ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি দলে কার্যকর অফ স্পিনার হিসেবেও আবার দু’জনেরই রয়েছে যশ-খ্যাতি।
কার্ডিফে কিউইদের বিরুদ্ধে মাহমুদুল্লাহ বাউন্ডারি হাঁকিয়ে যখন প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি’র সেমিফাইনালে টাইগারদের পৌছার সম্ভাবনা জাগিয়ে তুললেন, তখনও পাশে থেকে তাকে সাপোর্ট দিচ্ছিলেন বিস্ময়কর আরেক অলরাউন্ডার সৈকত।
ব্যাটিংয়ে মাহমুদুল্লাহ’র অবিশ্বাস্য ইনিংস, অত:পর যাদুকরি সেঞ্চুরি আর মোসাদ্দেকের ম্যাজিক স্পেল ময়মনসিংহ নগরীর বাসিন্দাদের উচ্ছ্বাসের মাত্রাকে বাড়িয়ে দিয়েছে যেন আরো কয়েক গুণ।
একই সঙ্গে নিজেদের জাত চিনিয়ে নিউজিল্যান্ডকে উড়িয়ে ক্রিজে দৌড়ে বুকও মিলিয়েছেন সিনিয়র-জুনিয়র এ দুই টাইগার।
সাকিবের মতোই তাদের হাত ধরেই রচিত হয়েছে নতুন ইতিহাস। ময়মনসিংহের দুই তরুণ ক্রিকেটারের ঐতিহাসিক আনন্দের এ ক্ষণটি স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে টাইগারদের ক্রিকেট ইতিহাসে।
দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এক সঙ্গে একই জেলার দু’সেরা ক্রিকেটারের এমন জ্বলে উঠা হয়ে থাকবে অনন্য দৃষ্টান্ত।
এইতো সেদিনের কথা। ওয়ানডেতে অভিষেক হবার দিন ১১৯তম ক্রিকেটার হিসেবে নিজ জেলার বড় ভাই মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের হাত থেকেই ক্যাপ পরেছিলেন তরুণ অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক। হয়তো সেদিন মাহমুদুল্লাহ তাকে মন থেকে আশীর্বাদ করেছিলেন।
কিংবা বলেছিলেন, এ তরুণও একদিন ঔজ্জ্বল্য ছড়াবে। তাকে নিয়েও বড় স্বপ্নই দেখবে দেশের কোটি কোটি ক্রিকেট ভক্ত।
বিশ্বকাপে পরপর দু’সেঞ্চুরি করে নিজেকে অন্যভাবে উপস্থাপন করেছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তাকে নিয়ে যখন আবারো সমালোচনার বিষবাষ্প ছড়িয়ে পড়ছে ঠিক তখনই আবারো হেসে উঠলো তার ব্যাট।
আবারো স্থাপন করলেন এক অক্ষয় কীর্তি। মহাকাব্যিক ইনিংস উপহার দিয়ে হয়ে গেলেন ইতিহাসের গর্বিত এক অংশীদার।
এই যে, ক্রিকেটের দ্বিতীয় সেরা অন্যতম এ আসরে বাংলাদেশ সেমিফাইনালে পৌছেছে তাতে তার কৃতিত্বও কম নয়। সাকিবের সঙ্গে তার ২২৪ রানের দুর্দান্ত পার্টনারশিপের গল্পও এখন সবার মুখে মুখে।
ওয়ানডেতে অতীতে এমন পার্টনারশিপ কেউ দেখেননি বলেও মন্তব্য করে বসেছেন বিশ্বের নামিদামী অনেক ক্রিকেটারই। ধ্বংসত্তূপ থেকে দলকে টেনে তোলায় ফিনিক্স পাখির সঙ্গেও তুলনা চলছে মাহমুদুল্লাহ’র।
মাহমুদুল্লাহ’র দিনে শুরুতেই বোলিংয়ে বিস্ময় জাগিয়েছেন অফ স্পিনার মোসাদ্দেক। নিজের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেছেন এ দুরন্ত ক্রিকেটার।
এর আগে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩০ রানে ২ উইকেট নিলেও এদিন ওয়ানডেতে নিজের সেরা বোলিং ফিগার গড়েছেন সৈকত।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচটিতে ১৩ রান খরচায় নিজের ঝুলিতে পুরেছেন ৩ উইকেট। মোসাদ্দেকের এমন কীর্তিতে উচ্ছ্বাস আনন্দের আতিশয্য তৈরি হয়েছে মমতাময়ী মা হোসনে আরা বেগমের (৩৫) মাঝেও।
ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করে শনিবার (১১ জুন) পরিবারের সঙ্গেও কথা বলেছেন পাদপ্রদীপের আলোয় থাকা এ স্পিনিং অলরাউন্ডার।
নিজের নগরীর সন্তান মাহমুদুল্লাহ-মোসাদ্দেকের অসাধারণ কীর্তিগাঁথায় খুশি ময়মনসিংহের বাসিন্দারাও। শুভেচ্ছা বার্তা নিয়ে তাদের বাসা-বাড়িতে ভিড় করছেন ভক্ত-অনুরক্তরা।
তাদের অভিনন্দন জানিয়ে ময়মনসিংহ মহানগর যুবলীগের আহবায়ক ও ক্রীড়া সংগঠক মোহাম্মদ শাহীনুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, রিয়াদ-মোসাদ্দেককে ক্রিকেট বিশ্ব মনে রাখবে অনেকদিন। জয়ের নায়ক হিসেবে তাদেরই মানায়।
বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৭
এমএএএম/জেডএম