অস্ট্রেলিয়ার ভবিষ্যৎ বলা হয় তাকে। সেই ছাপ বেশ কয়েকবার রেখেছেন তিনি, এবার কেবল দলে জায়গাটা পাকা করার অপেক্ষা।
গ্রিনের বয়স এখন ২৪। ক্রিকেটে তার শুরুটাই হয়েছে কেবল। অলরাউন্ডার হিসেবে তিনি হতে পারেন লম্বা রেসের ঘোড়া। পার্থে শুরু হওয়া পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে একাদশে না থাকলেও তার আগে গ্রিন শুনিয়েছেন জীবনের গল্প।
মৃদুভাষী ও অন্তর্মুখী স্বভাবের গ্রিন বলেন, ‘আমি এটিকে নিজের সৌভাগ্যই বলবো যে একই পর্যায়ের দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ নিয়ে অন্য মানুষদের যতটা ভুগতে হয়, অতটা ভোগান্তির মধ্যে আমাকে পড়তে হয়নি। ’
নিজের এই রোগটি কতটা গুরুতর পর্যায়ের, সেটিও জানাতে ভোলেননি তিনি, ‘দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের মোট পাঁচটি পর্যায়। প্রথম পর্যায়টি সবচেয়ে কম গুরুতর। আর পঞ্চম পর্যায়ে গেলে কিডনি প্রতিস্থাপন বা ডায়ালাইসিস ব্যবস্থায় যেতে হয়। আমি আছি দ্বিতীয় পর্যায়ে। এখান থেকে ঠিকমতো নিজের যত্ন-আত্তি না নিলে অবস্থা খারাপের দিকেই যেতে থাকবে। ’
দ্বিতীয় পর্যায়ে তাঁর কিডনি কতখানি কার্যকর আছে, সে ধারণাও দিয়েছেন গ্রিন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে অন্যান্য স্বাভাবিক কিডনির মতো আমারটি রক্ত ফিল্টার করতে পারে না। বলতে পারেন, এই মুহূর্তে আমার কিডনি ৬০ পারসেন্ট কার্যকর। যেটি দ্বিতীয় পর্যায়ের মধ্যে পড়ে। ’
তার বাবা-মাকে জন্মের সময়ই ছেলের এই রোগের কথা জানানো হয়েছিল, ‘কিডনি নষ্ট হতে থাকলে কখনো সেরে ওঠে না। আপনি শুধু এর নষ্ট হওয়ার গতি কমাতে পারেন। তার জন্য একটা উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে পারেন। খেলতে নামলেই মনে হতো আমি যথেষ্ট পানি পান করিনি, যথেষ্ট খাওয়াদাওয়া করিনি, নিজের প্রতি যত্নশীল হইনি। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আমি বুঝতে পারি, আমি সবকিছু ঠিকঠাক করেছি। দুর্ভাগ্যবশত এরপরও আমার শরীরে টান পড়ে। ’
রোগটি ধরা পড়েছিল মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থায় আল্ট্রাসাউন্ডের সময়। মা বি ট্রেসির গর্ভাবস্থার ১৯তম সপ্তাহে স্ক্যান করতে গিয়েই ধরা পড়ে এই জটিলতা। গ্রিনের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা বাবা গ্যারি জানিয়েছেন, তাদের ছেলের ১২ বছরের বেশি না বাঁচার ভয় নিয়েও লম্বা একটি সময় পার করে দিয়েছেন এই দম্পতি। সেই ভয়ের সময় কাটিয়ে গ্রিন এখন দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন ক্রিকেট। তিন ফরম্যাটেই অভিষেক হয়েছে তার। সম্প্রতি ভারতে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতা অস্ট্রেলিয়ার দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২৩
এএইচএস