ফেব্রুয়ারির শুরুতে দুটি টেস্ট খেলতে নিউজিল্যান্ড সফর করবে দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু এই সফরের সূচি দেশটির ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি লিগের সঙ্গে সাংঘার্ষিক।
দক্ষিণ আফ্রিকার এমন সিদ্ধান্তই টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিল। সাদা পোশাকের সেই আভিজাত্য-রোমাঞ্চের কি অস্ত নামতে শুরু করেছে? অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক প্যাট কামিন্স অবশ্য এমন গেল গেল রবে কান দিচ্ছেন না। টেস্ট ক্রিকেটকে টিকিয়ে রাখতে জাদুকরি সমাধানের আশায় আছেন তিনি।
কামিন্স বলেন, ‘আদর্শগতভাবে এটি টিকিয়ে রাখতে গেলে ১৫ থেকে ২০টি টেস্ট খেলুড়ে জাতি থাকবে, যারা সত্যিই শক্তিশালী। আমি জানি, অনেক রকমের ভিন্ন চ্যালেঞ্জ আছে। অস্ট্রেলিয়ায় যে এটি প্রাধান্য পায়, সে কারণে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি। যখনোই খেলি, অনেক সমর্থন পাই। আমি জানি না, জাদুকরি সমাধান কী হতে পারে, তবে এমন কিছু থাকলে দারুণ হতো। টেস্ট ক্রিকেটপ্রেমী হিসেবে আমি তো চাইব সবাই টেস্ট ক্রিকেট দেখুক। কিন্তু এ মুহূর্তে ক্রিকেট যতটা শক্তিশালী, আগে কখনো দেখিনি। ’
পাকিস্তানের বিপক্ষে কাল সিরিজের তৃতীয় টেস্ট খেলতে নামবে অস্ট্রেলিয়া। সিরিজ শুরুর আগে প্রশ্ন উঠেছিল, টেস্ট অজি ক্রিকেট ভক্তদের আগ্রহ একই থাকবে কি না। কিন্তু মেলবোর্ন টেস্টের প্রথম দুই দিনে লাখো দর্শক দেখার পর সেই প্রশ্ন হাওয়ায় মিলিয়ে যায়।
কামিন্স বলেন, ‘আমার আশা, আগামী ১০ বা ২০ বছরে এটি এখনকার চেয়ে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে। আমার মনে হয়, এবারের টেস্ট মৌসুমের আগে পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে কিছু প্রশ্ন ও প্রসঙ্গ ছিল। পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটি দুর্দান্ত টেস্ট ম্যাচ হয়েছে, অনেক সমর্থন, অনেক দর্শক ছিল। ’
কামিন্সের মতে, দক্ষিণ আফ্রিকার সিদ্ধান্ত বিচ্ছিন্ন ঘটনা হয়ে থাকবে। তিনি বলেন, ‘ফলে যেভাবে বলা হচ্ছে, এটি যে ততটা নিচের দিকে যাচ্ছে, আমি তা মনে করি না। তবে যে পরিমাণে অন্যান্য ক্রিকেট হচ্ছে, সেখানে একটা ব্যাপার আছে। অবশ্যই অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে মেধার প্রতিযোগিতা এখন অনেক বেশি। আমি বেড়ে উঠেছি টেস্ট ক্রিকেটকে দারুণ ভালোবেসে। আমার মনে হয়, এটি বিভিন্ন পর্যায়ের মধ্য দিয়ে যায়। আমি জানি, দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের সেরা দলটি পাঠাচ্ছে না। আশা করি, এটি (বিচ্ছিন্ন) একটা ঘটনা হয়ে থাকবে। ’
সেই দক্ষিণ আফ্রিকায় এখন টেস্ট সিরিজ খেলতে ব্যস্ত ভারত। প্রথম ম্যাচ হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া তারা। তা সত্ত্বেও অধিনায়ক রোহিত শর্মা সংবাদ সম্মেলনে উঠে এলো টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গ।
রোহিত বলেন, ‘টেস্ট ক্রিকেট এমন কিছু যা বাঁচিয়ে রাখতে হবে এবং গুরুত্ব দিতে হবে। এটি একটি বা দুটি দেশের দায়িত্ব নয়। টেস্ট ক্রিকেটকে সুন্দর ও রোমাঞ্চকর রাখা যায় কি না, তা নিশ্চিত করা সব টেস্ট খেলুড়ে দেশেরই দায়িত্ব। ’
‘সারা বিশ্বের দিকে যদি তাকান, তাহলে দেখবেন শেষ দুই-তিন বছরে প্রচুর ভালো মানের টেস্ট ক্রিকেট খেলা হচ্ছে। সব জায়গায় দেখবেন রেজাল্ট হচ্ছে। এটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ক্রিকেট, আমরা জানি। এটি যেন সুন্দর, উপভোগ্য ও প্রতিযোগিতামূলক থাকে নিশ্চিত করা সবার দায়িত্ব। দিনশেষে মানুষ সেটার জন্যই খেলা দেখতে আসতে চায়। ’
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০২৩
এএইচএস