জয়ের জন্য শেষ দিনে ২৬৩ রান প্রয়োজন ছিল পাকিস্তানের, হাতে ৮ উইকেট। রাওয়ালপিন্ডির ‘হাইওয়ের’ পিচে এই রান পাড়ি দেওয়া কোনো অসম্ভব কাজ নয়।
গতকাল চতুর্থ দিনে চা-বিরতির পরপরই পাকিস্তানকে ৩৪৩ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় বেন স্টোকসের দল। এমন সাহসী সিদ্ধান্তের তারিফ হয়েছিল বটে, কিন্তু জিততে না পারলে এসব কিছুরই মূল্য ছিল না। স্টোকসকে তার বোলাররা হতাশ করেনি। উইকেটে কিছু না থাকলেও নিজেদের সবটুকু নিংড়ে দিয়েছেন তারা। তাই তো ম্যাচ শেষে জয়ের নায়ক দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেট নেওয়া পেসার ওলি রবিনসন। ১ হাজার ৭৬৮ রানের ম্যাচে কোনো ব্যাটারের ম্যাচ-সেরা হতে না পারাটা আশ্চর্যজনকই বটে।
২ উইকেট ৮০ রান নিয়ে দিন শুরু করা পাকিস্তান দ্রুতই হারায় ইমাম উল হককে। চতুর্থ উইকেটে মোহাম্মদ রিজওয়ানের সঙ্গে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন সৌদ শাকিল। কিন্তু ‘বুড়ো’ জেমস অ্যান্ডারসনের কারণে ৮৭ রানের বেশি এগোতে পারেনি এই জুটি। ৪৬ রান করা রিজওয়ানকে ফেরান অ্যান্ডারসন। পরে ৭৬ রান করা শাকিলকে তুলে নিয়ে ইংলিশদের জয়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল করে তোলেন রবিনসন।
তবে ষষ্ঠ উইকেটে আজহার আলী ও আগা সালমানের জুটিতে আবারও প্রাণ ফিরে পায় পাকিস্তান। ধীরে ধীরে বিপদ হয়ে ওঠেন তারা। যে কারণে শেষ সেশন পর্যন্ত মাঠে গড়ায় খেলা। তাদের ভাঙতে এবারও ইংল্যান্ডের ত্রাণকর্তা রবিনসন। দুই ওভারের ব্যবধানে দুজনকে সাজঘরের পথ দেখান তিনি। ভাঙে ৬১ রানের জুটি। পরে জয় তুলে নিতে খুব বেশি দেরি করেনি ইংল্যান্ড। জ্যাক লিচের এলবিডব্লিউর ফাঁদে পরে নাসিম শাহ বিদায় নিলে ২৬৮ রানেই স্বাগতিকদের গুটিয়ে দেয় তারা। নির্ধারিত সময়ে খেলা শেষ হতে তখনো বাকি ছিল মাত্র ৫ ওভার।
অথচ এই ম্যাচে ইংলিশদের মাঠে নামা নিয়েই ছিল শঙ্কা। কেননা খেলার আগের দিন খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন বেশ কজন ক্রিকেটার। তবু মাঠে এর প্রভাব পড়তে দেননি স্টোকসরা। টস জিতে প্রথম ইনিংসে ৬৫৭ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় দলটি। সেঞ্চুরি করেন—বেন ডাকেট, জ্যাক ক্রলি, ওলি পোপ ও হ্যারি ব্রুক। জবাবে পাকিস্তানও কম যায়নি। আব্দুল্লাহ শফিক, ইমাম উল হক ও বাবর আজমের সেঞ্চুরিতে ৫৭৯ রান করে তারা।
ম্যাচের গতি যেভাবে এগোচ্ছিল, তাতে ড্রয়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল ছিল বেশি। কিন্তু ইংল্যান্ড তা মানলে তো। দ্রুত ২৬৪ রান তুলে গতকাল চা-বিরতির পর পাকিস্তানের সামনে ৩৪৩ রানের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয় সফরকারীরা। কিন্তু চ্যালেঞ্জ জয় করা তো সাহসীদের পক্ষেই সম্ভব। টেস্ট ক্রিকেটে এই মুহূর্তে ইংল্যান্ডে চেয়ে সাহসী কোনো দল আর আছে কি?
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০২২
এএইচএস