লাহোরেই ২০০৮ সালে টিম বাসে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার দীর্ঘ ৯ বছর পর পাকিস্তানে খেলতে যায় শ্রীলঙ্কা। নিরাপত্তার কারণে সেখানে যেতে অনিচ্ছার কারণে দলের অনেক তারকা অনুপস্থিত থাকেন।
গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে হোয়াইটওয়াশ এড়াতে পারেনি লঙ্কানরা। ৩-০ তে টি-টোয়েন্টি সিরিজ (প্রথম দুই ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় আবুধাবিতে) নিজেদের করে নিয়েছে সরফরাজ আহমেদের দল। ১৮১ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৩৬ রানে হার মানে সফরকারীরা। ব্যাট হাতে ২৪ বলে ৫১ রানের ইনিংস খেলা শোয়েব মালিক ম্যাচ ও সিরিজ সেরার পুরস্কার জেতেন।
ঘরের মাটিতে দর্শকদের সামনে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে উচ্ছ্বাসই ঝরে মালিকের কণ্ঠে। তার বিশ্বাস, সফলতার সঙ্গে ম্যাচ আয়োজন করে পাকিস্তান বিশ্ব দরবারে একটি ভালো ম্যাসেজ পাঠিয়েছে, ‘যখন আপনি নিজের মাঠে খেলবেন, হোম গ্রাউন্ডে প্রবেশ করবেন, আপনি খুবই সুখ অনুভব করবেন এবং আপনি এই অনুভূতি বর্ণনা করতে পারবেন না। ’
‘আমরা সারা বিশ্বের কাছে একটি ভালো বার্তা পাঠিয়েছি, যে টিম সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছিল তারা এখানে এসেছে এবং এটা ইতিবাচক সংকেত। তারা যে ধরনের আতিথেয়তা পেয়েছে তা অসাধারণ। গোটা জাতিকে অভিনন্দন। ’-যোগ করেন মালিক।
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে পাকিস্তান এখন দুর্দান্ত দলে পরিণত হয়েছে। গত জুনে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জয়ের পর সম্প্রতি শ্রীলঙ্কাকে ৫-০ তে ওয়ানডে সিরিজ হারিয়েছে তারা। লাহোরে এসে টি-টোয়েন্টিতেও ধবলধোলাই হলো লঙ্কানরা।
মালিকের চোখে দলে সঠিক খেলোয়াড়দেরই বাছাই করা হচ্ছে এবং তাদের মেলে ধরার সুযোগও দেওয়া হচ্ছে, ‘ধারাবাহিকতা প্রধান দিক। আপনি সঠিক ট্যালেন্টদের বাছাই করবেন এবং তাদের ধারাবাহিকভাবে সুযোগ দেবেন। নির্বাচক কমিটি ধারাবাহিক সুযোগই দিচ্ছে। একাদশ স্থায়ী নয় কিন্তু স্কোয়াড অনেকটা একই থাকে। এই দলটা একতাবদ্ধ এবং ছেলেরা ভালো করছে, তারা একে অপরের পাশে থাকছে এমনকি সিনিয়রদেরও সাপোর্ট দিচ্ছে। ’
পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরাতে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) প্রচেষ্টায় খুশি হলেও অন্য ক্রীড়াক্ষেত্রেও এর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন মালিক, ‘আমাদের শুধুমাত্র ক্রিকেট নিয়ে চিন্তা করলেই হবে না, অন্য খেলাগুলো এখানে আয়োজিত হচ্ছে না। পিসিবি ধাপে ধাপে এগোচ্ছে এবং সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছে। প্রথমে জিম্বাবুয়ে এসেছে এবং এরপর বড় তারকাদের নাম নিয়ে একটি বিশ্ব একাদশ টিম এসেছে। আশা করছি এটি চলমান থাকবে। ’
ক্যারিয়ারের এই পর্যায়ে পাকিস্তানের জার্সিতে এখনো নিজের সেরাটা দেওয়ার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেছেন ৩৫ বছর বয়সী মালিক। অবসর নেওয়ার আগে অর্জনে খাতায় একটি বিশ্বকাপ ট্রফি যোগ করতে পারবেন বলে আশাবাদী ২৫৭টি ওয়ানডে খেলা এই ব্যাটিং অলরাউন্ডার, ‘এ কারণেই প্রতিদিন সকালে আমি মাঠে হাজির হই। আগামীকাল কী হবে তা আমরা কেউ জানি না কিন্তু লক্ষ্য থাকে জয়ে। একটি ওয়ার্ল্ড কাপ (ওয়ানডেতে) আমার অর্জনের তালিকায় নেই। আকাঙ্ক্ষা প্রদর্শনের শব্দ আমার কাছে নেই কিন্তু আমি আপনাদের অনুরোধ করবো আমার জন্য প্রার্থনা করুন। ’
বাংলাদেশ সময়: ১২২৩ ঘণ্টা, ৩০ অক্টোবর, ২০১৭
এমআরএম