ঢাকা: বার বার বলা হচ্ছিলো রান খরার বিপিএল। তবে, বন্দরনগরীতে রান খরার বিপিএলের ১৬তম ম্যাচটি দেখতে আসা দর্শকরা পেলো ভিন্ন স্বাদ।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে ১৬তম ম্যাচে মাঠে নামে বরিশাল বুলস আর ঢাকা ডায়নামাইটস। আগে ব্যাটিং করে কুমার সাঙ্গাকারার ঢাকা নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৫৮ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে। তবে, ৮ বল হাতে রেখেই মাহামুদুল্লাহ রিয়াদের বরিশাল এক উইকেট হারিয়ে সে রান টপকে যায়।
দলকে জেতাতে বরিশালের হয়ে এ ম্যাচে অপরাজিত শতক হাঁকান ক্যারিবীয় বাঁহাতি ওপেনার ২৩ বছর বয়সী এভিন লুইস। যাকে প্লেয়ার্স বাই চয়েজের সময় বরিশাল ডেকে নিলেও অনেকের মনেই আসেনি কে এই ব্যাটসম্যান! তবে, নিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি খেলতে নেমে যে মহাকাব্যিক ইনিংস খেলেছেন ক্যারিবীয় এ ব্যাটসম্যান, খুব শিগগিরই তা ভুলে যাবেন না বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রেমীরা।
৬৪ বলে শতক পূর্ণ করেন লুইস। মুস্তাফিজুর রহমানের করা ১৮তম ওভারের শেষ বলটিতে সিঙ্গেল নিয়ে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছেন তিনি। এ সময় তার নামের পাশে সাতটি বাউন্ডারি আর ছয়টি ওভার বাউন্ডারি লেখা হয়ে যায়। ১০১ রান করে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন লুইস। উপহার হিসেবে পেয়ে যান ম্যাচ সেরার পুরস্কারটিও।
তার বিশাল ছয়টি ছক্কার তিনটিই এসেছে ইনিংসের ১২তম ওভারে। ঢাকার ডয়েসকাটের করা সে ওভারে তিনটি ছক্কা আর দুটি চারে ২৭ রান তুলে নেন বাঁহাতি ওপেনার লুইস। ১৫৯ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে রনি তালুকদারকে সঙ্গে নিয়ে লুইস তুলে নেন ১২৭ রান (১৩.৪ ওভারে)। ম্যাচও বের করে নেন ঢাকার হাত থেকে।
ম্যাচ সেরার পুরস্কার পাওয়ার পর লুইস জানান, ব্যাটিংয়ে তার আইডল স্বদেশী ক্রিস গেইল। ব্যাটিংয়ে যখন নামি, তখনেই মনে হয়েছিল উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য বেশ ভালো রয়েছে। রনি তালুকদারকে সঙ্গে নিয়ে খেলাটা উপভোগ্য ছিল। সে দারুণভাবে আমার সাথে চাপ সহ্য করে খেলেছে। আমাদের মাঝে বোঝাপড়াটাও বেশ ভালো ছিলো।
লুইসের এ শতকটি এবারের আসরের প্রথম হলেও এর আগে দুই আসর থেকে শতক এসেছে আরও আটটি। যার মধ্যে ক্রিস গেইল একাই করেন তিনটি। এবারো বরিশালের হয়ে মাঠ কাঁপাবেন গেইল। তাহলে হয়তো দুই ক্যারিবীয় ওপেনারকে (গেইল-লুইস) একসঙ্গে জ্বলে উঠতে দেখা যাবে বিপিএলের তৃতীয় আসরে।
টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এ শতকের মধ্যদিয়ে লুইস এক হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। ত্রিনিদাদ এন্ড টোবাগোর হয়ে ক্যারিবীয়ান প্রিমিয়ার লিগের আসরে খেলেছেন তিনি। ১৮টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলা লুইস লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ খেলেছেন মাত্র ১৪টি। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ৩০টি ম্যাচ খেলা এ ওপেনার ৯০টি বাউন্ডারির পাশাপাশি হাঁকিয়েছেন ৫৪টি ছক্কা। ব্যাটিং স্ট্রাইকরেট ১৩০.২২। এ থেকেই বোঝা যায় ব্যাটিংয়ে কতটা আগ্রাসী লুইস।
লুইস গত জুলাইয়ে ক্যারিবীয়ান প্রিমিয়ার লিগের ১৩তম ম্যাচে সেন্ট কিটসের হয়ে ৪৫ বলে ৬টি ছক্কা আর ৬টি চার হাঁকিয়ে শ্রীলঙ্কান তারকা মাহেলা জয়াবর্ধনের থ্রোতে রান আউট হওয়ার আগে খেলেছিলেন ৮২ রানের ইনিংস। ২৭তম ম্যাচে মাত্র ২২ বলে দুটি চারের সাথে ৫টি ছক্কায় করেছিলেন ৪০ রান।
লুইসের অনবদ্য শতকের ফলে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠল ৫ ম্যাচ খেলা বরিশাল। সর্বোচ্চ ৮ পয়েন্ট পাওয়া বরিশালের পরে রয়েছে এক ম্যাচ বেশি খেলে সমান পয়েন্ট পাওয়া সাকিব আল হাসানের রংপুর রাইডার্স।
বাংলাদেশ সময়: ২৩০০ ঘণ্টা, ০২ ডিসেম্বর ২০১৫
এমআর