শুক্রবার (০২ জুন) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত বাজেট আলোচনায় এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। জাতীয় বাজেট ২০১৭-১৮ এর পর্যালোচনা শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
সংস্থাটির ফেলো ড. দেবপ্রিয় বলেন, বর্তমান কর নীতি ও ভ্যাট আইনের কারণে উৎপাদন ব্যয় বাড়বে। ভ্যাট যেভাবে বাড়ানো হয়েছে এতে আগামী বছর মূল্যস্ফীতির আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য সবচেয়ে বেশি চাপে পড়বে দেশে নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণী।
তিনি আরও বলেন, এবার বাজেটে বাস্তবতার সঙ্গে মিল নেই। রাজস্ব আয়-ব্যয়ের মধ্যে বিরাট ফারাক রয়েছে। কাজেই এ বাজেটে পরাবাস্তব বাজেট কাঠামো দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বলা হচ্ছে রাজস্ব বাড়বে ৩১ দশমিক ৮ শতাংশ, গতবার যা ছিল ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ। অর্থাৎ এবার দ্বিগুণ হচ্ছে, এটা কতটা সম্ভব? বাজেটে সহজ কর আদায়যোগ্য সেবার ওপর কর বাড়ানো হয়েছে। যেমন ব্যাংক, বিমান ইত্যাদি। কিন্তু এসব খাতে কর তো আদায় হচ্ছে। কাজেই যারা কর দিচ্ছে তাদের ওপর করের বোঝা না বাড়িয়ে যারা কর দেন না তাদের করের আওতাভুক্ত করা উচিত।
এছাড়া বাজেটে শিক্ষাখাতের চেয়ে প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে। ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ উৎসাহিত হচ্ছে না। বড় প্রকল্পগুলোর মেয়াদ বাড়ছে। আর মেয়াদ বাড়া মানেই ব্যয় বাড়বে, যোগ করেন দেবপ্রিয়।
তিনি বলেন, ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে বাজেটে। তবে এজন্য রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। কিন্তু যে অর্থায়ন বাজেটে বলা হয়েছে। যে আর্থিক কাঠামো দেওয়া হয়েছে, তা সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
এ অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, বাজেটে রাজনৈতিক অর্থনীতিকে আনা হয়নি। যেমন পুঁজিবাজার, ব্যাংকখাত এসব রাজনৈতিক অর্থনীতির আওতায় পড়ে। কিন্তু ওইখাতে পুঁজিপতিদের স্বার্থহানির দিকে যাননি অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রণালয় ও পরিবল্পনা কমিশনকে দ্রুত বাজেট বাস্তবায়নের জন্য কাঠামোর প্রণয়ন দ্রুত করতে হবে বলে পরামর্শ দেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
বাজেট পর্যালোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান, ড. ফাহমিদা খাতুন, ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩১ ঘণ্টা, জুন ০২, ২০১৭
ইইউডি/এমজেএফ