চট্টগ্রাম: ঈদ কেনাকাটায় ছেলেদের পছন্দের তালিকায় সবার উপরে থাকে বাহারি সব পাঞ্জাবি। ঈদকে সামনে রেখে নগরের দোকানগুলো এবারও সাজিয়েছে পাঞ্জাবির পসরা।
এছাড়াও দেশি পণ্যের বিশাল আয়োজন নিয়ে মানুষের আকর্ষণ কেড়েছে আভিজাত এ শপিং মল। প্রায় সব ফ্লোরেই মিলছে দেশীয় পণ্য।
ক্রেতাদের নজর কাড়তে বিভিন্ন বিদেশি ব্রান্ডের পাঞ্জাবির পসরা সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বিভিন্ন মার্কেটের মতো আফমি প্লাজাও সেজেছে নতুন সাজে। দেশীয় ঐতিহ্য-আধুনিকতা আর সংস্কৃতিকে লালন করে পসরা বসিয়েছে ‘দেশী দশ’। একই ছাদের নিচে দেশীয় দশটি ফ্যাশন হাউসের সম্মিলিত ব্র্যান্ড 'দেশী দশ’।
প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- সাদাকালো, নগরদোলা, বাংলার মেলা, কে-ক্র্যাফট, নিপুণ, বিবিআনা, অঞ্জনস, দেশাল, রঙ এবং সৃষ্টি। ক্রেতাদের রুচি ও পছন্দ অনুযায়ী নতুন নতুন ডিজাইনে সব বয়সী মানুষের জন্য আরামদায়ক পোশাক এনেছে প্রতিষ্ঠানগুলো। ঐতিহ্য ও নিজস্ব স্বকীয়তায় তৈরি এসব নতুন পোশাক নজর কাড়ছে ক্রেতাদের।
আফমি প্লাজার পঞ্চম তলায় এক সঙ্গে দশটি ফ্যাশন হাউস রঙবেরঙের কাপড়ের বিশাল সমাহার। প্রত্যেকটির হাউসের আছে নিজস্ব সংগ্রহ। আধুনিকতার সমন্বয়ে সব দোকানেই দেশীয় পণ্য সাজিয়ে রেখেছেন।
ছোট থেকে বড় সবার জন্য নিত্য-নতুন সব বাহারি পাঞ্জাবি রয়েছে সুপার নুর ফ্যাশন, ঢাকার বিখ্যাত অলিভ ফ্যাশন, সানরিস ত্বনা, পেন্ডোরা লাইফ স্টাইল, টেনডেনসি, আলমিরা, এস এম বোটিকস হাউসে। এছাড়াও নারীদের জন্য দেশি সিঙ্গেল সেলোয়ার কামিজ, থ্রি-পিস, শাড়ি, ফতুয়া, শার্ট, টি-শার্টসহ সব বয়সের মানুষের পোশাক স্থান করে নিয়েছে দেশী দশের শো-রুমগুলোতে।
ষষ্ঠ তলায় রূপসজ্জায় ব্যস্ত সময় পার করছেন পারসোনা বিউটি পার্লারের কর্মীরা। অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে কাজ করে চলেছেন তারা।
চতুর্থ তলায় জুতা, মোবাইল এবং নারী পুরুষের দেশীয় কাপড়ের বিশস্ত প্রতিষ্ঠান বিশ্ব রং। যেখানের পাঞ্জাবি কিনতে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা। দেশীয় উচ্চ মার্গীয় সব পোশাকের সমাহার এখানে। তৃতীয় তলায় পু্রুষদের আধুনিক পোশাক, জুতা পারফিউম আর ডায়মন্ড হেভেন।
দ্বিতীয় তলায়, প্রসিদ্ধ পাঞ্জাবির দোকান লিবাস, সারটাজ, এনডি, আজদা, ডিভাইন, শৈল্পিক, ছোট বাচ্চাদের পোশাকের দোকান মিমি মি, এম এ এস, মেয়েদের জুয়েলারি এবং জুতার দোকান অপেলিয়া, মেয়েদের থ্রিপিসের দোকান ওয়াসিফা জাহিন, বোনানজা, কটন বুটিকস, আরশী, বোরকার দোকান লেডিস ফেয়ার, আপডেট, এমিরা, মেয়েদের ব্যাগের দোকান এঞ্জেল, অনলাইন গিফট শপ।
নিচতলায়, ফুলের দোকান দিয়ে শুরু, রয়েছে ঘড়ির দোকান টাইম জোন, মেয়েদের পোশাকের দোকান প্রাইড, ফ্যাশেনেবেল ড্রেস, মেয়েদের জুয়েলারি দোকান দুল, ছেলেদের পোশাক ক্যাস্টস আই, রয়েল এন্ড সান্এলাইন্স, জেন্টল ম্যান, পাঞ্জাবির আর্টেক্স, গেঞ্জির দোকান লঘু। ছেলে-মেয়ে, বাচ্চা সবার দেশীয় পোশাকের সমাহার স্বদেশ পল্লীতে।
পাঞ্জাবি কিনতে আসা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহির মোহাম্মদ মাহফুজ বাংলানিউজকে বলেন, কেনাকাটায় সময় বাঁচাতে এখানে এসেছি। এক সঙ্গে একই স্থানে দশটি ভিন্ন ভিন্ন শো-রুম আছে, সেই সঙ্গে হরেক রকম ডিজাইনও এসব প্রতিষ্ঠানে এক সঙ্গে দেখা যায়। যাচাই-বাছাই করাও সহজে। এখানে পোশাকগুলো দেশীয় ঐতিহ্য সংস্কৃতিকে লালন তৈরি করা হয়।
ক্রেতারা একটি থেকে বের হয়ে আরেকটিতে যাচ্ছেন। নেড়ে চেড়ে দেখছেন কাপড় আর বিভিন্ন নকশা। পছন্দ আর বাজেট মিলে গেলেই কিনে নিচ্ছেন। দিনে ক্রেতাদের তেমন সমাগম না থাকলেও স্কুল বন্ধ হওয়ায় দিনেও ভালো বেচাকেনার সম্ভাবনা দেখছেন সেখানকার ব্যবসায়ীরা।
তারা বলছেন, রমজানের শুরু থেকেই আমাদের বেচাকেনা জমজমাট। তবে, স্কুল কলেজ খোলা থাকায় দিনের বেলায় তেমন বেচাকেনা ছিল না। রাতে জমজমাট থাকতো। কিন্তু এখন স্কুল কলেজ বন্ধ হওয়ায় দিনের বেলায়ও ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়।
আফমি প্লাজার সহকারী ব্যবস্থাপক স্বপন মুহরি বাংলানিউজকে বলেন, শান্ত সুশৃঙ্খল মনোরম পরিবেশে এখানে ক্রেতারা সবকিছুই কিনতে পারেন। সেজন্য সমস্ত বন্দবস্ত করা হয়েছে। সম্পূর্ণ মার্কেট সিসিটিভি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আমাদের এখানে বিনামূল্যে পার্কিং ব্যবস্থা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২৩
বিই/পিডি/টিসি