ঢাকা: বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চট্টগ্রাম পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হয় সাকিব আল হাসানের রংপুর রাইডার্স আর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের বরিশাল বুলস। সাকিবের রংপুরকে ডাকওয়ার্থ পদ্ধতিতে ৬ উইকেটে হারিয়েছে বরিশাল।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিং করা রংপুর নিয়মিত বিরতিতে ৯ উইকেট হারিয়ে ১০৪ রান সংগ্রহ করে। ১০৫ রানের টার্গেটে বরিশাল ব্যাটিংয়ে নামলেও বৃষ্টি বাধায় (৩.৩ ওভার) তাদের ইনিংস নেমে আসে ১৩ ওভারে। বুলসের সামনে নতুন টার্গেট দাঁড়ায় ৭৫ রান। ৩ বল হাতে রেখেই ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বরিশাল।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি রংপুরের। দলীয় ৮ রানের মাথায় দলের ওপেনার সৌম্য সরকার বিদায় নেন। নিজের প্রথম আর দলের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই শূন্য রানে ত্রিনিদাদের অলরাউন্ডার রায়ান আমরিতের তালুবন্দি হন সৌম্য। টাইগার পেসার আল আমিনের প্রথম শিকারে ফেরেন সৌম্য। একই ওভারে তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামা সাকিব আল হাসানকেও ফিরিয়ে দেন আল আমিন। দলীয় ১০ রানের মাথায় বুলসের দলপতি মাহামুদুল্লাহ রিয়াদের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন রাইডার্স দলপতি সাকিব (১)।
স্কোরবোর্ডে আর ১৩ রান যোগ হতেই রংপুরের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে সৌম্য-সাকিবদের পথ ধরেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিথুন। তাইজুল ইসলামের বলে আমরিতের তালুবন্দি হওয়ার আগে মিথুনের ব্যাট থেকে আসে মাত্র দুই রান। আরেক ওপেনার জহুরুল ইসলাম দশম ওভারের প্রথম বলে আউট হন। আমরিতের বলে কাভারে দাঁড়ানো মাহামুদুল্লাহর হাতে ধরা পড়ার আগে জহুরুল খেলেন ২৪ রানের একটি ছোট ইনিংস। রাইডার্সের চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলীয় ৩৬ রানে বিদায়ের আগে জহুরুল ৩২ বলে একটি করে চার ও ছক্কা হাঁকান।
পাওয়ার প্লে’র ছয় ওভারে তিন উইকেট হারানো রংপুর প্রথম দশ ওভারে চার উইকেট হারিয়ে তোলে মাত্র ৩৯ রান।
নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে উইকেটে থিতু হওয়ার আগেই ফেরেন থিসারা পেরেরা (৯)। এ লঙ্কান তারকাকে মেহেদি মারুফের হাতে ধরা দিতে বাধ্য করেন আরেক লঙ্কান সেকুজে প্রসন্ন। তবে, ব্যাটিংয়ের হাল ধরার চেষ্টা করেন পাকিস্তানের ব্যাটসম্যান মিসবাহ উল হক। ১৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ সামির বলে উইকেটের পেছনে দাঁড়ানো রনি তালুকদারের গ্লাভসবন্দি হয়ে বিদায় নেন ২৭ বলে তিনটি বাউন্ডারিতে ২২ রান করা মিসবাহ।
একই ওভারে আফগানিস্তানের মোহাম্মদ নবীকে (৫) ফিরিয়ে দেন মোহাম্মদ সামি। ১৩ বলে দুটি চার আর একটি ছক্কা হাঁকিয়ে বিদায় নেন আমরিতের বলে বোল্ড হওয়া আল আমিন। ১০ বলে ১২ রান করে আল আমিনের বলে ফেরেন ওয়াহাব রিয়াজ।
বরিশালের হয়ে আল আমিন তিনটি, আমরিত ও মোহাম্মদ সামি দুটি করে উইকেট নেন। একটি করে উইকেট দখল করেন তাইজুল ইসলাম এবং সেকুজে প্রসন্ন।
১০৫ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ১৯ রানের মাথায় বিদায় নেন গত ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান এভিন লুইস (১৫)। বিপিএলের তৃতীয় আসরের প্রথম সেঞ্চুরিয়ানকে এলবির ফাঁদে ফেলেন পাকিস্তানি পেসার ওয়াহাব রিয়াজ।
৩.৩ ওভার খেলা গড়ানোর পর ম্যাচে বৃষ্টি হানা দেয়। সে সময় বরিশালের সংগ্রহ ছিলো ১৯ রান। বৃষ্টিতে সময় নষ্ট হওয়ার ফলে, বরিশালের সামনে নতুন টার্গেট দাঁড়ায় ১৩ ওভারে ৭৫ রান।
ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে বরিশালের ওপেনার রনি তালুকদারকে বিদায় করেন আরাফাত সানি। ব্যক্তিগত ২৩ রান করে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে মোহাম্মদ নবীর তালুবন্দি হওয়ার আগে রনি ১৯ বলে তিনটি বাউন্ডারির সাথে একটি ওভার বাউন্ডারি হাঁকান। আউট হওয়ার আগের বলটিতেই রনি ডিপ-মিড উইকেট দিয়ে ছক্কাটি মারেন।
অষ্টম ওভারের প্রথম বলে সাকিবের ঘূর্ণিতে সাজঘরের পথ ধরেন মেহেদি মারুফ (৩)। মোহাম্মদ মিথুনের স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন মারুফ। সে ওভারটিতে কোনো রান না দিয়েই উইকেটটি তুলে নেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব। নিজের প্রথম দুই ওভারে মাত্র ৩ রান খরচ করে একটি উইকেট লাভ করেন তিনি।
বরিশালের দলপতি মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ দলকে জয়ের বন্দরে নিতে স্বাভাবিক ব্যাটিং করতে থাকেন। তাকে সঙ্গ দেন নাদিফ চৌধুরি। এ দু’জন মিলে স্কোবোর্ডে আরও ৩০ রান যোগ করেন। অপরাজিত থাকা রিয়াদ ১৮ বল মোকাবেলা করে ২৩ রান করেন। আর জয় থেকে মাত্র ৩ রান দূরে থাকতে বিদায় নেন ১৬ রান করা নাদিফ চৌধুরি।
রংপুরের হয়ে একটি করে উইকেট নেন সাকিব, আর ওয়াহাব রিয়াজ। দুটি উইকেট পান আরাফাত সানি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, ০৩ ডিসেম্বর ২০১৫
এমআর
** বরিশালের টার্গেট ১০৫ রান