আগরতলা, (ত্রিপুরা): চা বললে সাধারণত দুধ চিনির সংমিশ্রণে তৈরি চা-ই আমাদের চোখের সামনে ভেসে উঠে। এই চা-কে সিটিটি, অর্থৎ ক্রাশ, টিয়ার, কার্ল।
চা-গবেষকদের কঠোর পরিশ্রম ও পরীক্ষা-নিরীক্ষায় প্রমাণ করেছে যে, গ্রিনটি মানেই দার্জিলিঙের ভৌগলিক সীমানার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ত্রিপুরায় ভালো মানের গ্রিনটি তৈরির উপযুক্ত কাচা পাতা উৎপাদিত হচ্ছে। ওই পাতা থেকে তৈরি করা গ্রিনটি। যা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত এমন কী বিদেশিদের কাছেও জনপ্রিয় পানীয় হয়ে উঠেছে।
ত্রিপুরা রাজ্যের গ্রিনটি উৎপাদনকারী চা-পাতা বাগানগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে আগরতলার পার্শ্ববর্তী ফটিকছড়া এলাকার চা-বাগান। ওই বাগানের ম্যানেজার জয়দীপ গাঙ্গুলীর সঙ্গে কথা হয় বাংলানিউজের।
তিনি জানান, তাদের ওই বাগানটি ১শ শতাংশ অর্গানিক। বাগানের চা-পাতাসহ অন্যান্য সামগ্রীর পরীক্ষা শেষে এই সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। সার্টিফিকেট প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ প্রতিবছর দুই বার করে তাদের নির্ধারিত কিছু পরীক্ষা করে এবং তাদের পরীক্ষার পর নিশ্চিত হলে তবেই সার্টিফিকেট দেয়। পাশাপাশি আকস্মিকভাবে বাগান পরিদর্শনের মধ্যে যেকোনো অংশ থেকে চা-পাতা সংগ্রহ করে গুণগত মান পরীক্ষা করে থাকেন। এটি নিয়মিত একটি প্রক্রিয়া এবং বছরের নানা সময় তা করা হয়।
জয়দীপ গাঙ্গুলী জানান, ভারতের যে সংস্থাটি অর্গানিকের সার্টিফিকেট প্রদান করে সেই সংস্থাটি আন্তর্জাতিক অর্গানিক সার্টিকেশন সংস্থার দ্বারা স্বীকৃত। তাদের বাগান থেকে প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার কেজি গ্রিনটি উৎপাদিত হয় এবং প্রক্রিয়াজাত সব পাতা রপ্তানি হয়। ভারতের বিভিন্ন রাজ্য এমনকি বিদেশেও রপ্তানি হয়। একটি পাতাও ত্রিপুরায় বিক্রি করা হয় না। পাতাগুলো মূলত উত্তর ভারত, পশ্চিম ভারত এবং বিদেশে রপ্তানি হয়।
চা-পাতার উৎপাদন বাড়ানোর বিষয়ে জয়দীপ গাঙ্গুলী আরও জানান, পরিমাণ বাড়ানোর দিকে গুরুত্ব না দিয়ে তারা চা-পাতার গুণগত মান সঠিক রাখার দিকে তাদের প্রধান নজর। কারণ চা-পাতার মান যত ভালো, তার চাহিদাও বেশি। সেসঙ্গে মানুষ বেশি দাম দিয়ে চা-পাতা কিনবেন। তাছাড়া একশতাংশ অর্গানিক পদ্ধতির বাগান গড়ে তোলার জন্য তুলনামূলক বেশি সময় লাগে। এই গ্রিনটি প্রচুর এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, তাই ব্লাড সুগার, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, পাশাপাশি এতে আর অনেক ওষুধিগুণ রয়েছে। শুধুমাত্র খাওয়ার জন্যই নয়, পাশাপাশি আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরিতে, প্রসাধন শিল্পে, স্পা-তে, চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি ইত্যাদিতে এর ব্যবহার হচ্ছে। ফলে দিন দিন গ্রিনটির চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২২
এসসিএন/এএটি