চলমান মহিলা বিশ্বকাপের ২৩তম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্যাট হাতে মিতালি খেলেন ৬৯ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। তার ১১৪ বলের ইনিংসে ছিল চারটি চার আর একটি ছক্কার মার।
অথচ, বিশ্বসেরা এই ব্যাটারের হয়তো ক্রিকেটার হওয়াই হতো না। মিতালির বাবা দোরাই রাজ জানান, ‘আমি ছিলাম ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্সের অফিসার। পরে অন্ধ্র ব্যাংকে চাকরি নেই। তখন আমার ছেলে মিঠুন রাজকে বন্ধু জয়তী প্রসাদের অধীনে থাকা সেন্ট জনস কোচিং ক্যাম্পে ভর্তি করিয়ে দেই। আর মিতালি ভারতনাট্যম শিল্পী হওয়ার সাধনায় নাচ শিখতে যেত। তখন তার বয়স মাত্র ১০ বছর। ’
মিতালির বাবা আরও জানান, ‘মিতু (ডাকনাম) খুব সকালে উঠতে পেত না। তার অভ্যাস বদলের জন্য আমি তাকে ভাইয়ের (মিঠুন) সাথে ক্রিকেটের কোচিংয়ে খেলা দেখতে যাওয়ার পরামর্শ দেই। সে ভাইয়ের সাথেই কোচিংয়ে খেলা দেখতে যেত। একদিন আমার বন্ধু জয়তী (কোচ) জানালো, মেয়ের খুব ইচ্ছে ক্রিকেট শেখার। সে আরও জানালো, মিতু ক্রিকেট খেললে একদিন সে বিশ্বসেরা ব্যাটার হতে পারবে। সেই থেকেই মিতুর নাচের অধ্যায় শেষ, ক্রিকেটের হাতেখড়ি শুরু। ’মিতালির ক্রিকেটার হয়ে ওঠার পেছনে অসাধারণ ত্যাগ আর কঠোর পরিশ্রম রয়েছে বলে জানান তার বাবা, ‘সেন্ট জোনসে ক্রিকেট সেভাবে শুরু করার আগেই সমস্যা দাঁড়ালো অন্য জায়গায়। সেখানের সব ক্রিকেটারই ছেলে। জয়তী জানালো, কায়েস স্কুলে সামপাথ কুমারের কাছে নিয়ে যেতে। সাথে এটাও বলে দিল, কোচ হিসেবে সামপাথ খুবই কঠিন, তবে খুব ভালো কোচ। এক বছর পর সামপাথ আমাকে জানালেন, মিতু শুধু ভারতের না, পুরো বিশ্ব ক্রিকেটের অনেক রেকর্ড ভেঙে দেওয়ার সামর্থ্য রাখে। তার কথাই শতভাগ সত্যি হচ্ছে। মিতু ক’দিন আগেই দুটি বিশ্বরেকর্ড করে দেখালো। ’
১৯১ ম্যাচের ১৮০ ইনিংসে ব্যাট করে ৫ হাজার ৯৯২ রান করে নারীদের ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান ছিল ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক এডওয়ার্ডসের দখলে। ৫ হাজার ৯৫৯ রান নিয়ে তার পরেই ছিলেন মিতালি। বর্তমানে টিম ইন্ডিয়ার দলপতির রান ৬ হাজার ২৮। ১৮৩ ম্যাচের ১৬৪ ইনিংসে ব্যাট হাতে নেমেছেন মিতালি। এডওয়ার্ডসের দখলে নারী ক্রিকেটারদের সর্বোচ্চ ৯টি সেঞ্চুরি থাকলেও মিতালির নামের পাশে আছে ৫টি সেঞ্চুরি। এডওয়ার্ডস ৪৬ বার হাফ-সেঞ্চুরি করলেও তিনটি বেশি করেছেন মিতালি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫২ ঘণ্টা, ১৪ জুলাই ২০১৭
এমআরপি