চট্টগ্রাম: দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে যোগাযোগমাধ্যম চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। পর্যটন নগর কক্সবাজারের সারা বছরই এই পথে যাওয়া-আসা করেন পর্যটকরা।
এই মহাসড়কের পরিবহন চালক ও শ্রমিকরা জানান, ৮৪টি বিপজ্জনক বাঁকে বেশি ঘটছে দুর্ঘটনা।
এদিকে বিদ্যমান দুই লাইনের মহাসড়কটি প্রশস্ত করে ৬ লাইনে উন্নীতকরণ এবং এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের উদ্যোগ থমকে আছে। সড়ক ও জনপথ দোহাজারী বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ জানান, বঙ্গবন্ধু টানেলের আনোয়ারা অংশ থেকে মইজ্জারটেক পর্যন্ত ৬ লাইনের সড়ক তৈরি শেষে থেকে পটিয়া বাইপাস পর্যন্ত বাঁকগুলো সোজা করা হবে। এরপর পটিয়া থেকে দোহাজারী পর্যন্ত বাঁক সোজা করা হবে। এভাবে ধাপে ধাপে বাঁকগুলো সোজা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কটি ৬ লাইনে উন্নীতকরণের জন্য জাইকা আগ্রহ প্রকাশ করে প্রস্তাব দিয়েছে।
কক্সবাজার জেলার টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ, মহেশখালী, উখিয়া, কুতুবদিয়া ও চকরিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় লবণের চাষ হয়। নৌ ও স্থলপথে এসব লবণ ঢাকা, নোয়াখালী, ঝালকাঠি, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা লবণ পরিশোধনাগারে পাঠানো হয়। সড়কপথে ট্রাকে লবণ নিয়ে আসা হয় চট্টগ্রামের মাঝিরঘাট ও পটিয়ার ইন্দ্রপুল এলাকায় পরিশোধনাগারে। ইন্দ্রপুল লবণশিল্প এলাকায় আনা-নেওয়ার খরচ কম হওয়ায় বেশিরভাগ লবণ পটিয়ায় আনা হয়।
নিয়মানুযায়ী, লবণবাহী ট্রাকে জিইওট্যাক্স (মোটা ত্রিপল) ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু তা না করায় পুরো রাস্তায় লবণের পানি ঝরে পড়ে। এছাড়া পরিবহনের সময় কাঁচা মাটির সড়কে আঠালো আস্তরণ সৃষ্টি হয়। ফলে চলমান গাড়ি ব্রেক কষলেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। আর এতেই ঘটে দুর্ঘটনা।
জানা গেছে, নির্দিষ্ট মৌসুমে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে প্রতিদিন শত শত ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান ভর্তি করে লবণ পরিবহন করা হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে লবণ পরিবহনে ট্রাকে পলিথিন ব্যবহারের কথা বলা হলেও লবণ ব্যবসায়ীরা তা মানছেন না। কেউ পলিথিন ব্যবহার করলেও ইন্দ্রপুল এলাকায় সড়কের ওপর ট্রাক থেকে পরিশোধনাগারে লবণ পরিবহন করার সময় লবণাক্ত পানিতে মহাসড়ক পিচ্ছিল হয়ে যায়। লবণ পানি পড়ে মহাসড়কের কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। খোলা লবণ পরিবহন সরকারিভাবে নিষিদ্ধ হলেও রাত থেকে ভোর পর্যন্ত খোলা ট্রাকে করে লবণ পরিবহনের কারণে এই মহাসড়কে প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটছে। ঘটছে প্রাণহানিও।
অবশ্য হাইওয়ে পুলিশ বলছে, লবণবাহী ট্রাকের ওপরে-নিচে মোটা ত্রিপল ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেউ সেটি অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে অভিযানও অব্যাহত রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০২১
এসি/টিসি