আগরতলা, (ত্রিপুরা): প্রতিনিয়ত ত্রিপুরা রাজ্যে কংগ্রেস দলের কর্মী ও সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন দলের সর্বভারতীয় সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী।
নির্বাচনের আগে প্রার্থী সুদীপ রায় বর্মণ এবং ভোট গণনার দিন প্রকাশ্যে দিনের বেলা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিত সিনহার ওপর আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে কংগ্রেস দলের তিন সদস্যের সংসদীয় ত্রিপুরায় পাঠালেন সোনিয়া গান্ধী।
সোমবার (২৭ জুন) এই টিম জাতীয় রাজধানী দিল্লি থেকে আগরতলায় আসেন।
এই টিমে রয়েছেন লোকসভার পরিষদীয় দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী, লোকসভার পরিষদীয় দলের উপনেতা গৌরব গগৈ, ড. নাসিরউদ্দিন হোসেন।
তারা আগরতলা এসে ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি আহত বীরজিত সিনহার সঙ্গে দেখা করেন এবং তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন। পরে প্রদেশ কংগ্রেস ভবনে এক সংবাদ সম্মেলন করে তাদের এই সফরের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন উপস্থিত সংবাদ মাধ্যমের সামনে।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পরিকল্পনা কংগ্রেসমুক্ত দেশ গঠন করা। কিন্তু তার এই পরিকল্পনা সফল হবে না।
অধীর চৌধুরী বলেন, ত্রিপুরা রাজ্যে লাগাতর হিংসা চলছে। বিশেষ করে এই হিংসার শিকার হচ্ছেন কংগ্রেস দলের নেতাকর্মীরা। এমনকি সারা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় কংগ্রেস ভবনের হামলাও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর নির্দেশে জরুরিভিত্তিতে পূর্ব-পরিকল্পনা ছাড়া তারা বাকি সব কাজ ফেলে রেখে ত্রিপুরা রাজ্যে এসেছেন। রাজ্যের সার্বিক পরিস্থিতি সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করার জন্য।
তারা এখানে এসে দলের আহত কর্মী-সমর্থকদের হাসপাতালে গিয়ে দেখে এসেছেন। পাশাপাশি আক্রান্ত নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। রাজধানী আগরতলার কংগ্রেস ভবনের সামনেই রয়েছে পশ্চিম আগরতলা থানা এবং মহিলা থানা। এরপর একাধিকবার কংগ্রেস ভবনে হামলা, নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। রাজধানী আগরতলায় এমন পরিবেশ হয় তাহলে গোটা রাজ্যের কী পরিস্থিতি তা অনুমান করা যায়।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী স্লোগান দেন, ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশের’ কিন্তু তার দলের কর্মীরা ত্রিপুরায় তাণ্ডব চালাচ্ছে। কারণ ত্রিপুরা রাজ্যের মানুষে কংগ্রেসের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। মোদীর স্বপ্ন ছিল কংগ্রেসমুক্ত ভারতবর্ষ, কিন্তু তা হচ্ছে না। ত্রিপুরা কংগ্রেসের অস্তিত্ব সংকটে ছিল এখন আবার মানুষ দুই হাত আশীর্বাদ করছেন এবং কাছে টেনে নিচ্ছে। তাই এই আক্রমণ।
বিমানবন্দর থেকে নেমে তারা সোজা অফিসে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন এবং দাবি জানিয়েছেন কংগ্রেস কর্মীদের ওপর আক্রমণ বন্ধ করার জন্য।
তিনি আরও বলেন, ২০২৩ সালের ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই করবে। ধীরে ধীরে মানুষ কংগ্রেসের দিকে ঝুঁকছেন এবং বিজেপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। আগামীতে বিজেপির প্রতি মানুষের আরও মোহভঙ্গ হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এই কারণে বিজেপি নেতৃত্ব ত্রিপুরা রাজ্যের কংগ্রেস কর্মীদের ওপর আক্রমণ নামিয়ে আনছে। ত্রিপুরা রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি রিপোর্ট তৈরি করে সোনিয়া গান্ধীকে দেবেন বলে জানিয়েছেন।
অপরদিকে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে গৌরব গগৈ বলেন, কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীসহ দলের সব নেতৃত্ব ত্রিপুরার নেতাকর্মীদের সঙ্গে রয়েছে। তাই তাদের চিন্তার কোনো কারণ নেই।
তিনি বলেন, ত্রিপুরা রাজ্যের বিজেপি উপ-নির্বাচনে ট্রেলার দেখেছে ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পুরো ছবি দেখতে পাবেন।
এই সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ০০১৩ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২২
এসসিএন/এএটি