ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

সরকারের নীতির বিরুদ্ধে ডাকা হরতালে মিশ্র প্রভাব পড়েছে ভারতে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২০
সরকারের নীতির বিরুদ্ধে ডাকা হরতালে মিশ্র প্রভাব পড়েছে ভারতে ...

কলকাতা: কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক আইন, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলোর বেসরকারিকরণ, নিত্যসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধিসহ একাধিক জনবিরোধী আইন ও নীতির প্রতিবাদে এবং সাত দফা দাবিতে বাম ও কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলোর ডাকা হরতালে বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) ভারতজুড়ে মিশ্র প্রভাব পড়েছে। হরতালের প্রভাবে বাম শাসিত কেরালা পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে গেছে।

বাদ পড়েনি পশ্চিমবঙ্গও। গত বিধানসভার নিরিখে বাম ও কংগ্রেস রাজ্যের বিরোধীদল হলেও তৃণমূলের মতো শাসক দল বিজেপিকে নিয়ে চিন্তিত। আর তাই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে আসন্ন পশ্চিমবঙ্গ, আসাম বিধানসভা ভোটের আগে এই হরতালের মাধ্যমে নিজেদের শক্তি ও সামর্থ বুঝতে চাইছে বাম ও কংগ্রেসের মতো রাজনৈতিক দলগুলো।

অপরদিকে, হরতাল যাতে রাজ্যে বাঁধা সৃষ্টি করতে না পারে তারজন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বাড়তি পুলিশ ও পরিবহন নামিয়ে ছিলেন রাজপথে। শহর সচল রাখতে পথে নেমেছিল বাড়তি সাড়ে ৪ হাজার পুলিশ ও ১২শর মতো সরকারি বাস।

কিন্তু হরতালের ইস্যুগুলোকে সমর্থন করেছে পশ্চিমবঙ্গের শাসক তৃণমূল কংগ্রেস। দলের মহাসচিব তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বিজেপির বিরোধিতায় বাম-কংগ্রেসের ইস্যু সমর্থন করলেও হরতাল বিরোধিতার অবস্থান থেকে সরবে না দল। রাস্তায় নেমে তৃণমূল কংগ্রেস ধর্মঘটের বিরোধিতা করবে।

ফলে দেশজুড়ে ডাকা সাধারণ হরতালের মিশ্র প্রভাব পড়েছে পশ্চিমবঙ্গে। তবে কোনোরকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সচেষ্ট ছিল মমতার প্রশাসন। কিন্তু তারমধ্যেই বিক্ষিপ্তভাবে কয়েকটি জেলায় অশান্তির খবর মিলেছে। ফলে রাজ্যের দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলায় হরতালের প্রভাব পড়লেও কর্মব্যস্ত কলকাতায় মিশ্র প্রভাব পড়েছে।

এদিন সকাল থেকে দফায় দফায় শিয়ালদহ ও হাওড়া শাখার বিভিন্ন স্টেশনে রেল অবরোধ করেন হরতাল সমর্থনকারীরা। তার জেরে সাময়িকভাবে অফিসটাইমে আটকে পড়ে রেল চলাচল। তবে মেট্রো ও বিমান পরিষেবা ছিল একেবারে স্বাভাবিক। কলকাতায় ট্রেন, বাসে ভিড় খুব একটা ছিল না। অফিসগুলোয় উপস্থিতির হারও ছিল কম।
দফায় দফায় শহরের বিভিন্ন রাস্তায় হরতাল সমর্থকদের এদিন চলে অবরোধ কর্মসূচি। কোথাও টায়ার জ্বালিয়ে, কুশপুতুল দাহ করে জানানো হয় প্রতিবাদ। তার জেরে গাড়ি চলচলে বিঘ্ন ঘটে। এরমধ্যে রাজ্যে কোথাও কোথাও পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয় হরতাল সর্মথনকারীদের।

এদিন সকালে বারাসাতে হরতাল সমর্থনকারীরা পথ অবরোধ করলে, পরিস্থিতি সামলাতে ব্যাপক লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এই নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। যদিও কোথাওই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়নি। মুর্শিদাবাদের বহরমপুর, জঙ্গিপুরে হরতালের প্রভাব ছিল চোখে পড়ার মতো।

কলকাতার একাধিক এলাকা দমদম, যাদবপুর, গোলপার্ক, গড়িয়াহাট, ধর্মতলা, হাজরা, শ্যামবাজার থেকে মিছিল ও জমায়েত হয়। হরতালের প্রভাব পড়েছে চা বলয়ে শ্রমিকদের উপরেও।

দেশজুড়ে বাম কংগ্রেস সমর্থিত শ্রমিক সংগঠনগুলোর ডাকা বনধ অসফল করতে তৃণমূলের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মমতা ব্রিগেডের দাবি করোনা পরিস্থিতিতে ধর্মঘট ডাকার অর্থ দেশের অর্থনীতিতে আঘাত হানা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২০
ভিএস/এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।