নিজেদের পরবর্তী ম্যাচে যদি বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পায়। আর একই গ্রুপে থাকা স্বাগতিক ইংল্যান্ড অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পায়, তবে শেষ চারে যাওয়ার বড় সুযোগ থাকছে মাশরাফি-তামিমদের সামনে।
এই ভেন্যুতেই ৩০৫ রান করেও স্বাগতিক ইংল্যান্ডের কাছে নিজেদের প্রথম ম্যাচে হার মানে বাংলাদেশ। আর বার্মিংহামে বৃষ্টির কারণে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে। দু’দল পেয়েছে ১ পয়েন্ট করে।
এদিন অস্ট্রেলিয়াকে ১৮৩ রানের টার্গেট দেয় বাংলাদেশ। তবে টাইগারদের ফিল্ডিংয়ে ১৬তম ওভারে আবারও বৃষ্টি হানা দেয়। এর আগে ইনিংসের বিরতিতে একবার বৃষ্টি হয়েছিল।
বৃষ্টি বাধার পর একটা সময় অজিদের বৃষ্টি আইনে অন্তত ২০ ওভার খেলার টার্গেট দাঁড়ায়। যদিও জয়ের রান তুলে ফেলেছিল দলটি। ফলে বাকি চার ওভার ওয়ার্নার-স্মিথরা কোনো রান না করে শুধু উইকেটে দাঁড়িয়ে থাকলেই হতো। কিন্তু নিষ্ঠুর বৃষ্টি আর তা হতে দিলো না। শেষ পর্যন্ত পরিত্যক্তই হলো ম্যাচ। আর একরাশ হতাশা জমলো ক্যাঙ্গারুদের কপালে।
বাংলাদেশের ফিল্ডিংয়ে দলীয় অষ্টম ওভারে নিজের প্রথম ওভার করতে আসেন রুবেল হোসেন। আর প্রথম ওভারেই উইকেট তুলে নেন তিনি। অজি ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চকে এলবির ফাঁদে ফেলে বিদায় করেন এ ডানহাতি। ফিঞ্চের ব্যাট থেকে আসে ১৯ রান।
এর আগে গত ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা তামিম ইকবাল এদিন সেঞ্চুরি থেকে মাত্র পাঁচ রান দূরে থাকতে (৯৫) আউট হন। কিন্তু বাংলাদেশ ৪৪.৩ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৮২ রান করতে সমর্থ হয়।
বাংলাদেশের হয়ে তামিমের পর সাকিব ও মিরাজ ছাড়া দলের অন্য কেউ দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি। অজি বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ চারটি উইকেট নেন মিচেল স্টার্ক। স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা নেন দুটি উইকেট।
টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা। বাংলাদেশের সেরা ওপেনার তামিম ইকবালের সঙ্গে ওপেন করতে নামেন সৌম্য সরকার। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে দলীয় ২২ রানের মাথায় বিদায় নেন সৌম্য। হ্যাজেলউডের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৩ রান করা সৌম্য। ইনিংসের ১১তম ওভারে বিদায় নেন ইমরুল কায়েস। প্যাট কামিন্সের বলে ফিঞ্চের হাতে ধরা পড়ার আগে এই বাঁমহাতি করেন ৬ রান।
১৭তম ওভারে দলীয় ৫৩ রানের মাথায় বিদায় নেন মুশফিক। ২০ বলে ৯ রান করে হেনরিকসের বলে এলবির ফাঁদে পড়েন মুশফিক। এরপর জুটি গড়েন তামিম-সাকিব। এই জুটি থেকে আসে আরও ৬৯ রান। দলীয় ১২২ রানের মাথায় চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে বিদায় নেন সাকিব। ব্যক্তিগত ২৯ রান করে ট্রেভিস হেডের বলে এলবির ফাঁদে পড়েন সাকিব।
এরপর তামিম-সাব্বির জুটি বেশিদূর এগুতে পারেনি। ইনিংসের ৩৫তম ওভারে অ্যাডাম জাম্পার বলে স্মিথের হাতে ধরা পড়ার আগে সাব্বির করেন ৮ রান। দলীয় ১৪১ রানের মাথায় পঞ্চম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে বিদায় নেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। জাম্পার বলে বোল্ড হওয়ার আগে করেন ৮ রান।
এদিন তামিম নিজের ক্যারিয়ারের ১০ম সেঞ্চুরি থেকে মাত্র পাঁচ রান দূরে থাকতে (৯৫) আউট হন। দলের অন্য সবাই আসা-যাওয়ার মিছিলে ব্যস্ত থাকলেও ব্যাটিংয়ে অটল ছিলেন বাঁহাতি এ ওপেনার। তবে এই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেই ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি থেকে বঞ্চিত হলেন তিনি। এর আগে চলতি আসরের উদ্বোধনী ম্যাচের ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১২৮ রান করেছিলেন।
৪৩তম ওভারে মিচেল স্টার্কের করা প্রথম বলে আউট হওয়ার আগে ১১৪ বলে ৯৫ রান করেন তামিম। তবে একই ওভারে তৃতীয় ও চতুর্থ বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন মাশরাফি বিন মর্তুজা ও রুবেল হোসেন। আর স্টার্কের পরের ওভারেই মেহেদি হাসান ১৪ রান বোল্ড হন।
সোমবার (৫ জুন) লন্ডনের কেনিংটন ওভালে দিবারাত্রির হাইভোল্টেজ ম্যাচটি শুরু হয় বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। ‘এ’ গ্রুপ থেকে সেমির দৌড়ে দু’দলের জন্যই এটি মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ ছিলো।
বাংলাদেশ সময়: ০২৪০ ঘণ্টা, ০৫ জুন ২০১৭
এমএমএস