চট্টগ্রাম: সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রত্যেক থানায় ২০২০ সালে পরীক্ষামূলকভাবে নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক স্থাপন করা হয়। এই ডেস্ক থেকে সেবা প্রত্যাশীদের পুলিশি সেবা প্রদান করা হয়।
ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে পুলিশের এই সেবা ডেস্ক। এই ডেস্কে আসা ধর্ষণ, নির্যাতন অথবা অপরাধের শিকার নারী ও শিশুরা সহজেই আইনি সেবা পাচ্ছেন।
পুলিশ হেডকোয়ার্টারের তথ্যমতে, মুজিববর্ষের শুরুতে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে সার্ভিস ডেস্ক পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়। ১০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি মুজিববর্ষ উপলক্ষে দেশের প্রতিটি থানা এলাকায় গৃহহীন পরিবারের জন্য একটি গৃহ নির্মাণ এবং নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক স্থাপন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
পুলিশের তথ্যানুযায়ী, থানায় স্থাপিত নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক পরিচালনার জন্য একজন নারী সাব-ইন্সপেক্টরের নেতৃত্বে প্রশিক্ষিত পুলিশ সদস্যদের পদায়ন করা হয়। দেশের প্রচলিত আইনের আলোকে সমস্যা সমাধানের জন্য ডেস্ক পরিচালনাকারী পুলিশ সদস্যদের সরকারি পর্যায়ে ও ইউনিসেফের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। সেবাপ্রার্থীদের সঙ্গে যথাযথ আচরণ, করণীয় সম্পর্কে অবহিত করা হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সার্ভিস ডেস্ক কর্মকর্তা থানায় আগত নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের সমস্যা মনযোগ সহকারে শুনে নির্ধারিত রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করছেন এবং যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিচ্ছেন।
চট্টগ্রাম সিএমএম কোর্টের প্রবেশন অফিসার মনজুর মোরশেদ বাংলানিউজকে বলেন, থানায় নারী ও শিশু ডেস্ক সরকারের একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ। এতে নারী ও শিশুরা তাদের জন্য নিবেদিত একজন প্রশিক্ষিত পুলিশ অফিসারের মাধ্যমে পুলিশি সেবা দ্রুত এবং নির্বিঘ্নে পাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও সিএমএম এই ডেস্কের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত সেবা প্রদান নিশ্চিতের বিষয়ে অত্যন্ত আন্তরিক। পাশাপাশি, সরকারের সমাজসেবা অধিদফতর ও জাতিসংঘের সংস্থা ইউনিসেফ এ নিয়ে কাজ করছে।
থানায় নারী ও শিশু ডেস্কের কার্যক্রম সম্পর্কে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবীর বাংলানিউজকে বলেন, নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক স্থাপন পুলিশের মানবিক উদ্যোগ। আমাদের নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক থেকে প্রতি মাসে গড়ে ৪০ থেকে ৫০ জন সেবা নিচ্ছেন। যারা সেবা নিতে আসেন, তারা ডেস্কের কারণে অনেক খুশি। উদ্ধার হওয়া শিশুদের ডেস্কে রেখে আদালতে পাঠানো হয়।
ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হোছাইন বাংলানিউজকে বলেন, আমার থানা এলাকায় গার্মেন্টস এর সংখ্যা বেশি হওয়ায় নারী ও শিশুরা বেশি সেবা নিয়ে থাকেন। ডিউটি অফিসারের কাছে নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী কেউ এলে সরাসরি নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্কে পাঠানো হয়। সেখানে কর্তব্যরত অফিসার সবকিছু বুঝে নেওয়ার পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকেন। আমাদের সার্ভিস ডেস্কের সেবার বিষয়ে বিভিন্ন গার্মেন্টস কারখানায় সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৩
এমআই/এসি/টিসি