চট্টগ্রাম: 'ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়' এ বাক্যটিকে সঙ্গী করে ছোটবেলা থেকে ছুটে চলা কাজী তাহসিনের। শারীরিক প্রতিবন্দ্বকতা বাধা হতে পারেনি কখনোই।
বছরের প্রথমদিনে নতুন বই নিতে বোনের সঙ্গে হুইল চেয়ারে করে প্রিয় আঙ্গিনায় এসেছে তাহসিন। তার আনন্দ চোখেমুখে। সহপাঠীদের সঙ্গে নতুন বইয়ের বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনায় মেতেছে তাহসিন। হুইল চেয়ারে বসে বিজয়ের চিহ্ন দেখিয়ে জানান দিচ্ছে প্রবল ইচ্ছাশক্তির কথা।
জন্মগতভাবে শারীরিক সমস্যা তাহসিনের। কিন্তু এ সমস্যা তার চলার পথে বাধা হতে পারেনি। সব বাধা ডিঙিয়ে তাহসিন এখন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
১৫ বছরের তাহসিন আজকেই প্রথম সরকারি স্কুলে পা রেখেছে। এর আগে সে একটি বেসরকারি স্কুলে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়েছে। দুই পায়ে সমস্যা থাকায় হুইলচেয়ারই তার নিত্যসঙ্গী। শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও তাহসিনকে ঘরে আটকে রাখতে পারেনি বাবা কাজী মোহাম্মদ ইমরান। তিনি বলছিলেন, কয়েকদিন আগে ভর্তির বিষয়ে স্কুলে গিয়েছিলাম। তখন শিক্ষকরা ওকে বলেছিল, বিদ্যালয়ে বই উৎসব হবে। তুমি আসবে। সেই থেকে তাহসিন আজকের দিনটির কথা মনে করে আছে। তাই যত কষ্টই হোক নিয়ে আসতেই হলো। নতুন বই পাওয়ার পর ওর যে আনন্দ তাতে মনে হচ্ছে কষ্ট করে ওকে এই উৎসবে নিয়ে আসা সার্থক হয়েছে। হুইল চেয়ারে বসা তাহসিন এক হাতে বুকে জড়িয়ে রেখেছে নবম শ্রেণীর নতুন সবকটি বই। অন্য হাতে বিজয়ের চিহ্ন দেখিয়ে জানান দিচ্ছেন তার স্বপ্নের কথা।
সে বলল, নতুন বই পেয়েছি। সেই সঙ্গে নতুন সহপাঠীদের দেখা। খুবই ভাল লাগছে। সামনের স্বপ্ন পূরণের সকালের দোয়া চাই। শুধু তাহসিনই নয়, শ্রবণ প্রতিবন্ধী জুলফিকারও এসেছিল বই নিতে। নগরের বাকলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র সে। নতুন বই পেয়ে সে খুশিতে আত্মহারা।
ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সাহেদা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, আজকের নতুন বই উৎসবে প্রতিবন্ধী হয়েও তাহসিন যেন বঞ্চিত না হয় সেজন্যই ওকে নিয়ে এসেছি। ওর আগ্রহ দেখে আমরা অভিভূত। তার ইচ্ছা শক্তি প্রবল। শারীরিক সমস্যা তার কাছে কোন বাধাই না।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০২৪
বিই/পিডি/টিসি