চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের নৌকার প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী ও তাঁর অনুসারীরা প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার নাম ও ছবি সংবলিত পোস্টার ছাপিয়ে অপপ্রচারের অভিযোগ উঠেছে।
এ অপপ্রচারের মাধ্যমে বিপ্লব বড়ুয়াকে বিতর্কিত করা ও এলাকায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা চালানো হচ্ছে জানিয়ে রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন তাঁর আইনজীবী জিকো বড়ুয়া।
ওই পোস্টারে একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মোতালেব ও তাঁর প্রতীক ঈগলের ছবিও আছে।
অভিযোগে বলা হয়, নির্বাচনী জনসভাতেও আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন ওই পোস্টারটি নিজে প্রদর্শন করেন। সেই পোস্টারটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ছড়িয়ে পড়ায় ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াকে নিয়া জনমনে বিরূপ প্রভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া চট্টগ্রাম-১৫ আসনের ভোটার নন, ‘তিনি ঢাকা মহানগরীর শান্তিনগর এলাকার ভোটার। ফলে নির্বাচন নিয়া চট্টগ্রাম- ১৫ আসনের কোনো প্রার্থীর সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত কোন সংশ্লেষ নেই। সেজন্য এমন কর্মকান্ড সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ এর ১১ বিধির স্পষ্ট লঙ্ঘন। যেটি বিধি ১৭(১) অনুযায়ী ‘‘নির্বাচন পূর্ব অনিয়ম’’ হিসেবে পরিগণিত হয়।
এর আগেও নদভী বিভিন্ন সমাবেশে বিপ্লব বড়ুয়ার নাম উচ্চারণ করে কটূক্তি ও বিষোদগার করেছেন বলে উল্লেখ করা হয় অভিযোগপত্রে। বলা হয়, ‘নদভী নিজেকে ‘‘সহজ মানুষ নন’উল্লেখ করে ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াকে সাতকানিয়া-লোহাগাড়া এলাকায় উঠিতে দেবে না-বলে হুমকীমূলক বক্তব্য প্রচার করেন। এর মাধ্যমেই বোঝা যায় নদভীর সরাসরি অংশগ্রহণেই বিপ্লব বড়ুয়ার ছবি ও মিথ্যা বক্তব্য সংবলিত পোস্টার মুদ্রিত হয়েছে। ’
এই বিষয়ে তদন্ত করে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে অভিযোগে আরও বলা হয়, ‘না হলে সুষ্ঠ নির্বাচন আয়োজন চরম হুমকির মুখে পড়বে। ’
অভিযোগের একটি কপি নিজের ফেসবুকে দিয়েছেন বিপ্লব বড়ুয়া। তিনি সেখানে লেখেন, ‘এতো মিথ্যাচার-ষড়যন্ত্র করে কী লাভ? বানোয়াট-ভিত্তিহীন কোনো কিছুর কী স্থায়িত্ব থাকে? আমার ছবি দিয়ে নিজেরাই পোস্টার ছাপিয়ে অপপ্রচার করতে পারবেন, ষড়যন্ত্র করতে পারবেন। কিন্তু কখনো সফল হতে পারবেন না। অতীত তাই বলে। ভবিষ্যতেও সত্য উদ্ভাসিত হবে। সত্য ও সততার নিজস্ব একটি শক্তি থাকে, তা অপরাজেয়! সত্য সব সময় আত্মশক্তিতে বলিয়ান। মিথ্যা দিয়ে তাকে দমিয়ে রাখা যায় না। আমি নির্বাচন কমিশন ও আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীকে লিখিতভাবে অনুরোধ জানিয়েছি, আমার ছবি ব্যবহার করে কে বা কারা পোস্টার ছাপিয়েছে তা খুঁজে বের করতে। আমি কোনোদিন কোনো প্রকার কপটতা বা প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করিনি। যারা আমাকে চেনেন, তারা বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারেন। ’
স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মোতালেবের প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান জানিয়েছেন, বিপ্লব বড়ুয়ার ছবি ব্যবহার করে কোনো পোস্টার তাঁরা ছাপাননি। তিনি বলেন, ‘নদভী সাহেব এবং তাঁর অনুসারীরা এই কাজ করেছেন। আবার তাঁরাই সেটি ব্যাপকভাবে প্রচার করছেন। এমনকি নদভী সাহেব প্রকাশ্যে সেই পোস্টার দেখিয়ে বক্তব্যও রেখেছেন। ’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলেও আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০২৩
বিই/পিডি/টিসি