কলকাতা:ভোটের দিন ঘোষণা না হলেও পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের দামামা বেজে গেছে। এখনও সরাসরি ভোটের প্রচার শুরু হয়নি।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার মেয়াদ এখনও প্রায় চার মাস বাকি। কিন্তু ভোটের দিন গোনা শুরু করে দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। ভোটকে সামনে রেখে ইদানীং মিছিল, সভা সমিতির সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।
আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ভোটের মূল ইস্যু হতে চলেছে ‘শিল্পায়ন’, সে কথা এখনই আঁচ করা যাচ্ছে। সমসাময়িক সময়ে যদি লক্ষ্য করা যায় তবে দেখা যাবে শাসক এবং বিরোধী দলগুলি পশ্চিমবঙ্গের শিল্পায়ন নিয়ে প্রচার জোরদার করেছে।
২০১১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের দিকে যদি আমরা তাকাই তবে দেখতে পাব সেখানেও শিল্প একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে নিয়েছিল। সিঙ্গুর এবং নন্দীগ্রাম দুটি জায়গায় জমি অধিগ্রহণ করে শিল্পের বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক উত্তাপ চূড়ান্ত জায়গায় পৌঁছেছিল।
এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলো বামফ্রন্ট সরকারের ৩৪ বছর শাসনের ফলে ‘অ্যান্টি ইনকমবেনসি’-এর বিষয়। অর্থাৎ ৩৪ বছর শাসনের ফলে বাম শাসন সম্পর্কে মানুষের মনে একটা স্বাভাবিক হতাশার জন্ম হয়েছিল।
এই সময়েই আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে উঠে এসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী বিধানসভা নির্বাচনেও মূল ইস্যু হিসেবে সামনে উঠে আসছে শিল্প।
পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান সরকারে আমলে শিল্প হয়নি দাবি তুলে প্রচার শুরু করেছেন বিরোধী বামফ্রন্ট। তারা তৃণমূল কংগ্রেসের আন্দোলনের জন্য সিঙ্গুর থেকে টাটা শিল্প গোষ্ঠীর বিদায়কে সামনে রেখে আক্রমণের পারদ ক্রমশ বাড়াচ্ছে। এমনকি বাম নেতৃত্ব দাবি করছেন বামফ্রন্ট ক্ষমতায় এলে তারা টাটা গোষ্ঠীর ‘ন্যানো’ কারখানা আবার পশ্চিমবঙ্গে খোলার ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নেবেন। এই বিষয়কে সামনে রেখেই অনেক দিন পর সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ‘সিঙ্গুর ‘ থেকেই তার নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন।
অন্যদিকে সরকারকে শিল্পপতিদের সহায়ক বলে দাবি করে সদ্য হয়ে যাওয়া 'বেঙ্গল বিজনেস সামিট'-এ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিল্পপতিদের সমস্ত রকম সুবিধা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। তিনি তার সরকারের বিগত বছরে সাফল্যের খতিয়ান তুলে দাবি করছেন বড় অঙ্কের বিনিয়োগ প্রস্তাব এবং বিনিয়োগ হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে।
শাসক এবং বিরোধী শিবিরেরে প্রচারের অভিমুখ দেখে আন্দাজ করা যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে মূল ইস্যু হতে চলেছে ‘শিল্পায়ন’।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮ , ২০১৬
ভি.এস/আরআই