এর মূল কারণ হিসেবে রোজাদাররা বলছেন, দীর্ঘ সময় রোজা থাকার পর ফল খেলে সহজে হজম হয়। আর পাচনতন্ত্র ঠিক রাখে এবং শারীরিকভাবে ক্লান্তি কম থাকে।
কলকাতায় সবচেয়ে বড় ফলের বাজার বড়বাজারের মেছুয়া অঞ্চল। প্রায় তিন কিলোমিটার বিস্তৃত এলাকা নিয়ে ফলের সমাহার।
মধ্য কলকাতার চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের বাসিন্দা আজিজুল রহমান। পরিবারের ইফতারের জন্য ব্যাগবন্দী করতে ব্যস্ত রকমারি টাটকা ফল।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, তিনি এবং তার পরিবার ইফতারি করেন খেজুর ও ফল দিয়ে। রাতে খাবারে পছন্দ চার থেকে পাচটি খেজুর। আর ভারী খাবার যা খান সেহরির সময়। শুধু আজিজ ভাই কেনো, এই সময় কলকাতায় টাটকা ফল কেনার হিড়িক দেখলে বোঝা যায় ইফতারে ফলকেই প্রধান খাদ্য হিসেবেই বেছে নিয়েছেন রোজাদাররা।
গ্রীষ্মের শেষে এই সময় কলকাতার বাজারগুলোতে রয়েছে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, জামরুল, তরমুজ, পাকা পেঁপে প্রভৃতি মৌসুমি ফল। আর সঙ্গে আছে বিদেশি নানা ফলের সমাহার।
কলকাতার বড়বাজারের মেছুয়া পাইকারি ফলের আড়ৎ। এই অঞ্চলে কলকাতা এবং তার আশেপাশের জেলাগুলোতে ফল সরবরাহ হয়। ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে ফল পরিবহনের মাধ্যমে এসে জমা হয় মেছুয়ার ফল পট্টিতে। সেখান থেকে ছড়িয়ে যায় শহর এবং গ্রামের বাজারগুলোতে।
মেছুয়া ফলের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিগত বছর রোজার সময় ফলের বাজার বেশ কিছুটা চড়া থাকলেও এই বছর এখনও কলকাতার বাজারে ফলের দাম মোটামুটি সাধারণ ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে।
বাজারের দাম প্রায় অন্যান্য সময়ের মতোই। ইফতার উপলক্ষে চাহিদা বাড়লেও দামের খুব বেশি পরিবর্তন হয় নি। এর কারণ হিসেবে ফল বিক্রেতারা বলছেন এ বছর ফলের জোগান বেশি রয়েছে।
খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, আম প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৬০ রুপি। চেরি ৩শ’ রুপি কেজি। এই সময়ে আপেলের চাহিদা থাকে তুঙ্গে। সিমলার আপেল বিক্রি হচ্ছে ১শ’ ৫০ থেকে ২শ’ রুপি কেজি দরে।
সবুজ আপেল বিক্রি হচ্ছে ২শ’ থেকে ২শ’ ৮০ রুপির মধ্যে। কিউই ফল প্রতিটি ২৫ থেকে ৩০ রুপি। তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ রুপি কেজি দামে। পাকা পেঁপের দাম ২৫ থেকে ৪০ রুপি। পশ্চিমবঙ্গের মালদা, মুর্শিদাবাদ জেলার লিচু ৮০ রুপি প্রতি কেজি। আবার বিহারের মজ্জফরপুরের লিচু ২শ’ রুপি প্রতি (এক্সপোর্ট কোয়ালিটি)।
তবে ফলের এই দামের হেরেফের করে খুচরা বাজারের ওপর ভিত্তি করে। আড়তে পাইকরি (কমপক্ষে পাঁচ কেজি) হারে ফল কিনলে এর দাম ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ কম থাকে।
ফলের দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে থাকায় বাজারে ভিড় ক্রমাগত বাড়ছে বলে জানালেন বিক্রেতারা। আর ব্যাগ ভরে ইফতারের জন্য ফল কিনছেন ক্রেতারাও। সরগরম হয়ে উঠেছে মেছুয়ার ফলপট্টি থেকে কলকাতার অন্যান্য বাজারগুলোও। এই সরগরম ভাব চলবে আরও কিছুদিন আশা করছেন বিক্রেতারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৩ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৭
ভিএস/জিপি