ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

মিরাজের ঘূর্ণিতে বিপর্যস্ত উইন্ডিজ

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২১
মিরাজের ঘূর্ণিতে বিপর্যস্ত উইন্ডিজ ছবি: সোহেল সরওয়ার

একাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকে বিদায় করলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ডানহাতি এই স্পিনারের ঘূর্ণিতে বিপর্যস্ত উইন্ডিজ এখন প্রমাদ গুনতে শুরু করেছে সন্দেহ নেই।

টাইগারদের ছুড়ে দেওয়া ৩৯৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা উইন্ডিজ ৩৯ রানে হারায় প্রথম উইকেট। ক্যারিবীয় ওপেনার জন ক্যাম্পবেলকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন মিরাজ। এরপর আরেক ওপেনার ক্রেইগ ব্র্যাথ ওয়েটকে (২৩) নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান এই অফ-স্পিনার। উইন্ডিজকে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ না দিয়ে এরপর শায়নি মোসলেকেও (১২) লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন তিনি।  

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেট হারিয়ে ৭২ রান সংগ্রহ করেছে উইন্ডিজ। জিততে হলে এখনও করতে হবে ৩২৩ রান।

এর আগে চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম টেস্টের চতুর্থ দিন (শনিবার) মুমিনুল হকের সেঞ্চুরি ও লিটন দাশের ফিফটির ওপর ভর করে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৮ উইকেটে ২২৩ রান সংগ্রহ করার পর ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। সবমিলিয়ে বাংলাদেশের লিড দাঁড়ায় ৩৯৪ রানের।

প্রথম সেশনে ১ উইকেট হারিয়ে ১০২ রান সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশ। দিনের দশম ওভারে রাকিম কর্নওয়ালের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন অভিজ্ঞ মুশফিক (১৮)। এরপর লিটনকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যান মুমিনুল।

বাংলাদেশকে বিশাল লিড এনে দেওয়ার পথে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি তুলে নেন মুমিনুল হক। এই সেঞ্চুরি তাকে নিয়ে গেল অনন্য উচ্চতায়। বাংলাদেশের জার্সিতে সবচেয়ে বেশি টেস্ট সেঞ্চুরির মালিক এখন এই এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।  

বাংলাদেশের জার্সিতে এর আগে সবচেয়ে বেশি টেস্ট সেঞ্চুরির মালিক ছিলেন তামিম ইকবাল (৯টি)। এতদিন টাইগার ওপেনারের সঙ্গে রেকর্ড ভাগাভাগি করছিলেন মুমিনুল। এবার তামিমকেও ছাড়িয়ে গেলেন তিনি। ৭ সেঞ্চুরি নিয়ে তালিকার তিনে আছেন মুশফিকুর রহিম। চারে মোহাম্মদ আশরাফুল (৬) এবং পাঁচে সাকিব আল হাসান (৫)।  

শুধু কি তাই, এই নিয়ে টানা দুই টেস্টে সেঞ্চুরির দেখা পেলেন মুমিনুল। এর আগে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে জিম্বাবুয়ে বিপক্ষে ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত একমাত্র টেস্টে ১৩২ রান করেছিলেন টাইগারদের টেস্ট অধিনায়ক। এবারের সেঞ্চুরিটি তিনি সাজিয়েছেন ৯টি বাউন্ডারিতে। বল খেলেছেন ১৭৩টি। সেঞ্চুরি হাঁকানোর পথে তিনি টেস্ট ক্রিকেটে ৩ হাজার রানের মাইলফলকও স্পর্শ করেছেন।

চট্টগ্রামের মাটিতে এই নিয়ে সাতটি সেঞ্চুরি হলো মুমিনুলের। এক মাঠে এত বেশি সেঞ্চুরি আছে সাবেক অজি অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক, শ্রীলঙ্কার দুই কিংবদন্তি কুমার সাঙ্গাকারা ও মাহেলা জয়াবর্ধনের নাম। তবে এক মাঠে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ড ছুঁতে চট্টগ্রামে আরও ৪টি সেঞ্চুরি করতে হবে মুমিনুলকে। রেকর্ডটি জয়াবর্ধনেরই দখলে। কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে ২৭ ম্যাচে ১১টি সেঞ্চুরি করেছেন সাবেক ডানহাতি ব্যাটসম্যান। তবে ঘরের বাইরে সেঞ্চুরির আগে দেশের মাটিতে মুমিনুলের মতো এত সেঞ্চুরি টেস্ট ইতিহাসে আর কারো নেই।

মুমিনুল ও লিটনের জুটিতে আসে ১৩৩ রান। আর তাতে ভর করে টাইগারদের লিড ৩৫০ ছাড়ায়। ফিফটি ছাড়িয়ে সেঞ্চুরির দিকে ছুটছিলেন লিটনও। কিন্তু ক্যারিবীয় স্পিনার জোমেল ওয়ারিক্যানের বলে সুইপ শটে টানা দুই বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ তুলে দিলে শেষ হয় তার ১১২ বলে ৫ চারে সাজানো ৬৯ রানের ইনিংসটি।  

লিটনের বিদায়ের পর মুমিনুলও বেশীক্ষণ টিকতে পারেননি। অতি আগ্রাসী ব্যাটিং করতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। বিদায়ের আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১১৫ রানের ইনিংস। এরপর তাইজুল ফেরেন ১ রান নিয়ে। প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মেহেদী হাসান মিরাজ বিদায় নেন ৭ রান করে। এরপরই ইনিংস ঘোষণা করেন টাইগার অধিনায়ক মুমিনুল।

ক্যারিবীয়দের মধ্যে বল হাতে ৩ উইকেট নিয়েছেন রাকিম কর্নওয়াল। ২ উইকেট গেছে শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের ঝুলিতে। ওয়ারিক্যান নেন ৩ উইকেট।

এর আগে বাংলাদেশের করা ৪৩০ রানের বিশাল সংগ্রহের জবাবে ২৫৯ রানে শেষ হয় উইন্ডিজের প্রথম ইনিংস।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২১
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।