ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

বন্ধুত্ব মাঠের বাইরে, মিরাজকে বুঝিয়ে দিলেন শান্ত

তাসনীম হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৭
বন্ধুত্ব মাঠের বাইরে, মিরাজকে বুঝিয়ে দিলেন শান্ত ছবি: উজ্জ্বল ধর / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম থেকে: বয়সভিত্তিক দলে দু’জন একসঙ্গে খেলেছেন বহু বছর। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপেও দু’জনের হাতেই ছিল বাংলাদেশের নেতৃত্ব-একজন অধিনায়ক তো আরেকজন সহ-অধিনায়ক। এই পর্যায়ের ক্রিকেটে আবার দু’জন দু’দিক দিয়ে ‘বিশ্বসেরা’। একজন যুব ওয়ানডের ইতিহাসে সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক, আরেকজন সর্বোচ্চ রানের।

এতো এতো নমুনার পর অবশ্যই ইতোমধ্যে জানার কথা কাদের কথা বলা হচ্ছে। তবুও বলা হোক আরেকবার-এই মানিকজোড় অবিসম্ভাবিভাবেই মেহেদি হাসান মিরাজ আর নাজমুল হোসেন শান্ত।

প্রায় সমসাময়িক পর্যায়ে জাতীয় দলে আসা যে দুই তরুণ প্রতিভাকে ভাবা হচ্ছে আগামীর সাকিব-তামিম।

বয়সভিত্তিক দল থেকেই দু’জনের দোস্তি। অনূর্ধ্ব-১৫ পর্যায়ে শুরু হওয়া সেই বন্ধুত্ব পরিপূর্ণতা পায় অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে খেলতে খেলতে। যখনই গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন তখনই রাখঢাক না রেখে একজন আরেকজনের প্রশংসায় থাকেন পঞ্চমুখ। বারবার বলেন তাদের বন্ধুত্বের গভীরতার কথা।

তবে পেশাদারিত্বের খাতিরে দু’জন আজ দু’দলে। মেহেদি হাসান মিরাজ খেলছেন রাজশাহী কিংসের হয়ে, অন্যদিকে নাজমুল শান্ত খুলনা টাইটান্সের জার্সিতে। আর সোমবার (২৭ নভেম্বর) বিপিএলের ৩০তম ম্যাচে বন্ধু মেহেদি হাসান মিরাজের ওপরেই ঝড়টা তুললেন নাজমুল শান্ত। চার-ছক্কায় বন্ধুকে যেন দিশেহারা করে ফেলেন শান্ত।

যেন বুঝিয়ে দিলেন মাঠের বাইরে আমরা ভালো বন্ধু বটে। তবে, মাঠে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বী-একে অপরের ‘শত্রু’।

এদিন ৩১ বলে দুই ছক্কা আর পাঁচ চারে ৪৯ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এর দুটি ছক্কা তিনি মেরেছেন মিরাজের বলে। মিরাজের বলে তিনটি চার মেরেছেন শান্ত। আরও একটু বলা যাক ৪৯ রানের মধ্যে মিরাজের ১০ বল থেকে শান্ত তুলেছেন ৩৪ রান। নিজের তিন ওভার শেষে মিরাজ রানই দেন ৩৮। এবার বোঝা গেল তো শান্তর ব্যাটে বন্ধুর ওপর কতোটা ঝড় গেছে।

টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া রাজশাহী কিংসের হয়ে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারটি করতে আসেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ওই ওভারের সবকটি বল খেলে দুটি চারসহ শান্ত তুলেছেন ১৩ রান। এরপর পঞ্চম ওভারে মিরাজকে আবারও বোলিংয়ে আনেন অধিনায়ক ড্যারেন স্যামি। এই ওভারে মিরাজ দিয়েছেন ১১ রান। ওই ওভারে চার বল খেলে এক চার-ছয়ে শান্ত রান তুলেছেন এবার ১০। সপ্তম ওভারে আবারও বোলিংয়ে আসেন মিরাজ। এই ওভারের চার বল খেলার সুযোগ হয়েছে শান্তর। ওই চার বলে এক ছয় ও দুটি ডাবল আর একটি সিঙ্গেল রানে শান্ত একাই তুলেছেন ১১ রান। ওই ওভারে মিরাজ মোট রান দেন ১৪।

দশম ওভারে নিজের শেষ ওভারটি করেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ওই ওভারে মাত্র পাঁচ রান দিয়েছেন তিনি। শান্তর অনুপস্থিতিই কি এর কারণ? ফ্রাঙ্কলিনের করা এর আগের ওভারের প্রথম বলেই যে এলবিডব্লিও হয়ে ফিরে গেছেন শান্ত।
 
সবমিলিয়ে চার ওভারে ৪২ রান দিয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। এর মধ্যে তিন ওভার পর্যন্ত উইকেটে থাকা শান্ত তার ১৪ বল খেলে তুলেছেন ৩৪ রান। মিরাজের বাকি ১০ বল খেলে অন্য ব্যাটসম্যানরা তুলতে পেরেছেন ৮ রান।

প্রতি ওভারে দশের ওপর রান দেওয়া মিরাজ যদি পরের ম্যাচে একাদশে না থাকে, তাহলে দর্শকরা দোষ দেবেন কাকে? নাজমুল হোসেন শান্তকে তো একটু দোষ দেওয়াই যায়-কি বলেন?

বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৭
টিএইচ/টিসি/এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।