আগরতলা (ত্রিপুরা): ভারত সরকারের ইস্টার্ন জোন কালচারাল সেন্টারের অর্থায়নে এবং সংস্কার ভারতী ত্রিপুরার উদ্যোগে আগরতলার পার্শ্ববর্তী লঙ্কামুড়া গ্রামে ত্রিপুরার লোক সংস্কৃতির কর্মশালা চলছে। ১০ দিনব্যাপী এই কর্মশালা শুরু হয়েছে ১৮ নভেম্বর।
লঙ্কামুড়া গ্রাম আলপনার জন্য ত্রিপুরায় বিখ্যাত। এই গ্রামের মানুষ পৌষ মাসের মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে বাড়ির উঠানে আলপনা এঁকে আসছেন। বর্তমান প্রজন্ম আলপনার এই ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছেন। তাই সংস্কার ভারতী ত্রিপুরার কর্মকর্তা এখানে কর্মশালার আয়োজন করেছেন।
এই কর্মশালার সমন্বয়ক তপতী ভৌমিক মজুমদার বাংলানিউজকে জানান, লঙ্কামুড়া গ্রামের মানুষের চিরাচরিত এই শৈল্পিক ঘরানাকে ভারতের সামনে তুলে ধরার ভাবনাকে সামনে রেখে কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে।
বিষয়টিকে আরও সুন্দরভাবে বোঝানোর জন্য তিনি বলেন, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের নিজস্ব কিছু শিল্পের ঘরানা রয়েছে যেমন উড়িষ্যার মধুবনী আর্ট। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের এই ঘরানাগুলো নিজের এলাকার গণ্ডি ছাড়িয়ে সারা ভারত এমনকি বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ঘরানাগুলো শাড়ি থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজকর্মে ব্যবহৃত হচ্ছে। উঠানের আলপনা ত্রিপুরা রাজ্যের নিজস্ব ঘরানা, কিন্তু এই বিষয়ে ত্রিপুরার বাইরে বসবাসকারী মানুষ তেমন ভালোভাবে জানেন না। ত্রিপুরার আলপনার কাজ যারা করে থাকেন তারা নির্দিষ্ট কিছু গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ। কিন্তু একটি শৈল্পিক ঘরানাকে দূরদূরান্তে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য অনেক বেশি এবং বড় হতে হয়। এই বিষয়টিকে মাথায় রেখে লঙ্কামুড়ার শিল্পীদের কাজকে আরও মসৃণ করে তোলার জন্য কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি সহ আগরতলা সরকারি আর্ট কলেজ থেকে পাস করা মোট ১০ জন ছাত্র-ছাত্রী এবং লঙ্কামুড়া গ্রামের স্থানীয় মানুষ মিলে এই কর্মশালাটি করছেন।
কর্মশালায় মূলত গ্রামের যতগুলো মাটির দেওয়ালের ঘর রয়েছে এগুলোতে আলপনাসহ চিরাচরিত নানা শিল্পকর্ম করা হচ্ছে।
কর্মশালায় অংশ নেওয়া আর্ট কলেজ থেকে পাস করা ছাত্রী দীপিকা দাস বাংলানিউজকে জানান, গ্রামের মানুষদের সঙ্গে কাজ করে খুব ভালো লাগছে। তারা যেমন গ্রামের সাধারণ মানুষদের তুলি দিয়ে আঁকাসহ অনেক বিষয় শেখাচ্ছেন তেমনি গ্রামের মানুষের কাছ থেকেও তারা প্রথাগত বিষয়ের অনেক কিছু শিখতে পারছেন। গ্রামের শিল্পীরা খুব উৎসাহ নিয়ে কাজ করছেন।
গ্রামের এক প্রবীণ বাসিন্দা রাধাচরণ কপালি বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিদিন গ্রামের মাটির বাড়িগুলোর দেওয়ালে শিল্পকর্ম করা হচ্ছে। গ্রামের রাস্তার উপর দিয়ে যারা যাচ্ছেন তারা কিছু সময়ের জন্য দাঁড়িয়ে এই শিল্পকর্মগুলো দেখছেন, কেউ আবার মোবাইলে ছবি তুলে নিচ্ছেন, এই বিষয়গুলো সবাই মিলে উপভোগ করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২০
এসসিএন/এইচএডি