ঢাকা: জাতিকে সমৃদ্ধির সোপানে তুলে দিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। প্রায় তিন লক্ষ কোটি টাকার একটি বাজেট উপহার দিয়ে তিনি বললেন, সম্মৃদ্ধির সোপান রচিত হলো, আসুন আমরা সবাই মিলে উন্নয়নের পথে হাঁটি।
প্রতিবছরই বাজেটে বরাদ্দ বাড়বে, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে বাজেট একলাফে বেড়েছে ৪৪ হাজার ৫৯৪ কোটি টাকা। মোটেই ১২ বছর আগে দেশের মোট বাজেট বরাদ্দই ছিলো ৪৪ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা।
এই বাজেটকে উচ্চাভিলাসী, অবাস্তব, কল্পনাবিলাসী এমন কত নাম দিতে শুরু করেছেন সমালোচকরা। সেতো সমালোচকদের বা বিশ্লেষকদের কথা। কিন্তু সাধারণের কাছে এ এক সাহসী বাজেট। আর অর্থমন্ত্রীর নিজের কাছে এই বাজেট চ্যালেঞ্জিং। আর তিনি জানালেন, চ্যালেঞ্জ নেওয়াই তার পছন্দ।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে অশীতিপর এই অর্থনীতিবিদ যখন জাতির জন্য নিজের নবম বাজেট দিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ডটি গড়লেন আর টানা সাত বছর বাজেট দিয়ে রেকর্ড গড়লেন তখন সেই রেকর্ড আর বড় বাজেট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ধরা দিয়েছে। কিন্তু তারও চেয়ে আকর্ষণীয় ও গুরুত্ববহ হচ্ছে এই বাজেটকে অর্থমন্ত্রী তকমা দিয়েছেন ‘সম্মৃদ্ধির সোপান’ হিসেবে। এটাই তার বাজেট বক্তৃতার প্রতিপাদ্য।
বাংলাদেশকে একসময় ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলেছিলেন মার্কিন কুটনীতিক হেনরি কিসিঞ্জার। সেই বাংলাদেশ এখন বদলে গেছে। বদলে যাচ্ছে। সমৃদ্ধির পথেই চলছে বাংলাদেশ। অর্থনীতির সূচকগুলো তাই বলছে।
আর তিন লক্ষ কোটি টাকার একটি সম্মৃদ্ধির সোপান রচনা সেই সূচকের অন্যতম।
অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতায় তাই অর্থ বরাদ্দ আর তা ব্যয়ের জটিল অংক-পরিসংখ্যানের কপচানি ছিলো না। তাতে ছিলো দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথ প্রদর্শন। আর ছিলো নতুন নতুন স্বপ্ন রচনা।
পদ্মাসেতু ২০১৮ সালের মধ্যেই সম্পন্ন হবে সে ঘোষণা দৃঢ়তার সঙ্গে উচ্চারণ করেই ক্ষান্ত হননি, পাটুরিয়া অংশে দ্বিতীয় পদ্মাসেতু তৈরি ঘোষণাটিও বাজেট বক্তৃতায় স্পষ্ট করলেন অর্থমন্ত্রী।
সমালোচকদের কথায় কান না দিয়ে ৮৩ বছর বয়সী তারুণ্যদীপ্ত অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতায় তুলে ধরেছেন সম্ভবনার বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি।
স্বাধীনতার পর ১৯৭২-৭৩ সালের প্রথম বাজেটের আকার ছিল মাত্র ৭৮৬ কোটি টাকা। যা এখন হাজার হাজার গুন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৯৫ হাজার ১শ’ কোটি টাকায়। অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি এগিয়ে যাওয়ার এ পরিবর্তন বাজেটেই লক্ষ্য করা যায়।
দীর্ঘ প্রায় চার ঘণ্টার বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী সম্ভাবনা, প্রতিশ্রুতির বন্যা, অফুরন্ত আশার কথা শুনিয়েছেন। হাজারো সমস্যার এ দেশে অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতায় অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ এক বাংলাদেশের চিত্রই দেখা যাচ্ছে।
সংসদীয় গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতায় দীর্ঘদিন পর সরকার ও বিরোধী দলের সরব উপস্থিতিতে রীতিমতো উৎসবমুখর পরিবেশে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের দ্বিতীয় বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এবারও চমকপ্রদ ও অত্যাধুনিক ডিজিটাইজড পদ্ধতিতে কখনও বসে আবার কখনও দাঁড়িয়ে দেশের ইতিহাসের সর্ববৃহৎ বাজেটটি পেশ করেন বয়সে প্রবীণ হলেও কর্মে নবীন ও তেজোদ্দীপ্ত এই অর্থমন্ত্রী। উচ্চ প্রবৃদ্ধির পথ রচনার স্বপ্ন দেখান জাতিকে।
বিকেল সাড়ে তিনটায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশন শুরুর প্রায় দেড় ঘণ্টা আগেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সংসদ ভবনে প্রবেশ করেন। এর আগেই সংসদ ভবনে প্রবেশ করেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। তিনি তাঁর কক্ষে বসেই বাজেট অধিবেশন প্রত্যক্ষ করেন। অধিবেশনের আগেই জাতীয় সংসদ ভবনের কেবিনেট কক্ষে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন করা হয়। এরপর রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে সংসদে উত্থাপন করা হয় ২ লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকার বাজেট। আগামী ৩০ জুন এ বাজেট পাস হওয়ার কথা রয়েছে।
বাজেট অধিবেশনে সরকারি ও বিরোধী দলের সদস্যের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি কুটনীতিক, দাতা সংস্থার প্রতিনিধি, সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বিকেল ৩টা ৩৩ মিনিট থেকে বাজেট বক্তৃতা শুরু করেন। বাজেট বক্তৃতা উত্থাপনের জন্য অধিবেশন কক্ষে ছিলো চারটি বড় স্ক্রিন। এর মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে বাজেট বক্তৃতার পুরো অংশ ধারাবাহিকভাবে উপস্থাপন করেন আবুল মাল আব্দুল মুহিত।
প্রস্তাবিত নতুন বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ শতাংশ। অনুদানসহ বাজেটে সামগ্রীক ঘাটতি ধরা হয়েছে ৮০ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা। আর অনুদান ব্যতীত সামগ্রীক ঘাটতির পরিমাণ ৮৬ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা।
বাজেটে রাজস্ব প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নিয়ন্ত্রিত করের পরিমাণ ১ লাখ ৭৬ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বহির্ভূত কর ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা। বাকি ২৬ হাজার ১৯৯ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে কর ব্যতীত আয় থেকে।
২ লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ের মধ্যে রাজস্ব ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। আর মূলধন ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ৭০৪ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেট আকারের দিক থেকে যেমন বড়, তেমনি বাস্তবায়নেও রয়েছে ব্যাপক চ্যালেঞ্জ। সে কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী নিজেই। তবে তিনি এও বলেছেন, চ্যালেঞ্জ নেওয়াই তার পছন্দ।
যদিও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বড় বাজেটের কারণে সাধারণ মানুষের ব্যয়ভার অনেক বেড়ে যাবে। বিশেষ করে গত দুই বছর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার কারণে এবার এ খাতে চাপ কিছুটা বেশি থাকবে। রাজস্ব আদায়ের সহজ পন্থাগুলোর প্রতি এনবিআরের নজর বেশি থাকবে। আর সে চাপটা পড়বে সাধারণ মানুষের ওপরেই।
চলতি অর্থবছরের মতো নতুন অর্থবছরেও জনপ্রশাসন খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ লাখ ২ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা। যা মোট বাজেটের ১৯ দশমিক ২ শতাংশ।
জনপ্রশাসন খাতের মধ্যে স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২১ হাজার ১ কোটি টাকা। প্রতিরক্ষা খাতে ১৮ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা, জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তায় ১৩ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা, শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে ৩৪ হাজার ৩৭৮ কোটি টাকা, স্বাস্থ্যে ১২ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা এবং সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণে ১৬ হাজার ৯৫৫ কোটি টাকা।
বাজেটে অনুন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৯৬ হাজার ৫১৩ কোটি টাকা। এ ব্যয়ের মধ্যে বেতন ও ভাতা বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা। পণ্য ও সেবা ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৮৩৪ কোটি টাকা। এছাড়া সুদ পরিশোধ ৩৫ হাজার ১০৯ কোটি টাকা, ভর্তুকি ও প্রণোদনা এবং চলতি স্থানান্তর ৬৪ হাজার ২০৫ কোটি টাকা, থোক ২ হাজার ২৭০ কোটি টাকা, শেয়ার ও ইকুইটিতে বিনিয়োগ ১১ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা।
উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৮ হাজার ৫৮৭ কোটি টাকা। এ ব্যয়ের ২৩ দশমিক ৮ শতাংশই পরিবহন ও যোগাযোগ খাতের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে। জ্বালানি ও বিদ্যুতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। এছাড়া স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়নে ১৮ দশমিক ৪ শতাংশ, শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে ১২ দশমিক ৩ শতাংশ, কৃষিতে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ, স্বাস্থ্যে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ, জনপ্রশাসনে ৪ দশমিক ২ শতাংশ সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণে ৩ দশতিক ৮ শতাংশ এবং অন্যান্য ৬ দশমিক ৯ শতাংশ।
বাজেটে ব্যক্তি খাতে করমুক্ত আয়ের সীমা ২ লাখ ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। মহিলা ও ৬৫ বছরের উর্ধ্ব করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবন্ধী করদাতাদের ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা আয় করমুক্ত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। যা আগের ছিলো ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা আয় করমুক্ত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। যা আগে ছিলো ৪ লাখ টাকা।
কমানো হয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত কোম্পিনারি কর হার। সাড়ে ২৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে এ কর হার ২৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বাজেটের ঘাটতি পূরণ করা হবে অভ্যন্তরীণ ব্যাংক ব্যবস্থা ও সঞ্চয়পত্র এবং বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান থেকে। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩২ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এ লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ২৬ হাজার ৫১৯ কোটি টাকা। আর বৈদেশিক অনুদান ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে যা ছিল ৬ হাজার ২০৬ কোটি টাকা।
ব্যাংকিং খাত থেকে ৩৮ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা নিয়ে নতুন অর্থবছরে ঘাটতি পূরণে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে এ লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩১ হাজার ২২১ কোটি টাকা। ঘাটতি পূরণে ব্যাংক বহির্ভূত খাত থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। যা চলতি অর্থবছরে ১২ হাজার ৫৬ কোটি টাকা।
ব্যাংক বহির্ভূত খাতের মধ্যে সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে ১৫ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যা চলতি অর্থবছরে ৯ হাজার ৫৬ কোটি টাকা। এছাড়া অন্যান্য খাত থেকে ৩ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি অর্থ নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। যা চলতি অর্থবছরে ৩ হাজার কোটি টাকা।
অর্থ ও পরিসংখ্যানের এই হিসাবের বাইরে বাজেটে ঘোষণা এসেছে নিজেদের অর্থায়নে পদ্মাসেতুর কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া পাতায় নারী ও শিশুদের উন্নয় মুক্তিযুদ্ধের কল্যাণ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখার। মুক্তিযোদ্ধার ভাতা দ্বিগুন করার ঘোষণা এসেছে এই বাজেট বক্তৃতায়।
রয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়। ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়ন, ইন্টারনেট সেবার মান বৃদ্ধি আর ২০১৬ সালের মহাকাশে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট (বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট) উৎক্ষেপনের কথা। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, ডাক ও টেলি যোগাযোগ বিভাগের জন্য ৩ হাজার ৫৫৭ কোটি টাকা বরাদ্দেরও ঘোষণা দেন অর্থমন্ত্রী।
কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কৃষি গবেষণা, মৎস ও প্রাণি সম্পদ উন্নয়ন, দারিদ্র বিমোচনে পল্লী উন্নয়নের কথা বলেন। সাত বিভাগে সাতটি পল্লী জনপদ গড়ে তোলার বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়ে, পল্লী উন্নয়ন খাতে ৪০ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
শিল্পায়ন ও বাণিজ্য খাতে তার বক্তৃতায় গুরুত্ব পেয়েছে শিল্প খাতের প্রসার, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশ, পর্যটন শিল্পের প্রসার, পাট শিল্পের গৌরব পুনরোদ্ধার, বাণিজ্য সম্প্রসারণ, এশিয়া প্যাসিফিক ট্রেড এগ্রিমেন্ট, সীমান্ত হাট প্রসঙ্গ।
এছাড়াও আঞ্চলিক ও উপআঞ্চলিক সহযোগিতার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী। এ জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দিয়েছেন বাজেটে।
বাদ যায়নি জলবায়ূ পরিবর্তন ও পরিবেশ প্রসঙ্গও। অর্থমন্ত্রী বন সম্প্রসারণ ও জীব-বৈচিত্র সংরক্ষণ, ইকো-ট্যুরিজম, পরিবেশবান্ধব কার্যক্রম, পরিবেশ রক্ষায় পাটের ব্যবহার ও দুর্যোগ মোকাবেলার কথা বলেছেন তার বাজেট বক্তৃতায়।
আবাসন ও পরিকল্পিত নগরায়নের ওপর জোর দিয়ে তিনি নগরায়নে সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনা, রাজধানী ঢাকার সৌনর্যবর্ধন, আবাসন সুবিধার সম্প্রসারণ, গৃহনির্মাণে ঋণ প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন। আর ঢাকার জিরো পয়েন্ট থেকে ২৫ মাইল দূরে একটি কনভেনশন নগর গড়ে তোলার ঘোষণাও ছিলো তার বাজেট বক্তৃতায়।
তথ্য, সংস্কৃতি, ধর্ম ও ক্রীড়া প্রসঙ্গ নিয়ে বলতে গিয়ে বিশ্ব ক্রিকেট অঙ্গনে বাংলাদেশ আজ সে শক্তিশালী অবস্থান নিশ্চিত করেছে সে কথা তুলে ধরতে ভোলেননি অর্থমন্ত্রী।
অদম্য খেলোয়াড়দের অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা হিসেবে ফুটবলের কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী খেলাটির উন্নয়নে শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় ১৫ কোটি টাকার একটি থোক বরাদ্দেরও ঘোষণা দেন বাজেট বক্তৃতায়।
জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তাও গুরুত্ব পায় অর্থমন্ত্রীর বক্তৃতায়। পুলিশ বাহিনীকে শক্তিশালী করার জন্য ৫০ হাজার নতুন পদ সৃষ্টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে ঘোষণা দেন তিনি।
এসব কিছু সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হলে দেশ সম্মৃদ্ধির সোপানে অগ্রসর হবে সে কথা বারবারই উচ্চারিত হয় আবুল মাল আব্দুল মুহিতের বাজেট বক্তৃতায়।
বাংলাদেশ সময়: ২২০৯ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০১৫
এডিএ/এএসএস/এমএমকে