ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

বিপিএলে পাঁচ বিদেশি নিয়ে তরুণদের ক্ষোভ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ৮, ২০১৭
বিপিএলে পাঁচ বিদেশি নিয়ে তরুণদের ক্ষোভ ছবি:বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) পঞ্চম আসর থেকে প্রতিটি দলে সর্বোচ্চ পাঁচজন বিদেশি প্লেয়ার রাখা এবং সর্বনিম্ন তিনজনকে একাদশে খেলানোর বিষয়টি বাধ্যতামূলক করেছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। অথচ আগের আসরগুলো এই সংখ্যাটি ছিল সর্বোচ্চ চারজন এবং দুই বিদেশিকে খেলানো বাধ্যতামুলক।

নিজে দেশের ক্রিকেটের এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি আসরে দেশিদের উপেক্ষা করে পাঁচ বিদেশি খেলোয়াড় দলে রাখা নিয়ে এতদিন সরব ছিলেন সাবেক ক্রিকেটাররা।

এবার সরব হলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের তরুণ অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।

তার মতে বিপিএলে প্রতিটি দলে যখন নুন্যতম তিনজন ও সর্বোচ্চ পাঁচ বিদেশি ক্রিকেটার খেলানো হয় তখন দেশি ক্রিকেটারদের পারফর্ম করা কঠিন হয়ে যায়। যা দিন শেষে দেশের ক্রিকেটের জন্য ক্ষতির কারণ।

মোসাদ্দেক বলেন, ‘৫ জন করে বিদেশি প্লেয়ার খেলায় আমাদের পারফর্ম করারটা অনেক কঠিক হয়ে যাচ্ছে। কেননা পাঁচ জন বিদেশি খেললে ওদের তিন চারজন টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যান থাকে। নরমালি আমরা যে ধরনের ব্যাটিং করি তাতে আমাদের অর্ডার ৬-৭ এ চলে  যায়। এটা আমরা ঘরোয়া ক্রিকেটে আসলে করি না। আমরা যদি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভালো করতে চাই তাহলে এসব লেভেলে অবশ্যই আমাদের উপরে ব্যাটিং করতে হবে এবং সুযোগটা বেশি পেতে হবে। ভবিষ্যতে এটা থাকলে আমাদের জন্য ভালো হবে না। ’

তার মতে প্রতিটি দলে এত সংখ্যক বিদেশি ক্রিকেটারের অনুমোদন না নিয়ে দেশি তরুণদের জায়গা দেয়া যেত। (৮ নভেম্বর) বিকেলে মিরপুর জাতীয় ক্রিকেট একাডেমির মাঠে ঢাকা ডায়নামাইটসের অনুশীলন শেষে অনেকটা ক্ষোভের সুরে তাই তিনি বললেন, ‘এখানে পাঁচজন বিদেশি না রেখে আমাদের অনূর্ধ্ব-১৯ থেকে একজন আসতে পারতো বা আমাদের লোকাল একজন প্লেয়ার বাড়তে পারতো। সেক্ষেত্রে আমাদের সুযোগটা বেশি থাকতো। ’

বিপিএলের এবারের আসরে এই পর্যন্ত ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে সাতটি। এর পাঁচটিতেই বিদেশি প্লেয়াররা ম্যাচ সেরা হয়েছেন। তাই সৈকতের কাছে প্রশ্ন ছিলো দেশি প্লেয়াররা কেন বিদেশিদের মতো পারফর্ম করতে পারছে না? উত্তরে সৈকত বললেন, ‘লোকাল প্লেয়াররা যেসব জায়গায় সুযোগ পাচ্ছে হয়তো একটা নতুন বোলার এসে বোলিং করছে বা পাওয়ার প্লেতে বোলিং করছে যেখানে দু’জন বিদেশি ব্যাটসম্যান ব্যাটিং করছে। তো একজন নতুন বোলার যখন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের সামনে বোলিং করছে তখন স্বাভাবিকভাবেই অনেক বেশি চাপে থাকে। আর ব্যাটসম্যানদের ক্ষেত্রে যারা মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করেছে তারা লোয়ার অর্ডারে ব্যাটিংয়ে নামছে। টপ অর্ডাররা গিয়ে মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করছে যাতে সে অভ্যস্তই না। ’

নিশ্চয়ই সৈকতের এমন ক্ষোভ অমূলক নয়। কেননা বিপিএলকে আকর্ষনীয় করে তুলতে নিজ দেশের উঠতি ক্রিকেটারদের উপেক্ষা করে বিদেশিদের অগ্রাধিকার দেয়া সন্দেহাতীতভাবে এদেশের ক্রিকেটের সামগ্রিক উন্নয়নের পরিপন্থি। ক্রিকেটের হাত ধরে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে আজ যে উচ্চতায় অবস্থান করছে সেখান থেকে আরও উপরে না হোক ওই অবস্থানে থাকতে হলেও এদেশের ক্রিকেটারদের উন্নতির কোন বিকল্প আক্ষরিক অর্থেই নেই। যা বিপিএল দিয়ে অনেকটাই সম্ভব।

কে জানে এখান থেকেই জন্ম নিতে পারে আগামীর মাশরাফি, সাকিব, তামিম ও মুশফিকদের মতো ক্রিকেটাররা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৮ ঘণ্টা, ৮ নভেম্বর, ২০১৭
এইচএল/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।