কলকাতা: টানা বৃষ্টি ও মেঘলা আবহাওয়ার কারণে কলকাতার কুমারটুলির মৃৎ শিল্পীরা সমস্যায় পড়েছেন। সপ্তাহের হিসেবে দূর্গাপুজার বাকি তিন সপ্তাহ।
তবে কুমারটুলিতে প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় আগে থেকেই। ইতিমধ্যে প্রতিমার কাঠামো নির্মাণ শেষ হয়েছে কুমারটুলির শিল্পীদের। কাঠামোতে পড়েছে মাটির প্রলেপ। কোথাও মাটির শেষ প্রলেপের ওপর পড়েছে রঙের প্রথম প্রলেপ।
গোটা কুমারটুলি জুড়ে চলছে কাঠামোর ওপর মাটির প্রলেপ লাগানোর প্রক্রিয়া। কোথাও শুরু হয়েছে রঙ। কিন্তু এ কাজে বাধ সেধেছে বৃষ্টি। আকাশে রোদের দেখা না থাকায় মাটির প্রলেপ শুকাতে সমস্যা হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে প্রতিমা শিল্পীরা আগুন দিয়ে প্রতিমা শুকানোর কাজ করছেন। এতে সময় লাগছে অনেক বেশি।
কুমারটুলিতে শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুর্গাপূজার আগে কলকাতায় গত কয়েক বছর ধরে গণেশ পূজার চল শুরু হয়েছে। গণেশ পুজা শেষ হওয়ায় দুর্গা প্রতিমা নির্মাণ নিয়ে ব্যস্ততা এখন তুঙ্গে। কিন্তু বৃষ্টির সমস্যায় কাজ ক্রমাগত পিছিয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে খরচ বাড়ছে প্রতিমা নির্মাণের ক্ষেত্রে। আলাদা করে কেরোসিন তেলের মাধ্যমে আগুন জ্বালিয়ে প্রতিমা শুকানোর ফলে বেশ কিছুটা খরচ বাড়ছে। এছাড়াও প্রশাসনের তরফে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রতিমার রঙের ক্ষেত্রে।
প্রতিমার রঙে নদীর জল দূষণের অভিযোগ বহুদিনের। কুমারটুলির শিল্পীদের কাছে সরকার নির্ধারিত মানের রঙের বাইরে কোন ধরনের রঙ ব্যবহার করা যাবে না, বলে নির্দেশ এসেছে প্রশাসনের তরফে। এর ফলেও খরচ কিছুটা বাড়বে প্রতিমা শিল্পীদের।
কুমারটুলির শিল্পী নিবারণ পাল জানিয়েছেন, এক দিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ অন্যদিকে বারোয়ারি পূজা কর্তাদের খরচে লাগাম টানার ফলে সমস্যা বেড়েছে শিল্পীদের। বৃষ্টি বেশি হলে প্রতিমা নির্মাণের খরচ অনেকটাই বাড়ে।
এদিকে আবারও বৃষ্টির কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেই সম্ভাবনা সঠিক হলে সমস্যা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন শিল্পীরা। আর সেই জন্যই মূর্তিতে মাটির শেষ প্রলেপ কিংবা প্রথম তুলির আঁচড় টানার ফাঁকে ফাঁকে হাতের স্মার্টফোনের 'ওয়েদার অ্যাপ'-এ একবার আর আকাশের দিকে একবার চোখ বুলিয়ে নিচ্ছেন তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৬
ভি.এস/জেডএস