আগরতলা (ত্রিপুরা): যখন আগরবাতি উৎপাদন শুরু করেন তখন দৈনিক ১২০ প্যাকেট তৈরি করতেন। এগুলো তৈরির চেয়ে বড় সমস্যা ছিল বিক্রি করা নিয়ে।
নিজের চেষ্টা আর আগরবাতি কারখানার ইতিহাস বলতে গিয়ে এভাবেই বাংলানিউজকে কথাগুলো জানালেন মিঠু দেবনাথ।
চলমান সময়ে ত্রিপুরা রাজ্যের অন্যতম বড় ও পরিচিত আগরবাতি কারখানা হচ্ছে বালাজি আগরবাতি। এর মালিক তিনি। বর্তমানে তার কারখানার তৈরি আগরবাতি বিদেশে রফতানির প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি।
মিঠু দেবনাথ তার এ লড়াইয়ের কথা বলতে গিয়ে বাংলানিউজকে আরও জানান, সম্পূর্ণ নিজের কৌতুহল থেকে ২০০৫ সালে আগরবাতি কারখানা চালু করেন। তখন রাজ্যে আগরবাতির কারখানা ছিল না। এ কারখানা চালু করার পরিকল্পনা নিয়ে তিনি নিজে গুজরাট রাজ্যে যান ও কিছুদিনের প্রশিক্ষণ নেন। সেখান থেকে ফিরে আসার সময় সঙ্গে আগরবাতি তৈরির কাঁচমাল নিয়ে আসেন। কারিগর ছিলেন নিজেই। তৈরি শুরু করেন আগরবাতি। কিন্তু ব্যবসায়ীরা এগুলো কিনতে চাইতেন না। তাতে ধৈর্য হারাননি তিনি। তার বিশ্বাস ছিল জিনিস ভালো হলে মানুষ একদিন না একদিন খোঁজে নেবে। তাই কাজ চালিয়ে গেছেন। অবশেষে সফল হয়েছেন তিনি।
আগে যেখানে একা নিজ হাতে দিনে মাত্র ১২০ প্যাকেট আগরবাতি তৈরি করতেন সেখানে এখন প্রায় ১০ হাজার প্যাকেট তৈরি হচ্ছে। অথ্যাৎ দৈনিক ৩০ কার্টুন আগরবাতি তৈরি হচ্ছে তার কারখানায়। ১৫ জন মানুষ তার কারখানায় কাজ করছেন এখন। শুরুতে মাত্র এক ধরনের সুগন্ধি যুক্ত এবং এক আকারের তৈরি হলেও এখন মোট ৬০ ধরণের আগরবাতি তৈরি করছেন মিঠু।
তার এ আগরবাতির সুগন্ধ আগরতলার গন্ডি ছাড়িয়ে সারা ত্রিপুরা এমনকি আসাম রাজ্যেও যাচ্ছে। এখানেই শেষ নয়, ভারতের সাবেক উপ-রাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু ক্ষমতায় থাকাকালীন ২০২১ সালে ত্রিপুরা সফরে এসেছিলেন। তখন উপ-রাষ্ট্রপতির হাতে উপহার হিসেবে ত্রিপুরায় উৎপাদিত ভালো মানের সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। সেই সামগ্রী ছিল তার কারখানার আগরবাতি।
মিঠু আরও জানান, তার পরবর্তী পরিকল্পনা হচ্ছে আগরবাতি বিভিন্ন দেশে রফতানি করা। তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশও। এ লক্ষ্যে ২ কোটি রুপি ব্যায়ে আগরতলার পাশে বোধজং নগরে বিশাল আকারের এবং স্বয়ংক্রিয় কারখানা স্থাপন করা হচ্ছে। তার এ সাফল্য দেখে ভারতের অন্যতম বড় আগরবাতি প্রস্তুতকারক সংস্থও তার সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তি করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০২২
এসসিএন/জেডএ