ঢাকা: প্রবৃদ্ধি, উন্নয়ন ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার পথে অগ্রযাত্রার স্লোগান সম্বলিত প্রস্তাবিত বাজেটে (২০১৬-১৭) জনগণের জীবনযাত্রার উন্নয়ন নিশ্চিত করা হয়নি। বাজেটে অস্বাভাবিক হারে মূসক ও সম্পূরক শুল্ক আরোপ কর হয়েছে।
তারা বলছেন, রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের ঘোষিত বাজেটে সম্পূরক শুল্ক ও মুসক (মূল্য সংযোজন কর) আদায়ের উপর বেশ জোর দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। প্রমিত মূল্য সংযোজন কর ব্যবস্থা প্রবর্তনের অংশ হিসেবে সংকুচিত ভিত্তিমূল্য থেকে বেরিয়ে আসতে গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ ও তিনগুণ বেশি মুসক বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন।
আর এসব কারণে প্রস্তাবিত বাজেটের বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রস্তাবিত নতুন বাজেট বাস্তবায়নে সরকারের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ডক্টর এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম।
তিনি বলেছেন, গত অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি এনবিআর। তারপরও এবার তাদের লক্ষ্যমাত্রা আরও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সে হিসেবে এডিপির বাস্তবায়ন ও রাজস্ব আদায়ের লক্ষমাত্রা অর্জন করা যাবে বলে মনে হয় না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গর্ভনর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, জনগণের করের টাকায় ব্যাংকের মূলধন যোগান দিতে বিভিন্নখাতে ভ্যাট ও মূসক বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। আর ব্যাংকের মূলধন দিতে সরকার করের আওতা বাড়াচ্ছে।
চলতি বছরের ২ জুন জাতীয় সংসদে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এতে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৪২ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা।
২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য পরিবহনে কর ২ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ এবং অন্যান্য পরিবহনের ক্ষেত্রে নীট মূসকের হার ৭ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।
এদিকে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে এনবিআর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। দুই লাখ ৮ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকার মধ্যে আদায় করেছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। এবছর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নিয়ন্ত্রিত কর ব্যবস্থা থেকে আদায় করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে দুই লাখ তিন হাজার ১৫২ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, যানবাহনের টায়ারের শুল্ক ১০ শতাংশ বৃদ্ধি করে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। এতে রেডিয়াল টায়ারের দাম বাড়বে। বাড়বে পরিবহন খরচ। অযৌক্তিক ভাবে বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করতে আমরা টায়ার আমদানি শুল্ক আগেরটা বহাল রাখার জন্য বাজেটের আগে ও পরে অর্থমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছি।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বাংলানিউজকে বলেন, যানবাহনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেকোন ক্ষেত্রে মূসক ও শুল্ক বৃদ্ধি অযৌক্তিক, ন্যয় সঙ্গত নয়। ভ্যাট-মূসক যাই বাড়ানো হোক তা জনগণের কাছ থেকেই আদায় করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৭ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৬
এসই/জেডএম