আগরতলা: ত্রিপুরাসহ উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বসবাসকারী বিভিন্ন উপজাতি গোষ্ঠীর মানুষের খাদ্য তালিকার মধ্যে রয়েছে বুবুক, চাকুই, ভর্তা, বাঙ্গই ইত্যাদি। এর একটি পদ হলো বিভিন্ন ধরনের সবজি সেদ্ধ।
এই ভর্তার তালিকায় রয়েছে বিভিন্ন ধরনের আলু, বেগুন, নানা জাতের কলাসহ আরও অনেক কিছু। প্রায় সকল প্রকার সবজি ও সবজির পাশাপাশি মাংসেরও ভর্তা তৈরি হয়। আর এগুলোকে পরিমাণ মতো সেদ্ধ করে স্বাদ অনুসারে লবণ ও কাঁচা মরিচ মেখে তৈরি হয় সুস্বাদু ভর্তা।
তবে এখন আর ভর্তা উপজাতি অংশের মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। কালের পরিক্রমায় ভর্তার রেসিপি পাহাড়ের গণ্ডি পেরিয়ে ঢুকে পড়েছে রাজধানী আগরতলাসহ ত্রিপুরা রাজ্যের অনেক নামি-দামী হোটেল ও রেস্তোরাঁয়।
ভর্তার জগতে অন্যতম জনপ্রিয় হলো মুরগি ভর্তা যা চিকেন ভর্তা নামে বেশি পরিচিত। আগরতলা শহরের আনাচে-কানাচে পাওয়া যায় মুরগিসহ অন্যান্য মাংসের ভর্তা। বিশেষ করে সন্ধ্যার টিফিনে আটার রুটির সঙ্গে মুরগি ভর্তা ভোজন রসিকরা খুব পছন্দ করেন।
আগরতলা শহরের আইকনিক দালানবাড়ি পূর্বতন রাজপ্রাসাদ উজ্জয়ন্ত প্যালেসের উত্তর-পূর্ব দিকের বনমালীপুর এলাকার ভগবান ঠাকুর চৌমুহনীতে রয়েছে প্রচুর ছোট-বড় ভর্তার দোকান। এলাকাটি এখন ভর্তা চৌমুহনী নামে বেশি পরিচিত। সন্ধ্যায় প্রত্যেকটি ভর্তার দোকানে ভিড় জমে যায়।
জলের সঙ্গে সামান্য সরিষার তেল, পরিমাণ মতো লবণ, কাঁচা মরিচ, আদাসহ মুরগির মাংস সেদ্ধ করা হয়। মাংস সেদ্ধ হয়ে গেলে এর সঙ্গে পেঁয়াজ ও শুকনো মরিচ আগুনে পুড়িয়ে ভালো করে মেখে নেওয়া হয়। সুগন্ধের জন্য ধনেপাতা কুচি ও সুগন্ধি লেবুর খোঁসা কুড়িয়ে দেওয়া হয়।
ত্রিপুরা রাজ্যে ১৯টির বেশি উপজাতি জনগোষ্ঠী রয়েছে। রাজ্যের উপজাতি অংশের মানুষের কাছে অন্য সকল ইতিহাসের মতোই অজানা রয়েছে যে, কোন জাতি বা গোষ্ঠী এই জিভে জল আনা মুরগি ভর্তার আবিষ্কার করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৬
জিপি/এএসআর