আগরতলা(ত্রিপুরা): ত্রিপুরার সরকার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার বিষয়ে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন রাজ্য সরকারের তথ্য-সংস্কৃতি দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী।
কলকাতার সত্যজিৎ রায় ফিল্ম ইনস্টিটিউটের একটি শাখা আগরতলায় স্থাপন করার জন্য ত্রিপুরা সরকার বেশ কিছু দিন ধরে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
বুধবার (৬ এপ্রিল) কলকাতা থেকে সত্যজিৎ রায় ফিল্ম ইনস্টিটিউটের তিন জনের প্রতিনিধি দল আগরতলায় আসেন। দলে ছিলেন সংস্থার ডিরেক্টর, রেজিষ্টার এবং নোডাল অফিসার। তাদেরকে নিয়ে রাজধানীর মঠ চৌমুহনী এলাকার নজরুল কলাক্ষেত্র ঘুরিয়ে দেখান ত্রিপুরা সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। তারা নজরুল কলাক্ষেত্রের প্রশাসনিক ব্লক, অডিটরিয়াম, প্রেক্ষাগৃহ, ওপেন গ্যালারি ইত্যাদি ঘুরে দেখেন।
পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী জানান, প্রায় এক মাস আগে তিনি নিজে কলকাতার সত্যজিৎ রায় ফিল্ম ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করেন এবং সংস্থার আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক করেন। তখন সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে তাদের একটি প্রতিনিধিদল আগরতলায় আসবেন এবং পরিকাঠামো ঘুরে দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন, কোথায় এটি চালু করা হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে এদিন ফিল্ম ইন্সটিটিউটের প্রতিনিধি দল আগরতলা এসেছেন এবং তারা গোটা নজরুল কলাক্ষেত্র ঘুরে দেখেছেন। পরবর্তী সময় মহাকরণে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এ বৈঠকে তারা সবার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবও উপস্থিত থাকবেন।
এদিন তথ্য সংস্কৃতি মন্ত্রী আশা ব্যক্ত করেন, খুব দ্রুত ইনস্টিটিউটের কাজকর্ম ত্রিপুরা রাজ্য চালু হবে।
তিনি আরও বলেন, রাজ্য সরকার সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যাদের অভিনয়ে এবং চলচ্চিত্র সংক্রান্ত অন্যান্য ক্ষেত্রে মেধা রয়েছে তাদের মেধাকে কাজে লাগিয়ে অন্যান্য রাজ্যের মত এরাজ্যেও একটি চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তোলার। যারা নিজেদেরকে চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে প্রতিষ্ঠা করতে চান তাদের জন্য সরকার একটি সুযোগ এনে দিচ্ছে। ত্রিপুরার প্রতিবেশী আসাম মনিপুর রাজ্যে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি রয়েছে। একই ভাবে প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের বিষয় চলচ্চিত্র শিল্প রয়েছে ত্রিপুরাকেও এই শিল্পে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
আগামী দিনে এটা কি ভাবে পরিচালিত হবে ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তির প্রক্রিয়া কি ধরনের হবে ইত্যাদি বিষয় আলোচনার মাধ্যমে স্থির করা হবে। উত্তর-পূর্ব ভারতের অরুণাচল প্রদেশ রাজ্যে সত্যজিৎ রায় ফিল্ম ইনস্টিটিউটের বড় আকারের একটি ক্যাম্পাস তৈরি করার বিষয়ে আলোচনা চলছে। এ রাজ্যের এই ইনস্টিটিউটে ভর্তির বিষয়টি আরও কিছুদিন পর স্থির করা হবে আলোচনার মাধ্যমে।
মন্ত্রী জানান, নজরুল কলাক্ষেত্র ফিল্ম ইনস্টিটিউট পরিচালনা করার মত পরিকাঠামোর রয়েছে, তাই প্রাথমিক অবস্থায় রাজ্য সরকারের অর্থ দপ্তর প্রাথমিক পর্যায়ে ৬ কোটি রুপি অনুমোদন দিয়েছে। সরকারের পরিকল্পনা প্রাথমিক ভাবে এটি চালু করার পর কিছুটা সময় অতিক্রান্ত হলে পরবর্তীতে অন্যান্য রাজ্যের চলচ্চিত্রশিল্প এমনকি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের সংজ্ঞা যৌথভাবে কাজ করার বিষয়ে পরিকল্পনা নেওয়া হবে।
তিনি আরও জানান পশ্চিম জেলার রানির বাজার এলাকায় জমি চিহ্নিত করা হয়েছে ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামার বড় আকারের একটি ক্যাম্পাস করার জন্য। রাজ্যে কালচারের হাব করার জন্য ১০০ কোটি রুপির একটি পরিকল্পনা ভারত সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ সম: ১১২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০২২
এসসিএন/এনএইচআর