২০১১ সালের ২৪ জুন মুন্সীগঞ্জের মেয়ে ফারজানা আক্তারের সঙ্গে পারিবারিকভাবেই বিয়ে হয় নারায়ণগঞ্জের ছেলে মোহাম্মদ শহীদের। এই দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে।
নারায়ণগঞ্জ শহরের তল্লা এলাকার বাসিন্দা শহীদের স্ত্রী ফারজানার বাড়ি মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার দালালপাড়া গ্রামে। অধিকার ফিরে পেতে মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাসের কাছেও ছুটে গিয়েছিলেন ফারজানা। আওয়ামী লীগ নেতা বিষয়টি আমলে নিয়ে ফারজানাকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কাছে অভিযোগ জানাতে পরামর্শ দেন।
২০১৫ সালের এপ্রিলে খুলনায় পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয়ে জাতীয় দলে জায়গা পাওয়ার পরই শহীদ পেতে থাকেন যশ-খ্যাতি। এরপরই যেন পাল্টে যেতে থাকেন তিনি। স্ত্রী-সন্তানের প্রতি আগ্রহ কমে যায়। অন্য নারীদের প্রতি তার আগ্রহ বেড়ে যায় বলেও জানান ফারজানা। তিনি আরও জানান, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায়ও তাকে নির্যাতন করেছেন শহীদ। দ্বিতীয় সন্তান চাননি বলে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর পেটে লাথি মারেন। লাথি মেরে বিছানা থেকেও ফেলে দেন। ছোট সন্তান আরোহিকে নিজের মেয়ে বলেও মেনে নিচ্ছেন না শহীদ।
শহীদের নির্যাতনের বিষয়ে জানা যায়, বিয়ের পর থেকে নানাভাবে স্ত্রীকে নির্যাতন করতেন শহীদ। গত বছর তাদের একটি কন্যা সন্তান হয়। এরপর থেকে ওই সন্তানকে অস্বীকার করে নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেন শহীদ। সর্বশেষ স্ত্রীকে মারধরের এক পর্যায়ে নারায়ণগঞ্জে বাড়ির ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিতে চেয়েছিলেন বাংলাদেশের এই পেসার। স্ত্রী-সন্তানদের বাড়ি থেকে বের করে দিলে এরপর থেকে ফারজানা বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন।
ডানহাতি মিডিয়াম ফাস্ট বোলার হিসেবে পরিচিত শহীদ বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে পাঁচটি টেস্ট ও একটি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। টেস্টে পাঁচটি ও টি-টোয়েন্টিতে একটি উইকেট পান তিনি। সর্বশেষ গত নভেম্বরে বিপিএলে ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে খেলার সময় ইনজুরিতে পড়ায় এরপর আর তার মাঠে ফেরা হয়নি।
শহীদের বিরুদ্ধে গত তিন বছর ধরে অত্যাচার-নির্যাতন করার অভিযোগ করলেও জাতীয় দলের বাইরে থাকা এই পেসার পরে সাংসারিক সব ঝামেলা মিটিয়ে ফেলার আশ্বাস দিয়েও কথা রাখেননি। বাড়ির মুরুব্বিরা বিষয়টি পারিবারিকভাবে মীমাংসা করারও চেষ্টা করেছেন। তার অত্যাচারে জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠায় অবশেষে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থার দ্বারস্থ হন ফারজানা।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৩ ঘণ্টা, ০৯ জুলাই ২০১৭
এমআরপি