মরিসনের মতে, কিউই কন্ডিশনে পেসাররাই মূল ভূমিকা রাখবে। তবে তাদের ফিটনেস এক্ষেত্রে বড় অন্তরায় হয়ে উঠতে পারে বলে সতর্কও করে দিলেন তিনি।
সম্প্রতি ক্রিকেটভিত্তিক জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যম ক্রিজবাজে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের নিউজিল্যান্ড সফর নিয়ে কথা বলেছেন মরিসন।
নিউজিল্যান্ড সফরের বাংলাদেশ দলে থাকা পেসা বোলারদের নিয়ে মরিসনের মূল্যায়ন, 'আমি মনে করি, বাংলাদেশের যে পেস আক্রমণ আর নিয়ে সেখানে (নিউজিল্যান্ডে) তারা ভালোই করবে। আমি জানি ফিজ (মোস্তাফিজুর রহমান) সাদা বলে খেলা পছন্দ করে। রুবেল হোসেন, দু’বছর আগে হয়তো তাকে নিয়ে প্রশ্ন ছিল (শেষবার যখন বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়েছিল), কিন্তু আমি মনে করি সে এখনো যথেষ্ট ভালো। '
'দুর্দান্ত সব বোলার আছে এই দলে। তাসকিন, রুবেল। এর বাইরেও কয়েকজন আছে। তাসকিন যথেষ্ট গতিসম্পন্ন। রুবেল তো অবশ্যই। তাদের উচ্চতা ভিন্ন। বাঁহাতি পেসারও আছে। তারা বেশ দারুণ। তারা বলে সুইং করাতে সক্ষম। খালেদ আহমেদকে আমার কাছে প্রতিভাবান বলে মনে হয়েছে। সে লম্বা। সে জোরে পিচে আঘাত হানতে পারে। বিপিএলের ষষ্ঠ আসরে আমি যেসব পেসার দেখেছি আমার কাছে ভালোই লেগেছে। '
ইনজুরির কারণে নিউজিল্যান্ড সফর থেকেই বাদ পড়েছেন তাসকিন আহমেদ। এটা হয়তো জানতেন না মরিসন। মনে করিয়ে দিতেই তার উত্তর, 'আপনি যখন তরুণদের খেলায় উন্নতি করার চেষ্টা করবেন, তখন এমনটা (ইনজুরি) কাজটা কঠিন করে দেয়। তাসকিনের ব্যাপারটাও তাই। সে উন্নতির পথেই ছিল। আমি মনে করি, খালেদ আছে। তবে তাদের জন্য এটা (সিরিজ) কঠিন হবে, কেননা সেখানে কোনো টেস্ট জেতার স্বাদ পায়নি। '
'কিউই কন্ডিশন অদ্ভুত। হ্যামিল্টনে সুইং বেশি হয়। যদি আবহাওয়া গরম থাকে তাহলে ওয়েলিংটন হবে সমান্তরাল। এমনকি ৬০০ করেও ম্যাচ হেরে যেতে পারেন। এরপর ক্রাইস্টচার্চ, ঠান্ডা আবহাওয়া থাকলে খুব কঠিন হবে। তবে সেখানেও সমান্তরাল পিচ থাকতে পারে। তবে শুরুর একাদশের জন্য কারা ফিট থাকবে সেটা আগে দেখতে হবে। '
প্রতিকূল আবহাওয়ায় কিউই সফর টাইগারদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে তাতো জানাই আছে। তাহলে জেতার উপায় কি? এটা নিয়েও কথা বলেন মরিসন, 'নিউজিল্যান্ডে সুইং হচ্ছে রাজা। আপনাকে বলে সুইং করাতে জানতে হবে। আপনি তো জানেন, ট্রেন্ট বোল্ট, টিম সাউদি কিংবা ওয়াগনার কতটা কার্যকর। '
'বাংলাদেশেরও ভিন্ন ধরনের বোলার আছে। সবচেয়ে বড় বিষয়- লাইন ও লেন্থ, ধারাবাহিকতা সাফল্যের মূল চাবি এবং ফিট থাকাটা সবচেয়ে বড় ইস্যু। তাসকিনের না থাকাটা তাই বড় আঘাত কারণ সে দলের প্রধান স্ট্রাইকিং বোলার হতে পারতো। '
'নিউজিল্যান্ডে বড় সমস্যা হতে পারে প্রচণ্ড বাতাস। যদি ঠাণ্ডা আবহাওয়া বিরাজ করে, তাহলে উপমহাদেশের প্রায় সব দলের জন্যই চ্যালেঞ্জিং। নিউজিল্যান্ডের আবহাওয়া এমনিতেই পরিবর্তনশীল। ফলে বাতাস নিয়ামকের ভূমিকায় দেখা যেতে পারে। বিশেষ করে ওয়েলিংটনের পিচে বাতাসে বল সুইং করানো খুবই কঠিন। '
বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে স্পিন নির্ভর দল। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশন মোটেও স্পিন উপযোগী নয়। তবে মরিসনের মতে, 'স্পিনও সেখানে কার্যকর প্রতীয়মান হতে পারে। গ্রীষ্মের শেষে বলেই সম্ভাবনা বেশি। পিচ পুরনো হলে হতে পারে, তবে এখানেও সেই আবহাওয়াই মূল বিষয়। ডানেডিন কিংবা ক্রাইস্টচার্চে শীত আর কঠিন আবহাওয়া। তবে আমি দেখেছি তারা (বাংলাদেশের স্পিনাররা) বেশ ভালো এবং নির্ভুল। আমি জানিনা পিচ কতটা সহায়ক হবে। এটাই মূল কথা। স্পিনাররা হয়তো দেরিতে বল হাতে নেবে, কিন্তু পিচগুলো বেশ ভালো। '
১৩ ফেব্রুয়ারি নেপিয়ারে প্রথম ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে দল বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওয়ানডে হবে ১৬ ও ২০ ফেব্রুয়ারি। ম্যাচ দুটি হবে ক্রাইস্টচার্চ ও ডানেডিনে। ওয়ানডের পর টেস্ট সিরিজ শুরু হবে ২৮ ফেব্রুয়ারি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৯
এমএইচএম