সার প্রয়োগ করা যায়, ফলে তুলনামূলক অনেক কম সারের প্রয়োজন হয়। এসব সুবিধার জন্য এখন কৃষি কাজের জন্য জৈব সারের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।
তিনি আরও বলেন, প্রথম বছরে প্রায় তিন হাজার লিটার তরল সার তৈরি করা হয়েছে। এগুলো বর্তমানে দপ্তরের তরফে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সরবরাহ করা হচ্ছে। পরবর্তী ধাপে এর উৎপাদন বাড়িয়ে বছরে সাত হাজার লিটারে নিয়ে যাওয়া হবে। চাহিদা বাড়লে এর উৎপাদন আরও বাড়বে। এজন্য দপ্তর বিশাল আকারের প্ল্যান্ট প্রস্তুত করে রেখেছে। সেইসঙ্গে এ সারগুলোকে প্যাকেজের জন্য অটোমেটিক মেশিন আনা হয়েছে। সব মিলিয়ে আগামী দিনে রাজ্যের কৃষিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে তরল জৈব সার।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২২
এসসিএন/আরআইএস