প্রতিদিন জাল, নৌকা ও ট্রলারসহ মাছ ধরার সরঞ্জাম নিয়ে নদীতে নামলেও তাদের ফিরে আসতে হচ্ছে খালি হাতে। কারণ যেটুকু মাছ পাচ্ছেন তা দিয়ে খরচ ওঠে না তাদের।
ভোলা উপকূলের মেঘনা তীরবর্তী ইলিশা, ভোলারখালসহ বিভিন্ন মৎস্যঘাট ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
জানা যায়, ইলিশের অভয়াশ্রম রক্ষায় মার্চ-এপ্রিল দুই মাস ইলিশ শিকার বন্ধ থাকার পর মে মাসের শুরুতেই নদীতে ইলিশ শিকারে নেমেছিলেন ভোলার জেলেরা। এরপর থেকে প্রায় দেড়মাস পার হয়ে গেলেও ইলিশের দেখা মিলছে না জেলেদের জালে। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন জেলেরা।
সদরের শিবপুর ও ইলিশা এলাকার জেলে সালাউদ্দিন, আ. হক, ইব্রাহিম, রমিজ, খালেক ও তাহের বাংলানিউজকে বলেন, নদীতে জাল বেয়ে তেলের খরচ উঠছে না। আগে এমন সময় নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়তো। দুই মাস নদীতে মাছ শিকার বন্ধ থাকায় মনে করেছি অনেক ইলিশ ধরা পড়বে কিন্তু নদীতে ইলিশ নেই। ভরা মৌসুমে ইলিশ না থাকায় পরিবার নিয়ে কষ্টে দিন কাটাতে হচ্ছে।
জেলে সালাউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, এনজিও থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে নৌকা মেরামত করে নদীতে নেমেছি কিন্তু মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। ছেলে-মেয়েদের ঈদের জামা-কাপড় কিনে দিতে পারিনি। একই কথা জানান মনির ও ইব্রাহিম।
এদিকে, নদীতে ইলিশ সংকট থাকায় মাছের আড়ৎগুলো জমে ওঠেনি। সামান্য কিছু মাছের কেনা-বেচা হলেও তাতে সন্তুষ্ট নন আড়ৎদাররা। ইলিশা ঘাটের আড়ৎদার মো. সামসুদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, নদীতে ইলিশ নেই, তাই জেলেরাও কষ্টে আছে, আমরাও লোকসানের মুখে রয়েছি। সামনে ঈদ সবার আশা ছিলো অন্তত ঈলিশ বিক্রির টাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে ভালোভাবে ঈদ করবেন কিন্তু মাছ সংকটের কারণে সবারমুখ মলিন হয়ে গেছে।
আড়তদার মহিবুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, আগে এ ঘাটে দিনে দৈনিক ৬/৭ লাখ টাকার ইলিশ কেনা-বেচা হতো কিন্তু এখন হচ্ছে মাত্র ৫০/৬০ হাজার টাকার। জেলেদের দাদন দিয়ে আমরাও ভালো নেই।
এ ব্যাপারে ভোলা সদর সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, এ মুহুর্তে নদীতে ইলিশের সংকট রয়েছে, তবে আগামী দু’একমাসের মধ্যে ইলিশ ধরা পড়লে জেলেদের দুর্দিন কেটে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৪৫ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৮
এনটি