তিনি বলেন, কি আর করা দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাই। ঘ্রাণ নিচ্ছি ইলিশের, কিনছি আড়ইশো রুপি দরের রুই।
গত বছরও রেকর্ড পরিমাণ ইলিশ উঠেছিল পশ্চিমবাংলার মৎসজীবীদের জালে। এবার তাদের মুখ ভার, রূপালী শস্য সেভাবে না পাওয়ায় অল্প পরিমাণ যা উঠছে তাতে কলকাতার বাজারে ইলিশ বেমালুম গায়েব না হলেও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
দাম বাড়ার কারন সম্পর্কে সামুদ্রিক মৎসজীবী শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা সতীনাথ পাত্র বলেন, সুন্দরবন এলাকাতেই ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় আড়াই হাজার ট্রলার ইলিশ ধরতে যায়। এবার ট্রলার প্রতি ইলিশ মিলছে এক থেকে দেড় টা। একই পরিস্থিতি দিঘাসহ পূর্ব মেদিনীপুরে।
গত বছরও এই সময়ে সমস্ত পশ্চিমবাংলায় ৪০ হাজার থেকে ৬০ হাজার কেজি ইলিশ মাছের দেখা মিলেছিলো। এবারে সেখানে দিনে মিলছে বড়জোর ৩০০ থেকে ৪০০ কেজি ইলিশ৷ অথচ পাবার কথা দিনে ৪০ থেকে ৬০ টন ইলিশ। ফলে বাজারের দামও আকাশ ছোঁয়া।
লেক মার্কেট বাজারে ৬শ’ থেকে ৭শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৯শ’ রুপি কেজি প্রতি। আর এক কেজি থেকে ১২শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ কেজি ১৪শ’ রুপি। তার বেশি ওজনের ইলিশ ১৬শ’ থেকে দুই হাজার রুপি কেজি প্রতি দাম হাকাচ্ছে বিক্রেতারা। টালিগঞ্জ, বেহালা, ঠাকুরপুকুর, হাতিবাগান বাজারেও চিত্রটা প্রায় একই রকম।
দিঘা ফিসারম্যান অ্যান্ড ফিস ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের শ্যামসুন্দর দাশ বলেন, চাহিদার তুলনায় যেহেতু ইলিশের দেখা মিলছে সামান্য, তাই দামের কোনও শেষ নেই।
২০০১ থেকে ০২ সালে রাজ্যে ইলিশ ধরা পড়েছিল ৪৪ হাজার টনের বেশি। ২০০৩ সালে সেই ইলিশের পরিমাণ নেমে আসে ১০ হাজার টনে। আবার ২০১৪ সালে ইলিশ ধরা পড়েছিল ৫ হাজার ২৪৭ টন, ২০১৫ সালেই তা বেড়ে দাঁড়ায় ২০ হাজার ৬৫৯ টন। গত বছর ২০১৬ তে তো সমস্ত রেকর্ডই ভেঙে দিয়েছিলো রাজ্যের জালে ওঠা রুপালী শস্যের পরিমাণ।
শ্যামসুন্দর দাশ ও সতীনাথ পাত্রে আশঙ্কা, এ বছর ২০১৪ সালের মতো যেন পরিস্থিতি না হয়। আষাঢ়, শ্রাবণ ও ভাদ্র মাসে ইলিশের সেরা মৌসুম। এর মধ্যে আষাঢ় মাস কেটে গেলো। বাকি দুই মাসে কতোটা ইলিশ ওঠে তার উপরই নির্ভর করছে শহরে ইলিশের দাম নামবে কিনা। তবে এখনও সময় রয়েছে, তাই আমরা আশাবাদী। এখনও যদি মোহনা ও উপকূল এলাকায় ভালো বৃষ্টি হয় এবং পূবালী বাতাস বয়, তবে বেশি পরিমান ইলিশ উঠবে বলে আশা করছি৷
সাধারণ মানুষের একটাই আফসোস বর্ষা চলে যাচ্ছে তবুও বাজারে ইলিশ সস্তা হচ্ছে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৭
বিএস