ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

দুই বছরে যুবা ক্রিকেটারদের কী উন্নতি করলেন স্টুয়ার্ট ল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, স্পোর্টস | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০২৪
দুই বছরে যুবা ক্রিকেটারদের কী উন্নতি করলেন স্টুয়ার্ট ল

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান রাব্বি ও কোচ স্টুয়ার্ট লর মাঝখানে বসেছিলেন নির্বাচক হান্নান সরকার। পরে চেয়ার বদলে মাঝে আসেন ল, পাশেই বসেছিলেন রাব্বি।

ছোট ছোট প্রশ্নেও বড় উত্তর দেওয়া কোচের কথাগুলো মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনছিলেন অধিনায়ক।

সোমবার ঘোষণা করা হয়েছে আসন্ন যুব বিশ্বকাপ স্কোয়াড। জাতীয় দলের আগে বয়সভিত্তিক পর্যায়ে শেষ ধাপ এটি। প্রায় দুই বছরের যাত্রারও সমাপ্তি ঘটবে এতে। ক্রিকেটারদের জন্য শুরু হবে সিনিয়র ক্রিকেটারদের মূল চ্যালেঞ্জ। তবে এর আগে ক্রিকেটারদের প্রস্তুত হওয়ার জায়গাও অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়।  

ব্যাটিং, বোলিং ও মানসিকভাবে কী বদল এসেছে আগামী বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে যাওয়া যুবাদের? এমন প্রশ্নে বিশদ উত্তরই দিয়েছেন স্টুয়ার্ট ল। ব্যাটারদের স্ট্রাইক রোটেশন, পেসারদের গ্রুপ হয়ে ওঠায় খুশি তিনি। জানিয়েছেন, হয়েছে অনেক বড় উন্নতি।

ল বলেন, ‘দেখুন, আমার মনে হয় শুধু যে ছেলেরা বিশ্বকাপে যাচ্ছে তারাই নয়, লম্বা সময় ধরে আমরা যে গ্রুপটাকে নিয়ে কাজ করেছি তাদেরও উন্নতি হয়েছে। এর অনেক বড় কৃতিত্ব দিতে হয় আমাদের স্ট্রেন্থ ও কন্ডিশনিং কোচ অ্যালেক্স ক্যারিকে, তাদেরকে একটা ভালো শারিরীক অবস্থায় নিয়ে আসায়। আমাদের এখন খুব ভালো ফিট খেলোয়াড় আছে। ’

‘ওরা যখন প্রথম এলো, শুধু ছক্কা মারতে চাইতো; রান নিতে না চাওয়ার তাড়না ছিল স্পষ্ট। এখন এটি প্রায় উল্টে গেছে। এখনও ওদের সামর্থ্য আছে ইনিংসের শেষদিকে বাউন্ডারি মারার কিন্তু আমাদের রানিং বিট্যুইন দ্য উইকেট, স্ট্রাইক রোটেশন উন্নতি করেছে। এটা আমাদের বড় ফোকাসের জায়গা ছিল। ’

শুধু ব্যক্তিগতভাবেই নয়, দল হিসেবে; দলের পরিকল্পনার অংশ হয়ে ব্যাটিং করায়ও উন্নতি হয়েছে বলে মনে করেন ল।  

তিনি বলেন, ‘আরেকটা জায়গায় নজর দিয়েছিলাম ১০ ওভারে ৫০ রান করার ব্যাটিং ও ইনিংসের শেষের দিকে ধারাবাহিকতা রাখা। যখন আমরা ভারতে গেলাম, এরপর এশিয়া কাপে এটা পুরো বদলে দিয়েছি। আমার মনে হয় এখন ছেলেরা বুঝতে পেরেছে ১০ ওভারে ১২০ রানের দরকার নাই। এভাবেই আমরা এখন ম্যাচেও তাকাই। অনেক বিশাল উন্নতি হয়েছে। ’

বোলিংয়ে স্পিন কখনোই ভাবনার কারণ ছিল না বলে মনে করেন ল। পেসারদের উন্নতিতে কৃতিত্ব দিয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক পেসার ও বর্তমান কোচ নাজমুল হোসেনকে।

তিনি বলেন, ’বোলিংয়ের দিক থেকে স্পিন কখনোই বাংলাদেশে ইস্যু ছিল না। আমরা হাতে পছন্দের জন্য অনেক বিকল্প আছে। আমার মনে হয় খুব ভালো কিছু তরুণকে নিয়ে পেস ইউনিট গড়েছি আমরা, এর বড় কৃতিত্ব পাবে বোলিং কোচ নাজমুল হোসেন। ’

‘আর এখন এই মুহূর্তে, আমরা যখন এশিয়া কাপে দেখলাম। ওখানে কোয়ালেটি অনেক উঁচুতে ছিল। আমাদের কেবল এটুকু নিশ্চিত করতে হয়েছে ওরা মাটিতে পা রেখে পরের ম্যাচ নিয়ে চিন্তা করবে। কিন্তু আমি এই ছেলেদের নিয়ে গর্বিত। তারা শক্ত অনুশীলন করে। কঠোর পরিশ্রম দেখে পিছিয়ে যায় না। ’

যুব ক্রিকেটে ফলের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে ক্রিকেটারদের উন্নতি। পরের ধাপের জন্য তাদের ঠিকভাবে প্রস্তুত হওয়াই মূল চ্যালেঞ্জ। অনেকদিন ধরেই বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে ভালো করছে বাংলাদেশ, কিন্তু তার ফলটা জাতীয় দলে সেভাবে পাওয়া যাচ্ছে না। কোনটি গুরুত্বপূর্ণ, ফল নাকি প্রসেস?

ল এর উত্তর, ‘প্রসেস সবসময়ই এক নম্বর। যদি আপনি বড় কিছু, জয়ের ব্যাপারে চিন্তা করেন তাহলে ভুলে যাবেন এই পথে আপনাকে কী করতে হবে। এজন্য আমি শুধু খেলা বা দিনশেষে কী ফল হবে; সেসবে মনোযোগ দেই না; সেটাই নিয়ন্ত্রণ করতে চাই যেটা করতে পারবো। ’

‘আমরা যেটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো তা হচ্ছে প্রস্তুতি, আমাদের কাজটা কীভাবে করবো, পরিকল্পনায় স্থির থাকা, ভিন্ন প্রতিপক্ষের জন্য আলাদা পরিকল্পনা, প্রতিটা ম্যাচে আত্মবিশ্বাস সঙ্গী করে যাওয়া; এটা জানা যে আমরা কাজটা করেছি আর তৈরি আছি। এটাতেই আমাদের নজর। ’

‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হচ্ছে পরেরটা, ২০ তারিখ ভারতের বিপক্ষে। এই মুহূর্তে সেটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ওই ম্যাচ শেষ হওয়ার পর পরেরটি গুরুত্বপূর্ণ। একটা সময়ে একটাই ম্যাচ। এটা শুনতে ক্লিশে শোনায়, তবে প্রসেস মেনে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০২৪
এমএইচবি/আরইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।