রোববার (২৯ অক্টোবর) সিরিজের শেষ ম্যাচে টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার দলপতি সাকিব আল হাসান। শততম টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমে আগে ব্যাট করা স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে তোলে ২২৪ রান।
স্বাগতিকদের ওপেনিংয়ে নামেন হাশিম আমলা এবং ম্যাঙ্গালিসো মোসেলে। এই ম্যাচে নেই কুইন্টন ডি কক। তৃতীয় ওভারের তৃতীয় বলে সাকিব বোল্ড করেন মোসেলেকে। বিদায়ের আগে ৫ বলে মাত্র ৫ রান করেন তিনি। দলীয় ২৩ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। ইনিংসের পঞ্চম ওভারের শেষ বলে সাকিব বোল্ড করেন প্রোটিয়া দলপতি জেপি ডুমিনিকে। বিদায় নেওয়ার আগে তিনি করেন ৮ বলে ৪ রান। দলীয় ৩৭ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।
ইনিংসের দশম ওভারে প্রথম আক্রমণে আসেন সাইফুদ্দিন। নিজের পঞ্চম বলেই ফিরিয়ে দেন মারকুটে ব্যাটসম্যান ডি ভিলিয়ার্সকে। ইমরুল কায়েসের হাতে ধরা পড়ার আগে তিনি করেন ১৫ বলে একটি করে চার ও ছয়ে ২০ রান। দলীয় ৭৮ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। সেঞ্চুরি থেকে ১৫ রান দূরে থেকে আউট হন আমলা (৮৫)। সাইফুদ্দিনের বলে সৌম্য সরকারের হাতে ধরা পড়ে বিদায়ের আগে ৫১ বলে ১১টি চার আর একটি ছক্কা হাঁকান তিনি। দলীয় ১৫৭ রানের মাথায় চতুর্থ উইকেট হারায় দ. আফ্রিকা।
শূন্য রানে রুবেলের বলে মুশফিকের কাছ থেকে জীবন ফিরে পাওয়া ডেভিড মিলার ৩৬ বলে ৭টি চার আর ৯টি ছক্কায় করেন অপরাজিত ১০১ রান। সাইফুদ্দিনের করা ১৯তম ওভারের প্রথম ৫ বলেই ৫টি ছক্কা হাঁকান মিলার। শেষ বলে সিঙ্গেল নেন তিনি। শেষ ওভারে সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন ৩৫ বলে। যা টি-টোয়েন্টির আন্তর্জাতিক ম্যাচে দ্রুততম। এর আগে ৪৫ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার রিচার্ড লেভি। ৪৬ বলে করেছিলেন ডু প্লেসিস। ফারহান বেহারদিয়েন ৬ রানে অপরাজিত থাকেন।
১০ ওভার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার রান ছিল ৩ উইকেটে ৭৮। পরের ৫ ওভারে উঠেছে ৫৬ রান। আর শেষ ৫ ওভারে ৯০ রান! টানা ৪ ওভারের স্পেলে সাকিব ২২ রান খরচ করে প্রথম দুটি উইকেট তুলে নেন। ৪ ওভারে মিরাজ ৪৬ রান খরচ করেও কোনো উইকেট পাননি। সাইফুদ্দিন ৪ ওভারে ৫৩ রান খরচায় নেন দুটি উইকেট। তাসকিনের ৩ ওভারে খরচ হয় ৪১ রান। রুবেল ৪ ওভারে ৫১ রান দিয়ে উইকেট শূন্য থাকেন। মাহমুদুল্লাহ ১ ওভারে খরচ করেন ১০ রান।
২২৫ রানের টার্গেটে ওপেনিংয়ে নামেন ইমরুল কায়েস এবং সৌম্য সরকার। প্রথম ওভারেই তারা তুলে নেন ১৭ রান। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে ইমরুল কায়েস করেন ৬ রান। দলীয় ২১ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। চতুর্থ ওভারে বোল্ড হয়ে ফেরেন ২ রান করা সাকিব। দলীয় ২৯ রানের দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দলীয় ৩২ রানে ফেরেন ২ রান করা মুশফিক। দলীয় ৩৭ রানের মাথায় ফেরেন ৫ রান করা সাব্বির। ইনিংসের নবম ওভারের শেষ বলে ফেরেন প্রতিরোধ গড়ে লড়তে থাকা সৌম্য সরকার। সাজঘরে ফেরার আগে ২৭ বলে ৪৪ রান করেন তিনি। তার ইনিংসে ছিল ৬টি চার আর একটি ছক্কার মার।
ইনিংসের ১২তম ওভারে বিদায় নেন লিটন দাস। ৭ বলে ৯ রান করেন তিনি। দলীয় ৯৩ রানের মাথায় বাংলাদেশ ষষ্ঠ উইকেট হারায়। স্কোরবোর্ডের আর ৫ রান যোগ হতেই ফেরেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ২০ বলে ২৪ রান করেন তিনি। ১৮তম ওভারে মিরাজ ফেরার আগে করেন ১০ বলে ১৩ রান। একই ওভারে রান আউট হন তাসকিন। ২৬ বলে ২৩ রান করে পরাজয়ের ব্যবধান কিছুটা কমান সাইফুদ্দিন।
এর আগে বাংলাদেশ মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা পায়। মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের কোনোটিতেই জিততে পারেনি টাইগাররা। সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে দুই ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে হেরেছে ২০ রানের ব্যবধানে। বাংলাদেশ একাদশে আগের ম্যাচ থেকে পরিবর্তন একটি। পেসার শফিউল ইসলামের জায়গায় একাদশে আসেন লিটন দাস। দক্ষিণ আফ্রিকা দলে পরিবর্তন আসে দুটি। ডেন প্যাটারসনের বদলে একাদশে আসেন ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস। বিশ্রাম পাওয়া কুইন্টন ডি ককের বদলে সুযোগ পান উইকেটরক্ষক ওপেনার ব্যাটসম্যান ম্যাঙ্গালিসো মোসেলে।
বাংলাদেশ: ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, সাব্বির রহমান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, লিটন দাস এবং রুবেল হোসেন।
দ. আফ্রিকা: হাশিম আমলা, ডি ভিলিয়ার্স, জেপি ডুমিনি, ডেভিড মিলার, ফারহান বেহারদিয়েন, আন্দিল ফেহলুকাওয়ো, অ্যারন ফ্যাঙ্গিসো, রবার্ট ফ্রাইলিঙ্ক, বুরান হেনড্রিকস, ম্যাঙ্গালিসো মইসে এবং ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, ২৯ অক্টোবর ২০১৭
এমআরপি