ঢাকা, বুধবার, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

২০০ বছরের পুরনো চট্টগ্রাম ফিশারি ঘাট

সোহেল সরওয়ার, সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২৪
২০০ বছরের পুরনো চট্টগ্রাম ফিশারি ঘাট ...

চট্টগ্রাম: লুসাই কন্যা কর্ণফুলী নদীর তীরে গড়ে ওঠা চট্টগ্রামের ফিশারি ঘাটের বয়স ২শ বছরের বেশি। এ ঘাটের তীরে মাছ বোঝাই ট্রলার ভিড়লেই শুরু হয়ে যায় হাঁকডাক।

কথা বলারও ফুরসত থাকে না কারও।

গভীর সমুদ্র থেকে জেলেরা মাছ শিকার করে নিয়ে আসেন ফিশারি ঘাটে।

এরপর ঘাটে হামলে পড়েন মাছ ব্যবসায়ীরা, শুরু হয় বিকিকিনির ধুম। ফিশারি ঘাট থেকে সংগ্রহকৃত মাছ সরবরাহ করা হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। প্রতিদিন ভোররাত থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত মৌসুমভেদে কয়েক কোটি টাকার মাছ বেচাকেনা হয়। চট্টগ্রামের প্রায় ১০ হাজার ফিশিং বোট ও কয়েকশ ট্রলারের আহরিত মাছ বিক্রি হয় এখানে।

অনেক ব্যবসায়ী বিদেশেও রফতানি করেন এসব মাছ। ক্রেতাদের হাতে সমুদ্রের তাজা মাছ তুলে দিতে ফিশারি ঘাট থেকে মাছ সংগ্রহ করেন বন্দরনগরীর খুচরা বিক্রেতারাও। দুয়েক হাত ঘুরে ক্রেতাকে কখনও মাছ কিনতে হয় দ্বিগুণ দামে। চট্টগ্রামের নতুন এই ফিশারি ঘাটে আড়ত রয়েছে প্রায় ২২০টি। অপরদিকে পুরনো ফিশারি ঘাটে রয়েছে ৬৮টি আড়ত। তবে পুরনো বাজারের বেশিরভাগই এখন নতুন বাজারে আড়ত নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।  

চট্টগ্রাম ফিশারি ঘাটে পাওয়া যায়- লাক্ষা, ইলিশ, কই কোরাল, দাতিনা কোরাল, রেড স্নাপার, ভেটকি, সুরমা, কাটল ফিশ, দেশি স্কুইড, রূপচাঁদা, ম্যাকারে, শ্রিম্প, টুনা, স্যামন, ম্যাকরেল, সারডিন, স্কুইড, লবস্টার, টুনা কড, ছুরি, পোপা, ফাইস্যা, লইট্যা, চিংড়ি, চাপা, চাপিলা, রিকসা মাছ ইত্যাদি।

শুধু সাগরের মাছ নয়, এখানে মেলে মিঠা পানির মাছও। বিভিন্ন উপজেলার পুকুর-খামার থেকে সংগ্রহ করা রুই, কাতাল, বোয়াল, কই, মাগুর মাছও নিয়ে আসেন বিক্রেতারা। আসে বার্মিজ মাছও। এরপর চলে বরফ দিয়ে সংরক্ষণের প্রস্তুতি। এজন্য এখানে গড়ে উঠেছে কোল্ড স্টোরেজও।

আড়তদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চারটি জেটি আছে এই ঘাটে। একটি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন পরিচালনা করে, বাকি তিনটি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) লিজ দিয়েছে। ট্রলারগুলোকে প্রতি ট্রিপে ২০০ টাকা এবং বিক্রি হওয়া মাছের ২ শতাংশ দিতে হয় চউককে।  

এই বাজারকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বরফকল ও কোল্ড স্টোরেজ। খাবারের হোটেলও আছে কয়েকটি। প্রায় অর্ধলাখ মানুষের জীবিকা জড়িয়ে আছে বাজারের সঙ্গে।  

ভোরের আলো ফোটার আগেই ক্রেতারা হাজির হন ফিশারি ঘাটে। মাছ বোঝাই ট্রলার ঘাটে ভিড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে কেউ কেউ ট্রলারেও উঠে পড়েন পছন্দের বড় মাছটি নিতে, দাম যতই হোক। এরপর ভোরের নরম আলো মাথায় নিয়ে মাছসমেত হাসিমুখে গন্তব্যে ফিরেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২৪ 
এসএস/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।