২০১১ সাল থেকে কেনিয়াতে মেয়েদের যোনিচ্ছেদ নিষিদ্ধ বটে। তবে মাসাই আদিবাসী গোত্রে এই চর্চা এখনো বাদ হয়ে যায়নি।
এ এক ক্রিকেট যোদ্ধাবাহিনীর গল্প।
এই যোদ্ধাবাহিনী রক্তলাল উজ্বল রংয়ের কাপড় পরে এবং তাদের প্রথাগত অলঙ্কার পরে বোলিং-ব্যাটিং করেন। তারা মাসাইদের স্কুলে স্কুলে স্কুলে ঘুরে ক্রিকেট শেখান। অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং লন্ডনেও গেছেন ক্রিকেট সফরে। কিন্তু তাদের মনের গভীরে কেবল ক্রিকেটই নয়। ছিলো আরেক বড় কর্তব্য পরায়ণতা। তা হচ্ছে মেয়েদের যোনিচ্ছেদের মতো নৃশংস প্রথার অবসান। এ লক্ষ্যে সচেতনতা তৈরিতে তাদের রয়েছে একটি তথ্যচিত্র।
মামাইয়ের ভাইয়েরাও এই মাসাই ক্রিকেট যোদ্ধা টিমের সদস্য। ২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার এক বন্য প্রাণি গবেষক গিয়েছিলেন কেনিয়ায়। তিনিই তাদের ক্রিকেট খেলা শেখান। নারী ওই গবেষকের দেখানো ক্রিকেট তাদের কাছে ছিলো নতুন কিছু। প্রথম দিকে তারা যখন বল ছুঁড়তো মনে হতো বল্লম ছুঁড়ছেন। আর যখন ব্যাট চালাতেন মনে হতো ঢাল হাতে লড়ছেন।
তবে অধিকার আদায়ে ক্রিকেটকে ব্যবহার করাটা তারা নিজেরাই শিখে নেন। ড্যানিয়েল ও নান্সি মামাইয়ের বাবা ৬৩ বছর বয়সী ল্যান্ডেল সেকো মামাই নিজের গোত্রের প্রথাগুলো কঠোরভাবেই মেনে চলতেন। তার কাছে মেয়েদের যোনিচ্ছেদ ছিলো অবশ্য পালনীয়। তার প্রথম পাঁচ মেয়েরই যোনিচ্ছেদ করা হয়েছে। কিন্তু নিজের ছেলেদের এবং মাসাই ক্রিকেট যোদ্ধাদের সচেতনতা কার্যক্রম তাকে সর্বকনিষ্ঠ কণ্যার যোনিচ্ছেদ থেকে বিরত রাখে।
ন্যান্সির এখন বিশ বছর। পোলেই কমিউনিটি সেন্টারের লাইব্রেরি এবং ক্রিকেট হাউজে তার সময় কাটে। শিক্ষিকা বা সেবিকা হওয়ার স্বপ্ন তার। এরই মধ্যে শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে নেয়ার জন্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি কোর্সে ভর্তিও হয়েছেন।
ধীরে ধীরে মামাই পরিবারগুলো তাদের মেয়েদের যৌনাঙ্গচ্ছেদ না করার বিষয়ে উৎসাহিত হচ্ছে। ক্রিকেট যোদ্ধাদের বার্তা তারা গ্রহণ করেছে। মাসাই ক্রিকেট যোদ্ধারা একটি সাধারণ প্রত্যাশাকে সামনে রেখে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, একই সঙ্গে তারা একটি পরিবারের মতো।
মামাই ক্রিকেট টিম মনে করে, 'আজকের দিনে একটি যোদ্ধা বাহিনীর কি কাজ? অবশ্যই আমাদের উচিত আমাদের মেয়েদের, বোনদের এবং মায়েদের নিরাপত্তা দেয়া। '
মাসাই ক্রিকেট যোদ্ধারা আশা করে এই প্রজন্ম নৃশংস অঙ্গচ্ছেদ প্রথার বিলুপ্ত করতে পারবে।
সম্প্রতি খেলাধুলা বিষয়ক গণমাধ্যম ইএসপিএন এর জন্যে ছবিগুলো তুলেছেন জর্জিনা গুডউইন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৭
এমএন/এমএমকে