পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডে অস্থিরতা নতুন কিছু নয়। সাম্প্রতিক সময়ের কথাই ধরা যাক।
২০১৬ সালে প্রথমবার কোচ হয়ে আসার পরের বছরই পাকিস্তানকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জেতান আর্থার। কিন্তু ২০১৯ বিশ্বকাপে বাজে পারফরম্যান্সের কারণে বিদায় করে দেওয়া হয় তাকে। তবে ২০২৩ বিশ্বকাপ তাকে আবারও সেই পদে ফিরিয়ে আনতে উঠেপড়ে লাগেন তৎকালীন পিসিবি চেয়ারম্যান নাজাম শেঠি। হেড কোচ না হিসেবে না হলেও আর্থারকে ডিরেক্টর অব ক্রিকেট হিসেবে নিয়োগ দেন তিনি। কিন্তু বিশ্বকাপ ঘনিয়ে আসতে আসতে তিনিই কেটে পড়েন পিসিবি থেকে।
আর্থারের মতে, বোর্ডের কাঠামোর ক্রমাগত পরিবর্তনের কারণে ক্রিকেটাররা দলের পরিবর্তে শুধুমাত্র নিজের জন্য খেলে থাকে। উইজডেন ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন বিস্ফোরক তথ্য দেন তিনি।
আর্থার বলেন, 'আমি প্রতিনিয়ত দেখছি পাকিস্তান ক্রিকেট নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারছে। প্রতিভা সেখানে আছে, সেজন্য ভালো কাঠামো, নেতৃত্ব একইসঙ্গে ধারাবাহিকতা ও সঠিক নির্দেশনা দরকার। নাজামকে ধন্যবাদ কারণ ২০১৬-২০১৯ সালের ভেতর আমরা এমন কিছু খেলোয়াড় পেয়েছিলাম যাদের প্রসেসের ওপর আস্থা ছিল। ইনজামাম উল হকের (সাবেক নির্বাচক) সঙ্গে আমার কাজের সম্পর্কটা দুর্দান্ত। তার সঙ্গে বসে যখন দল নির্বাচন করি এবং পরে যখন খেলোয়াড়দের সঙ্গে এটা নিয়ে আলোচনা করি, তারা জানত এই কাঠামো বিদ্যমান থাকবে। কারণ আমি ও ইনজির ধারাবাহিকতার একটি নিদর্শন তৈরি করেছিলাম। '
'ফখর জামানের কথাই ধরুন না, তাকে বলেছি তুমি আগামী দশটি ওয়ানডেতে খেলবে। আমরা জানি সে আমাদের হয়ে ম্যাচ জেতাবে, একইসঙ্গে এমনটা বলা বেশ ঝুঁকিপূর্ণও। কিন্তু অন্তত এভাবেই খেলোয়াড়রা কাঠামো ও নির্বাচন প্রক্রিয়ার প্রতি বিশ্বাস রাখতে শুরু করে এবং দলের হয়ে খেলে। '
আর্থার জানান, বোর্ড ঠিকমতো খেলোয়াড়দের সঙ্গে যোগাযোগ করে না। তিনি বলেন, 'এটি যদি ক্রমাগত পরিবর্তন হয় এবং অস্থিরতা থাকে তাহলে খেলোয়াড় আত্মরক্ষার উপায় খুঁজতে শুরু করে এবং দিনশেষে তারা নিজের জন্য খেলে, কেবল পরবর্তী সফরের কথা ভাবতে থাকে। এমনটা দেখা হতাশার কারণ খেলোয়াড়দের সঠিক সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। এখানে খোলামেলাভাবে আলোচনা কারণে। তারা জানে এই বিষয়ে সবসময় পরিবর্তন হবে। '
'ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রচুর প্রতিভা পড়ে আছে। যেমনটা আগেও বলেছি, আমরা একইসঙ্গে হাই-পারফরম্যান্সের কাঠামোও তৈরি করেছি যা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছিলাম। কিন্তু চেয়ারম্যানশিপের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তা ভেস্তে যায়। যা আবারও খুবই হতাশার। আমি এখনো মনে করি পাকিস্তান ক্রিকেট নিজের পায়ে গুলি করছে এবং আরও উন্নতি করতে পারে। '
বিশ্বকাপে বাজে পারফরম্যান্সের পর আর্থারের জায়গায় মোহাম্মদ হাফিজকে নিয়োগ দিয়েছে পিসিবি। তার অধীনে অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়ে টেস্টে হোয়াইটওয়াশড হয়েছে পাকিস্তান। এছাড়া নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতেও হেরেছে তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২৪
এএইচএস