চট্টগ্রাম: ঈদে বুটিক হাউজগুলোতে আসা নতুন ডিজাইনের পোশাকের প্রতি বিশেষ আকর্ষণ থাকে রুচিশীল ক্রেতাদের। তাদের চাহিদার কথা বিবেচনায় রেখে চট্টগ্রামের বুটিক হাউজগুলো সেজেছে বৈচিত্রময় পোশাকের সমাহারে।
চট্টগ্রামের নারীদের কাছে একটি জনপ্রিয় ও সুপরিচিত ফ্যাশন ব্র্যান্ড ‘স্ট্রাইপ’। খুলশী কনকর্ড টাউন সেন্টারে এবং মিমি সুপার মার্কেট সংলগ্ন ফরচুন মলে স্ট্রাইপের শো-রুম।
স্ট্রাইপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান সাদমান সাইকা শেফা বাংলানিউজকে বলেন, আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ট্রেন্ড এর সঙ্গে মিল রেখে সম্পূর্ণ নিজস্ব কারখানায় অভিজ্ঞ ডিজাইনার এবং সুনিপুণ কর্মক্ষম কারিগরদের দ্বারা অত্যন্ত যত্ন সহকারে তৈরি হয় প্রতিটি পোষাক। স্ট্রাইপ ব্র্যান্ডের পোশাকের মধ্যে রয়েছে- মসলিন শাড়ি, ক্রেপ শাড়ি, ডিজাইনার থ্রি পিস, টু পিস, অফিস ওয়্যার, কুর্তি এবং মেনজ পাঞ্জাবি।
আফমি প্লাজার ফ্যাশন হাউস ‘কৃষ্টি বুটিক’ এর স্বত্বাধিকারী নুজহাত নুয়েরি কৃষ্টি বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। আমাদের কারখানার শ্রমিকরা দিনরাত কাজ করছে। তবে এ বছর সব ধরনের ফেব্রিক্স-বাটন, সুতা থেকে শুরু করে কাঁচামালের দাম বাড়তি। তাই আমাদের উৎপাদন খরচও বেড়ে গেছে। এবারও যেহেতু ঈদ গ্রীষ্মকালে হচ্ছে তাই আমরা সুতি কাপড়ের ওপর জোর দিয়েছি। আমাদের শো-রুমে হাতের কাজের সেলোয়ার কামিজ, শাড়ি, ফতুয়ার ব্যাপক চাহিদা আছে। ক্রেতাদের সন্তুষ্টি আমাদের প্রধান বিবেচ্য বিষয়। দেশিয় পোশাক শিল্পকে আরো এগিয়ে নেয়ার প্রত্যয়ে আমাদের মতো উদ্যোক্তারা কাজ করে যাচ্ছেন।
সাদিয়াস অ্যামব্রয়ডারি কালেকশনস এর কর্ণধার ঈশরাত সাদিয়া চৌধুরী বলেন, ইপিজেডে কারখানায় শাড়ি, লেহেঙ্গা, পাঞ্জাবি, শেরওয়ানি ও শিশুদের কাপড় এসেছে। ঈদের এ সময়টাতে আমাদের ডিজাইনাররা অসাধারণ কিছু ডিজাইন নিয়ে আসেন। এসব কাপড়ের চাহিদাও আছে গ্রাহকদের কাছে। মুরাদপুরের ‘তুলিস্ ক্রিয়েশন’ এর রাহনুমা মরিয়ম তুলি বলেন, আমাদের ডিজাইনারদের তৈরি পোশাক এখন আন্তর্জাতিক মানের পোশাকের সমতুল্য। প্রতিবছর ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে শাড়ি, পাঞ্জাবি, থ্রি-পিস সহ বাহারি পোশাকের কালেকশন থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
শৈল্পিক এর এমডি এইচ এম ইলিয়াস বলেন, এখন ক্রেতারা পশ্চিমা পোশাকের সঙ্গে দেশিয় পোশাকের সমন্বয় দেখতে চায়। তাদের রুচির কথা চিন্তা করে বাজারে পোশাক আনতে হচ্ছে। শৈল্পিকের ১৬টি আউটলেটে (শোরুম) প্রায় ৬০০ লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
বুটিক হাউস ‘অনিন্দ্র’ এর লুৎফা সানজিদা বলেন, আগে দেশিয় পোশাকের চাহিদা ছিল বেশি। ধীরে ধীরে সেই স্থান দখল করে নিয়েছে ভারত-পাকিস্তানের কাপড়। কাপড়ের দাম, শ্রমের মূল্য সবকিছুই বেড়েছে। তারপরও গ্রাহকদের কাছে অতিরিক্ত মুনাফা না করেই ভালো পোশাক তুলে দিতে আমরা সচেষ্ট।
ফ্রেকো’র মালিক নুসরাত জাহান বলেন, আমি ছোটবেলা থেকে পোশাকপ্রেমী। তাই সব পোশাক তৈরি করি ভালবাসা দিয়ে। আমার ডিজাইন করা পোশাকে সবসময় মানসম্মত ফেব্রিকস এবং মেটেরিয়ালস ব্যবহার করছি। যার ফলে গ্রাহকদের আস্থা অর্জন করতে পেরেছি।
এদিকে নগরের টেইলারিং শপগুলোতেও দম ফেলার ফুরসত নেই দর্জিদের। ফিট এলিগেন্স, ফেরদাউস, রেমন্ডে প্রতিদিন আসছে সেলাইয়ের কাজ।
এগার দশক ধরে চট্টগ্রামের টেইলারিং জগতে বিশেষ স্থান দখল করে আছে ‘খাজা টেইলার্স’। চট্টগ্রামের রাজনীতিবিদ, শিল্পপতিসহ অভিজাত শ্রেণির পছন্দ এই টেইলার্স। খাজা টেইলার্সের কর্ণধার সাহেদ সেলিম বলেন, ‘আজকের খাজা টেইলার্সের সুনামের কৃতিত্ব পুরোটাই বাবা কায়সার সেলিমের। তাঁর তৈরি করা সুনাম দিয়েই মাঝপথে ব্যবসার হাল আমরা ধরি। কাজের মান, ভালো ব্যবহার দিয়ে আমরা গ্রাহকের আস্থা ও বিশ্বাস ধরে রেখেছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০২৩
এসএস/টিসি