চট্টগ্রাম: মার্কেটগুলোতে অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১১টি সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। সংশ্লিষ্ট মার্কেটের দায়িত্বপ্রাপ্তরা এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না করলে নেওয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা।
সোমবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রামের মার্কেটগুলোতে অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারকরণ এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে ব্যবসায়ীদের নিয়ে আয়োজিত বিশেষ সভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক অগ্নি দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটছে।
একই ঘটনা চট্টগ্রামের বিভিন্ন মার্কেটে না ঘটে সে বিষয়ে সতর্কতা ও কর্মপরিকল্পনা নেয়ার লক্ষ্য নিয়ে সভায় আলোচনা করা হয়েছে।
এসময় জেলা প্রশাসক বলেন, ‘আমাদেরকে জাতীয় দুর্যোগসহ অগ্নি দুর্ঘটনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য প্লান পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। বঙ্গবাজারের মত পরিস্থিতি যেন সৃষ্টি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ’
সভায় জেলা প্রশাসনের নেয়া ১১ সিদ্ধান্ত হলো:
১. প্রতিটি দোকানের ফায়ার লাইসেন্সসহ ফায়ারের অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র সংরক্ষণ করতে হবে। অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র হালনাগাদ (সচল) থাকতে হবে। দোকানদার ও কর্মচারীদের ফায়ার সার্ভিস থেকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ফায়ার হাইড্রেন্ট ব্যবহার করতে হবে।
২. প্রতিটি মার্কেট সমিতির অগ্নি নির্বাপন সহ জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলায় নিজস্ব প্লান থাকতে হবে।
৩. মার্কেট সমিতি বিভিন্ন পয়েন্টে সিসি ক্যামরা লাগাবেন। সিসি ক্যামরা নজরদারীর জন্য ৩ থেকে ৪ জন কর্মচারী নিয়োগ দিতে হবে। এই কর্মচারীরা পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করবেন।
৪. ডিস ও ইন্টারনেটের লাইন মাটির নিচে নেয়ার জন্য মার্কেট সমিতি ডিস ও ইন্টারনেটের মালিকগণকে অনুরোধ করবেন।
৫. ব্যক্তিমালিকানাধীন মার্কেটসহ, সিটি করপোরেশন, সিডিএ এর নিয়ন্ত্রাণাধীন মার্কেটগুলোতে ব্যবসায়ী সমিতিকে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা হাতে নিতে হবে। যাতে মার্কেটে পানির রিজার্ভ ট্যাংক, গাড়ি পাকিং এবং জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।
৬. প্রতিটি বাজার ব্যবসায়ী সমিতি তাঁদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বাজারে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করবেন। তাঁরা মার্কেট বা বাজার পরিদর্শন করে ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধিকে নিরাপত্তার তথ্য জানাবেন।
৭. ফুটপাত অবমুক্ত করার জন্য সিটি করপোরেশনে চিঠি পাঠানো হবে।
৮. বৈদ্যুতিক লাইনের তার সময় উপযোগী করার জন্য বিদ্যুতায়ন বোর্ডকে চিঠি পাঠানো হবে।
৯. জহুর হর্কাস মার্কেট দুইটি পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে হওয়ায় দুইটি পাহাড় হতে বড় বড় ট্যাংক বসানোর জন্য মার্কেট প্রতিনিধি নিজস্ব ব্যবস্থাপনা এবং জেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।
১০. মহানগর এলাকার পুকুরগুলো বেদখল হয়ে যাচ্ছে। পুকুরগুলো অবৈধ দখলদার মুক্ত করে চারদিকে হাঁটার জন্য ওয়ার্ক ওয়ে নির্মাণ করার বিষয়ে সিএমপি ও মিডিয়ার প্রতিনিধি নিয়ে একটি টীম গঠন করা হবে।
১১. ফায়ারের বিষয়ে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা বা প্রতিটি ব্যবসায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে তাঁদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় চট্টগ্রাম চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক অহিদ সিরাজ চৌধুরী স্বপন, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি চৌধুরী ফরিদ, জহুর হকার্স মার্কেট, রিয়াজুদ্দিন বাজার, চাক্তাই,খাতুনগঞ্জ, টেরিবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ মার্কেটের ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল১০, ২০২৩
বিই/পিডি/টিসি