আগরতলা, (ত্রিপুরা): ত্রিপুরা রাজ্যে এখন একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম হয়েছে এমন অভিযোগে বিধায়ক এবং ক্ষমতাসীন বিজেপি দলের সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন সুদীপ রায় বর্মণ এবং আশিষ সাহা।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী আগরতলার বিধানসভা ভবনে গিয়ে অধ্যক্ষ রতন চক্রবর্তীর কাছে বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগের আবেদন জমা দেন তারা।
পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে বেরিয়ে আসার সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের আশিষ সাহা জানান, তারা অধ্যক্ষের কাছে তাদের পদত্যাগপত্র তুলে দিয়েছেন। অধ্যক্ষ তাদের পদত্যাগপত্রটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর সংবিধানের আইন অনুসারে তিনি তার দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া আজ তারা বিজেপি দলের সদস্য পদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছেন বলেও জানান।
বিধানসভা থেকে বেরিয়ে তারা দিল্লি যাচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন। দিল্লি থেকে ফিরে এসে বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগের কারণ এবং বিজেপি দল থেকে নিজেদের সরিয়ে নেওয়ার বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে জানাবেন বলে উল্লেখ করেছেন।
অপরদিকে নিজের অভিমত ব্যক্ত করতে গিয়ে সুদীপ রায় বর্মণ বলেন, আমরা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি, কারণ মানুষের জন্য রাজনীতি করছি। মানুষের কষ্ট দুর্দশা আমাদের আর সহ্য হচ্ছিল না। পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে আজ নিজেদের অনেক হালকা মনে হচ্ছে। যারা অস্বীকৃত বিরোধী রাজনৈতিক দল তারা মানুষের স্বার্থে ঠিকমতো ভূমিকা পালন করতে পারছে না। এ রাজ্যে গণতন্ত্র আজ বিপন্ন, চারিদিকে মানুষের কষ্ট হাহাকার যা আমাদের সহ্য হচ্ছিল না। কারণ এ রাজ্যে এক ব্যক্তির শাসন ব্যবস্থা কায়েম রয়েছে। নামে মন্ত্রিসভা হলেও একজন মন্ত্রী তাদের অসহায়তার কথা তুলে ধরেন। কারণ হাতে গোনা কয়েকজন সরকারি অফিসার এবং তাদের মুখিয়া যখন যা মনে হচ্ছে তাই করে বেড়াচ্ছে। বেকার কৃষক-শ্রমিক সাধারণ মানুষের আর্তনাদ তাদের হৃদয় স্পর্শ করছে না।
দলে থেকেও বিধানসভার ভেতরে এবং বাইরে কথা বলতে হয়েছে যার দলের নীতি অনুসারে নয়, বিজেপি থেকে নির্বাচিত হয়েও যদি কিছু না করা যায় তাই মানুষের স্বার্থে দল থেকে পদত্যাগ করে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করবে। মানুষের প্রতিবাদের ভাষা কেড়ে নেওয়ার যে ষড়যন্ত্র রাজ্যে তৈরি হয়েছে তা এ রাজ্য থেকে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
সুদীপ রায় বর্মণ জানান, আগামী শনিবার তারা রাজ্যে ফিরে আসছেন এবং এরপরে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবেন। তাদের সঙ্গে প্রচুর সংখ্যক নেতাকর্মী রয়েছেন, যারা আর কিছু দিনের মধ্যে প্রকাশ্যে আসছেন।
তাদের এই পদত্যাগ ত্রিপুরা রাজ্যের রাজনীতিতে নতুন অধ্যায় শুরু করেছে বলে অভিমত রাজনৈতিক সচেতন মহলের। তারা কোন দলে যোগদান করছেন এখনও স্পষ্ট করে কিছু বলেননি।
তবে, সূত্রের মারফত জানা যাচ্ছে ,তারা জাতীয় কংগ্রেস দলে যোগ দিতে পারেন। তাদের দিল্লি যাওয়ার কথা কংগ্রেসে ফেরার বিষয়টি স্পষ্ট করছে বলেও রাজনৈতিক মহলের অভিমত।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০২২
এসসিএন/এএটি