ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ আষাঢ় ১৪৩১, ১৮ জুন ২০২৪, ১০ জিলহজ ১৪৪৫

বাজেট

এনবিআর চেয়ারম্যানের বক্তব্য

অপ্রদর্শিত আয় দেশে রাখতে বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৩ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০২৪
অপ্রদর্শিত আয় দেশে রাখতে বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: কালো টাকা যারা তৈরি করে তারা সেটা অর্থনীতিতে ব্যবহার করে না। এ অর্থ দেশের বাইরে চলে যায়, এবং ভোগবিলাসী কাজে ব্যয় করা হয়।

এই অপ্রদর্শিত আয় দেশে রাখার জন্য বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে বলে মনে করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।

শুক্রবার (৭ জুন) বিকেলে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন এনবিআর চেয়ারম্যান। এ সময় সাংবাদিকরা তাকে ‘কালো টাকা সাদা করার সুযোগের বিষয়টিকে কতটুকু নৈতিক বলে মনে করেন’ প্রশ্ন করলে তিনি এ উত্তর দেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আমরা সুযোগটা দিয়ে থাকি এ কারণে যে নানা কারণে অপ্রদর্শিত কিছু অর্থ থাকতে পারে। অসচেতনতা বা নানা কারণে রিটার্নে দেখানো হয়নি বা রিটার্ন দেওয়ার সময় এ তথ্যগুলো কোনো কারণ বাদ পড়ে গিয়েছে। এছাড়া আরও কিছু কারণ রয়েছে; যেমন- জমি ক্রয় বিক্রয়ের ক্ষেত্রে কিছু টাকা আমাদের অপ্রদর্শিত থেকে যায়। এজন্য সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে দাবি এসেছিল সুযোগ দেওয়ার।

তিনি বলেন, অনেক সময় ব্যবসায়ীরাও কিছু অপ্রদর্শিত অর্থ দেখাতে চান৷ আবার ব্যক্তি পর্যায়েও দেখাতে চান, নতুন কর দাতারা দেখাতে চান। কিন্তু এই অপ্রদর্শিত অর্থের জবাব তারা দিতে পারছেন না। সেজন্য আমরা ১৫ শতাংশ ট্যাক্স দিয়ে সেটা বৈধ করার সুযোগ করে দিয়েছি।

এ সময় তিনি অপ্রদর্শিত আয় দেশে রাখতে বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে বলে সাংবাদিকদের একটি প্রশ্নের উত্তর দেন। তিনি বলেন, কালো টাকা যারা তৈরি করে সেটা অর্থনীতিতে ব্যবহার করার জন্য তৈরি করে না। কালো টাকা মূলত দেশের বাইরেই চলে। যারা এটি তৈরি করে বিভিন্ন ভোগবিলাসী কাজে ব্যয় করে থাকে। অর্থনীতিতেও কালো টাকা কখনো ব্যবহার করা হয় না। সেজন্য রিটার্নে এই সুযোগ দেওয়া হয়েছে; যাতে এই অপ্রদর্শিত অর্থ দেশে থেকে যায়।

গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট প্রস্তাব পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এবারকার বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। যা জিডিপির ১৪ দশমিক ২ শতাংশ। এটি চলতি বাজেটের তুলনায় ৪ দশমিক ৬০ শতাংশ বেশি।

এবার বাজেটে টাকার অঙ্ক বেড়েছে ৩৫ হাজার ২১৫। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা বাজেট ঘোষণা করেছিল সাবেক সরকার।

নতুন বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকার। আগামী অর্থবছরের বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে আটকে রাখার পরিকল্পনাও রাখা হয়েছে এবারের বাজেটে।

ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, পরিকল্পনা মন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুস সালাম, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মে. মাহবুব হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, অর্থ সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৯ ঘণ্টা, জুন ৭, ২০২৪
জিসিজি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।