এর আগে ভয়াবহ ব্যাটিং ব্যর্থতার পর বোলিংয়েও দুর্দশা উঁকি দিচ্ছিল বাংলাদেশকে। তবে মেহেদী হাসানের হাতে ক্যাচ তুলে দিতে বাধ্য করে স্বাগতিক দলের ওপেনার মায়াঙ্ক আগারওয়ালকে বিদায় করেন আল-আমিন হোসেন।
তবে নিজে উইকেট নিলেও ফিল্ডিংয়ে প্রায় সর্বনাশ করে ফেলেছিলেন আল-আমিন। আবু জায়েদের করা ভারতীয় ইনিংসের ১২তম ওভারে রোহিতের ক্যাচ ফেলে দেন আল-আমিন হোসেন। রোহিতের পুল শটে বল উড়ে গিয়ে ফাইন লেগে থাকা আল-আমিনের হাতে গিয়ে পড়ে। হাতে সময় ছিল আর বলও তার হাতে পৌঁছে গিয়েছিল, কিন্তু সবাইকে হতভম্ব করে দিয়ে এই সহজ ক্যাচও ফেলে দেন তিনি। তবে বড় কোনো মূল্য দেওয়ার আগেই রোহিতকে বিদায় করেন এবাদত।
এদিকে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ফ্লাডলাইটের কৃত্রিম আলো আর গোলাপি বলের চ্যালেঞ্জে নাম লেখানো বাংলাদেশ ৩০.৩ ওভারে গুটিয়ে গেছে। দুই ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের দলপতি মুমিনুল হক। ব্যাটিংয়ে নেমে সফরকারী বাংলাদেশ প্রথম সেশনেই হারায় টপ অর্ডারের ৬ উইকেট। সবকটি উইকেট হারিয়ে সফরকারীরা তুলেছে মাত্র ১০৬ রান।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) ইডেন গার্ডেনসে বাংলাদেশ সময় দুপুর দেড়টায় শুরু হয় সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। ইনিংসের সপ্তম ওভারে ইশান্ত শর্মার বলে এলবির ফাঁদে পড়েন ইমরুল। প্রথম বলে রিভিউ নিয়ে বেঁচে গেলেও তৃতীয় বলে রিভিউ নিয়ে বাঁচতে পারেননি। দলীয় ১৫ রানের মাথায় বিদায় নেন ইমরুল। তার আগে ১৫ বলে করেন মাত্র ৪ রান।
এরপর তিন নম্বরে নামা মুমিনুল হককে (৭ বলে ০) বিদায় করেন উমেশ যাদব। দলীয় ১৭ রানের মাথায় স্লিপে দাঁড়ানো রোহিত শর্মা দুর্দান্ত এক ক্যাচ নেন। এক বল পরে মোহাম্মদ মিঠুনকে বোল্ড করেন উমেশ যাদব। দলীয় ২৬ রানের মাথায় বিদায় নেন মুশফিকুর রহিম। মোহাম্মদ শামির বলে বোল্ড হওয়ার আগে কোনো রান পাননি মুশফিক।
দলীয় ২৬ রানের মাথায় ৪ উইকেট হারানো বাংলাদেশের স্কোর বোর্ডে আরও ১২ রান যোগ হতেই বিদায় নেন ওপেনার সাদমান ইসলাম (২৯)। উমেশ যাদবের তৃতীয় শিকারে ফেরেন ৫২ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ইনিংস সাজানো সাদমান।
পাঁচ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়া দলকে ভরসা দিচ্ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং লিটন দাস। কিন্তু দলীয় ৬০ আর ব্যক্তিগত ৬ রানে ইশান্ত শর্মার বলে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এদিকে মোহাম্মদ শামির বাউন্সে মাথায় বলের আঘাত লাগায় আম্পায়ারের অনুমতি নিয়ে ক্রিজ ছাড়েন লিটন দাস। রিটায়ার্ড হার্ট হওয়ার আগে তিনি করেন ২৪ রান। কনকাশন রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে তার জায়গায় আসেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
তবে, বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মিরাজ। দলীয় ৯৮ রানের মাথায় ইশান্ত শর্মার চতুর্থ শিকারে ফেরেন ১৩ বলে ৮ রান করা মিরাজ। এর আগে এবাদত হোসেনের ব্যাট থেকে আসে ১ রান।
দলীয় ১০৫ রানে নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে বিদায় নেন নাঈম হাসান। ইশান্ত শর্মার পঞ্চম শিকার হয়ে ফেরার আগে তিনি ২৮ বলে করেন ১৯ রান। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে বিদায় নেন আবু জায়েদ রাহি। মোহাম্মদ শামির বলে ফেরার আগে কোনো রান পাননি তিনি।
লিটন দাস ছাড়াও পরে মাথায় আঘাত পাওয়া নাঈম হাসানের কনকাশন রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে মাঠে নেমেছেন তাইজুল ইসলাম। লিটনের বদলি হিসেবে নামা মিরাজ বোলিং করতে পারবেন না। তবে তাইজুল পারবেন। কারণ নাঈম নিজে একজন স্পিনার।
ভারতীয় বোলারদের মধ্যে গোলাপি বলে প্রথম ৫ উইকেট তুলে নেওয়ার কীর্তি গড়েন ইশান্ত শর্মা। এছাড়া উমেশ যাদব তিনটি আর মোহাম্মদ শামি দুটি উইকেট তুলে নেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৯
এমএইচএম