কলকাতা: কলকাতায় এমন এক পশুপ্রেমীর সন্ধান পাওয়া গেলো, যিনি কিনা অবলীলায় বনের পশুপাখিদের সঙ্গে আলাপ জমাতে পারেন। পাড়ার রাস্তায় কোনো কুকুর অসুস্থ হলে বা কোনো পাখি ঝড়ের ঝাপটায় বাসা থেকে পড়ে গেলে তাদের সুস্থ করে বন্যজীবন ফিরিয়ে দেওয়া এই তরুণ পশুপ্রেমীর কাজ।
এক সময়ে কলকাতার ক্রিকেট মহলে আশা জাগানো ক্রিকেটার হিসেবে পরিচিত এই তরুণ চোখে আঘাত পাওয়ার পর খেলা ছেড়ে দেন। পাড়ায় সবাই তাকে রাজু নামে চেনে। কেতাবি নাম অনির্বাণ।
সাধারণত পশু-পাখি ভালোবাসেন এমন মানুষের বাড়িতে অন্তত দুয়েকটি পোষাপ্রাণী থাকে- এই চিন্তা থেকে প্রশ্ন করি, আপনার কয়টি পোষাপ্রাণী আছে- জবাবে অনির্বাণ বাংলানিউজকে জানান, তিনি পশুদের তাদের নিজের পরিবেশেই দেখতে পছন্দ করেন। তাই আলাদা করে তার বাড়িতে কোনো পোষাপ্রাণী নেই। বললেন, এই পৃথিবী যতোটা মানুষের, ততোটাই পশুপাখিদের।
বন্য পশুদের কাছে যেতে ভয় করে কিনা- এই প্রশ্নের উত্তরে অনির্বাণ বলেন, আপনি আপনার প্রতিবেশীকে ভয় পান, নাকি ভরসা করেন? এরা তো এই প্রকৃতিতে আপনার-আমার প্রতিবেশী। ভয় পাবো কেন!
এই বিশ্বাসের কারণেই যেন পশুপাখিরাও অবলীলায় তার সঙ্গে ভাব জমায়। এই পশুপ্রেমীর সঙ্গে যখন দেখা করতে যাই তখন বিকেল। একটা হনুমানকে খাবার ও পথ্য দিচ্ছিলেন তিনি। হনুমানটি পোষা কিনা জানতে চাইলে হাসিমুখে তিনি বলেন, পশুদের জীবনে বশ্যতা বলে কিছু নেই। তারা স্বভাব স্বাধীন।
শুধু কুকুর, হনুমান বা বাঁদর নয়, এলাকার কোনো বাড়িতে সাপ ঢুকলে, সেটাকে না মেরে জঙ্গলে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আন্তরিকভাবে চেষ্টা করেন অনির্বাণ। মোবাইলে ছবি তুলতে গেলে হনুমানটি ফ্লাশের আলোয় কিছুটা চমকে ওঠে। কিন্তু অনির্বাণ হাত তুলে অভয় দেওয়ায়, সে যেন বুঝতে পারে। বিনা বাঁধায় তুলে ফেলি বেশ কয়েকটি ছবি। এরপর ধীরেসুস্থে রাস্তা পার হয়ে গাছের উপরে ফিরে যায় হনুমান।
অনির্বাণ ব্যস্ত হয়ে পড়েন পথের ধারের একটি অসুস্থ কুকুরকে খাবার খাওয়ানোর কাজে। এই ব্যস্ত ব্যবসায়ীর প্রতিদিনের কাজের অংশ পশুপাখিদের সেবা করা।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১৬
ভিএস/আরএম